নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশের সমস্যা তত বাড়বে বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘দেশ পরিচালনার দায়িত্ব জনগণ ঠিক করবে, তারা কাদের (দায়িত্ব) দেবে। কাজেই এই বিষয় (নির্বাচন) যত দেরি হবে, আমরা মনে করি, বিভিন্নভাবে ধারণা করি, তাতে করে সমস্যা বাড়বে বৈ কমবে না।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আহত বিভিন্ন গণমাধ্যমের আলোকচিত্র সাংবাদিক ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তারেক রহমান এ কথাগুলো বলেন। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটশন মিলনায়তনে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এ মতবিনিময়ের আয়োজন করে।

বিএনপির দেওয়া ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা আড়াই বছর আগে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। তখন কেউ সংস্কারের কথা বলেনি। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, এই স্বৈরাচারের (শেখ হাসিনা) পতন হবে। পতনের পরে যেভাবে তারা দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে গেছে, এর মেরামত প্রয়োজন হবে। মেরামত করতে হলে একটা পরিকল্পনা প্রয়োজন। এখন যাঁরা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছেন, এ কথাটি আমরা অনেক দিন আগে বলেছিলাম।’

৩১ দফার মূল কথা হচ্ছে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ—এ কথা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এর মূল কথা বৈষম্যহীন একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশের প্রত্যাশা প্রত্যেক মানুষের। যে বাংলাদেশে মানুষের রাজনৈতিক অধিকার থাকবে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকবে। তিনি বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অধিকার যদি প্রতিষ্ঠিত করা না যায়, সবকিছুই নষ্ট হয়ে যাবে।’

এ প্রসঙ্গে তারেক রহমান আরও বলেন, ‘দেশের অনেক মৌলিক সমস্যা আছে, যার একটি বেসিক সমাধানের পরিকল্পনা আমাদের ৩১ দফায় দিয়েছি। আমরা যদি মানুষের সমস্যার সমাধান করতে না পারি, তাহলে উচ্চকক্ষই বলুন, এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হবে না বলুন, আরও যথাযথ ক্ষমতার ভারসাম্য—যত যা–ই বলি না কেন, দিন শেষে মানুষের কোনো উপকার হবে না।’

বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে একটি ‘জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার’ প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘এ দেশের মূল মালিক বাংলাদেশের জনগণ। কাজেই বাংলাদেশের জনগণের সেই অধিকার আছে এই দেশ নিয়ে কী হবে না হবে, এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার। সমগ্র পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলতে যা বোঝায়, সেটি হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ তাঁদের মতামত ব্যক্ত করে থাকেন।’

তারেক রহমান বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তারা কী চায়। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তার জবাব দিয়ে থাকে তারা দেশ সম্পর্কে কী বলতে চায়। আবার রাজনীতিবিদকে তারা কী বলতে চায়, সেটাও তারা নির্বাচনের মাধ্যমে বলে থাকে। জনগণের অধিকার যদি জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হয়, দেশ কীভাবে কী হবে—এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ জনগণের। তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের অধিকার যত দ্রুত জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারব, আমি বিশ্বাস করি তত দ্রুত আমরা দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হব।’

অনুষ্ঠানে গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার আলোকচিত্র সাংবাদিকদের প্রতি সহমর্মিতা এবং সম্মান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাঁর পক্ষ থেকে আহত সাংবাদিকদের আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়।

‘আমরা বিএনপি পরিবার’–এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহসম্পাদক আশরাফউদ্দিন, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম মহসিন, সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার, জ্যেষ্ঠ ফটো সাংবাদিক বুলবুল আহমেদ, তারিফ রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব এনপ র জনগণ র যত দ র র জন ত সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

দলকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা খুলনার তিন নেতার

জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে রওশন এরশাদপন্থী জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন খুলনার তিন নেতা। আজ শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা ওই ঘোষণা দেন।

এই তিন নেতা হলেন, জাতীয় পার্টির (রওশন) প্রেসিডিয়াম সদস্য ও খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মোল্যা শওকত হোসেন ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম মাসুদুর রহমান। তাঁরা জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘১৯৯০ সালে সরকার পতনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টি ক্ষমতাচ্যুত হয়। আমরা আশা করেছিলাম অতীতের ভুলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে জনগণের পাশে থেকে দল রাজনীতি করে যাবে। কিন্তু দেখলাম জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা ১৯৯০ সালের পর থেকে নিজস্ব রাজনীতিতে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করতে পারেনি। বরং প্রায় সময়ই ক্ষমতাসীনদের ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। মূলত ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর জাতীয় পার্টি কার্যকর বিরোধী দল বা ক্ষমতাসীন দল কোনোটাই হতে পারেনি। শীর্ষ নেতারা তাঁদের স্বার্থ রক্ষার জন্য পতিত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে।’

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারকে দীর্ঘতর করতে জাতীয় পার্টি অনুঘটকের কাজ করেছে, যাতে তৃণমূলের নেতা–কর্মীদের সায় ছিল না। সর্বশেষ দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে অনুগত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে ফ্যাসিস্টদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। জাতীয় পার্টি এই দায় এড়াতে পারে না।’

জাতীয় পার্টির ওই নেতা বলেন, ‘আমরা চাই দেশে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে উঠুক। বর্তমান অন্তবর্তী সরকার জাতিকে বড় ধরনের সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছে। আমরা রাষ্ট্রের পূর্ণ সংস্কার চাই। যাতে করে ভবিষ্যতে জনগণের দোহাই দিয়ে আর কোনো স্বৈরশাসক জাতির কাঁধে চেপে বসতে না পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খোলপেটুয়ার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেনাবাহিনীর
  • ‘শুধু সরকার ও দল নয়, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক চায় চীন’
  • ঢাকার সমাবেশ ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে: ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত
  • মডেল মেঘনার পূর্ব পরিচিত ব্যবসায়ী সমির রিমান্ডে
  • পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা দিয়ে স্বৈরতন্ত্র উচ্ছেদ হবে না: জেএসডি
  • জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে জাতীয় পার্টির ৩ নেতার পদত্যাগ
  • ইলিশের দাম যেন ঠিক থাকে, তা না হলে জনগণ আমাকে ক্ষমা করবে না: উপদেষ্টা ফরিদা
  • জাতীয় পার্টি ছাড়লেন খুলনার সাবেক এমপিসহ ৩ নেতা
  • দলকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা খুলনার তিন নেতার
  • অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এ দাবি জনগণের: আলী রীয়াজ