প্রতুল মুখোপধ্যায়ের কথা ও সুরের ‘আমি বাংলার গান গাই’ গানটি নতুন করে কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন সংগীতশিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী মাহমুদুজ্জামান বাবু। একুশে টেলিভিশনে মাহমুদুজ্জামান বাবুর নতুন করে গাওয়া এই গানের ভিডিও প্রচারিত হয়। গানটি প্রচারের পর পরিচিতি বাড়ে তাঁর। গত শনিবার ৮৩ বছর বয়সে মারা যান প্রতুল মুখোপাধ্যায়। মাহমুদুজ্জামান বাবু এখন রয়েছেন কানাডার মন্ট্রিয়লে। প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শিল্পীকে নিয়ে লিখেছেন মাহমুদুজ্জামান বাবু

১৯৯৬ সালের অক্টোবরে আমি কলকাতায় গিয়েছিলাম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গান গাইতে। নিমন্ত্রণ করেছিলেন সেখানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। ঢাকা থেকে কোনো যন্ত্রশিল্পীকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া ছিল ব্যয়সাপেক্ষ। শিক্ষার্থী শ্রোতাদের সেই সামর্থ্য ছিল না। তাঁরা জানিয়েছিলেন, স্থানীয় একজন গিটারিস্ট গানের সঙ্গে সঙ্গ দিতে আগ্রহী। অনুষ্ঠানের আগের দিন সন্ধ্যায় রিহার্সালে সবকিছু হযবরল হয়ে গেল। প্রথমত, আমার গানের সঙ্গে গিটারিস্টের কোনো পরিচয় ছিল না। দ্বিতীয়ত, গানের কর্ড-চাট তৈরি থাকার পরও যেহেতু আমার গানগুলো ঠিক ভারতীয় রোমান্টিক বাংলা গান কিংবা কলকাতাকেন্দ্রিক গণসংগীতের কথা-বিষয়-আঙ্গিকের চেয়ে একেবারেই বিপরীত, তখন ফয়সালা হলো এই মর্মে যে আগামীকাল খোলা চত্বরে আমি খালি গলায়ই গাইব। যথারীতি খালি গলায় গাইতে আমি আগে থেকেই অভ্যস্ত। কারণ, সেই সময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, টিএসসি চত্বরে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন প্রগতিশীল এবং গরিব ছাত্র-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিবাদী অনুষ্ঠানে খালি গলায় দেশপ্রেম-বিপ্লব-বিদ্রোহ-আশাবাদের গান গাইতাম এবং কখনো কখনো সেখানে মাইকের ব্যবস্থাও থাকত না। ফলে সুরের প্রতি উৎকর্ণ যত্ন, স্বর প্রক্ষেপণে ঋজু ও কোমল অনুভূতির বিস্তার আর সঠিক উচ্চারণ, গান শুনতে আগ্রহী শ্রোতাদের মগ্নতা ধরে রাখতে অনুকূল ভূমিকা রাখত।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাক থেকে ঝরে পড়া বালুর স্তর সড়কে

তাহেরুল ইসলাম একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, বাইসাইকেল চালিয়ে শহরের রেলগেট থেকে সাঁড়াগোপালপুরে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন। পথে ট্রাক থেকে রাস্তায় ঝরে পড়া বালুর আস্তরণে চাকা পিছলে ইজিবাইকের ধাক্কায় উল্টে গিয়ে পড়েন রাস্তার পাশে পাতিবিলের কিনারায়। অল্পের জন্য তিনি পানিতে পড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পান। অন্য যানবাহনের যাত্রীরা তাঁকে তুলে পাঠান বাড়িতে।
ঈশ্বরদীর টিপু সুলতান, উপজেলা, পাকশি পেপার মিল, ইপিজেডসহ বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন এমন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যানবাহন। এতে শিক্ষক তাহেরুলের মতো বিপদে পড়ছেন অনেকে। জানা গেছে, বালু বহনকারী ট্রাক, ডাম্প ট্রাক ও ট্রাক্টর থেকে ঝরে পড়া বালু রাস্তায় জমতে জমতে পুরু আস্তরণ তৈরি হয়েছে। 
এসব সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সরেজমিনে জানা গেছে, পদ্মা নদী থেকে ট্রাকে সড়কপথে বহন করা বালু ঝরে পড়ে বিভিন্ন সড়ক এখন বালুময় হয়ে গেছে। পাকা সড়ক ঢাকা পড়েছে বালুর আস্তরণে। চাকা পিছলে দুর্ঘটনায় পড়ছে যানবাহন।
টিপু সুলতান রোডে চলাচলকারী ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, এমনিতে এ সড়ক ভাঙা। এরই মধ্যে অতিরিক্ত ওজনের বালু বহন করায় ঝাঁকুনিতে ঝরে পড়ে। এতে বালু জমে সড়ক ঢাকা পড়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। ইজিবাইকচালক বদরুল আলমের ভাষ্য, বালুতে চাকা পিছলে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়তে হচ্ছে। বালু না সরানো হলে এবং ট্রাকে অতিরিক্ত ভার বহন বন্ধ করা না হলে এ অবস্থার সমাধান হবে না।
পদ্মা নদী থেকে বালু ভর্তি করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পৌঁছাতে এক থেকে দেড় ফুট বালু সড়কে ঝরে পড়ে বলে জানান ট্রাকচালক জামাল হোসেন। আরেক চালক সামসুল আলম বলেন, ভাঙা সড়কের কারণে বারবার অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে ট্রাক থেকে বালু ঝরে পড়ে। বাধ্য হয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি বালু লোড করতে হচ্ছে। এতে গন্তব্যে পৌঁছানো পর্যন্ত ঝরে পড়ার পরও ট্রাকের আকার অনুযায়ী বালু থাকে।
ইউএনও সুবীর কুমার দাশ বলেন, বালুতে সড়কে এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তা জানা ছিল না। ট্রাফিক বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভায় বিষয়টি আলাপ করে সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ