অমর একুশে বইমেলায় ‘সব্যসাচী’ প্রকাশনীর স্টলে তসলিমা নাসরিনের বই রাখা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হট্টগোলের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির গতকাল রোববার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কমিটি প্রতিবেদন দিতে পারেনি। এ অবস্থায় প্রতিবেদন দেওয়ার সময় আরও তিন দিন, তথা আগামী বুধবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলা একাডেমির উপপরিচালক মোহম্মদ খোরশেদ আলম আজ সোমবার প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুনবইমেলার স্টলে হট্টগোলের ঘটনায় তদন্ত কমিটি১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনতসলিমা নাসরিনের বই রাখা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা–হট্টগোল, একটি স্টল বন্ধ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গত সোমবার সন্ধ্যায় বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকা সব্যসাচীর স্টলে ওই হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। পরে ওই স্টল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এর পর থেকে স্টলটি বন্ধ রয়েছে। ঘটনার পরদিন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

বইমেলায় ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ ও বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষকে এ ঘটনার তদন্ত এবং দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে।

আরও পড়ুনএকুশে গ্রন্থমেলায় সব্যসাচী স্টলে আক্রমণের নিন্দা-প্রতিবাদ জানিয়ে ২০৫ নাগরিকের বিবৃতি১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনবইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রি করায় দুটি স্টল বন্ধ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ত কম ট

এছাড়াও পড়ুন:

জিম্মি শিরির মরদেহ কোথায় ছিল, কেন ভুল হয়েছিল, জানাল হামাস

ফিলিস্তিনের গাজায় হামাসের হাতে থাকা একজন জিম্মির মরদেহ ঘিরে সংগঠনটি ও ইসরায়েলের মধ্যকার উত্তেজনা বেড়েছিল। এ নিয়ে হামাস দুঃখ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলের কাছে সঠিক জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এবং কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় গত মাসে সই হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মেনে কয়েক দফায় জিম্মি ও জিম্মি ব্যক্তিদের মরদেহ ইসরায়েলে ফেরত পাঠাচ্ছে হামাস। এর বিপরীতে ইসরায়েলের কারাগারগুলোয় আটক থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।

এর মধ্যেই অঘটন ঘটে গত বৃহম্পতিবার। ওই দিন প্রথমবারের মতো চার জিম্মির মরদেহ ইসরায়েলে ফেরত পাঠানো হয়। এই চার জিম্মি হলো দুই শিশু কেফির বিবাস ও অ্যারিয়েল বিবাস (৪)। শিশু দুটির মা শিরি বিবাস (৩২)। চতুর্থ যে জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়েছে, তিনি ওদেদ লিফশিৎজ (৮৩)।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহরে এক আয়োজনে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের কাছে এই চারজনের মরদেহ তুলে দেয় হামাস। পরে চারটি মরদেহ ইসরায়েলে নেওয়া হয়।

এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল, কিন্তু মরদেহ দেশে ফেরানোর পর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করে, কফিনে শিরি বিবাসের মরদেহ ছিল না। বরং অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর মরদেহ কফিনে করে পাঠিয়েছে হামাস।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করে, দেশে ফেরানোর পর চারটি মরদেহ পরীক্ষা করে দেখেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। পরে তাঁরা জানান, তিনটি কফিনে কেফির, অ্যারিয়েল ও লিফশিৎজের মরদেহ ঠিকঠাক আছে। তবে শিরির কফিনে যে মরদেহ এসেছে, সেটা ওই ইসরায়েলি নারীর নয় বলে পরীক্ষায় দেখা গেছে।

এ নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ চরমে পৌঁছায়। ঘটনাটিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘নিষ্ঠুর ও অসৎ’ লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এ কাজের জন্য হামাসকে ‘পুরো মূল্য’ চোকাতে হবে।

একদিন পর, অর্থাৎ গত শুক্রবার হামাসের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করা হয়। হামাস জানায়, ভুলবশত অন্য কারও মরদেহ পাঠানো হয়ে থাকতে পারে। এ–সংক্রান্ত তদন্তের ফলাফল ‘স্পষ্টভাবে’ ঘোষণা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে হামাস।

তবে এই ভুলের জন্য ইসরায়েলের সেনাবাহিনীকেই দুষেছে হামাস। সংগঠনটি বলেছে, ওই পরিবারকে (বিবাস পরিবার) গাজায় যেখানে রাখা হয়েছিল, সেখানে আরও ফিলিস্তিনি ছিলেন। ইসরায়েলি বাহিনী সেখানে বোমা হামলা চালিয়ে অনেককে হত্যা করেছে। তাই মরদেহ নিয়ে এই ভুল হয়ে থাকতে পারে।

রেডক্রস জানিয়েছে, শুক্রবার হামাসের কাছ থেকে তারা আরও একটি মরদেহ বুঝে পেয়েছে। হামাস নিশ্চিত করেছে যে এবার আর ভুল হয়নি। এটা শিরি বিবাসের মরদেহ।

গতকাল শনিবার আল-জাজিরার লাইভ সংবাদে বলা হয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন, নতুন মরদেহটি শিরি বিবাসের। ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিবাস পরিবারের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিবাস পরিবারের চার সদস্য ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের কিবুতজ নির ওজ এলাকা থেকে হামাসের হাতে জিম্মি হন। তখন কেফিরের বয়স ছিল ৯ মাস। জিম্মি করা হয় কেফির ও অ্যারিয়েলের বাবা ইয়ারদেন বিবাসকেও।

আরও পড়ুনইসরায়েলি আগ্রাসনে পশ্চিম তীরে ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বাস্তুচ্যুতি১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনহামাসের হস্তান্তর করা চার মরদেহের একটি কোনো জিম্মির নয়, দাবি ইসরায়েলের২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গত বছরের নভেম্বরে হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইসরায়েলি বিমান হামলায় জিম্মি ওই মা ও দুই শিশু নিহত হয়েছে। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ কখনোই তাঁদের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেনি। এমনকি শেষ মুহূর্তেও ইসরায়েলের কেউ কেউ তাঁদের মৃত বলে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান।

এর আগে চলতি মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় গাজা থেকে মুক্তি পান ইয়ারদেন বিবাস। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুই শিশু ও মায়ের ভাগ্যে কী ঘটেছে, সেটি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার তাদের অপেক্ষার প্রহর ঘুচলেও শিরির মরদেহ নিয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দেয়।

আরও পড়ুনগাজায় দ্বিতীয় ধাপে যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলতি সপ্তাহে আলোচনা শুরু করবে ইসরায়েল১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনমা ও দুই শিশুসহ চার জিম্মির মরদেহ গাজা থেকে ইসরায়েলে ফিরল  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জিম্মি শিরির মরদেহ কোথায় ছিল, কেন ভুল হয়েছিল, জানাল হামাস