পুলিশ ভেরিফিকেশন বাদ, এনআইডি দিয়ে করা যাবে পাসপোর্ট
Published: 17th, February 2025 GMT
এখন থেকে পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের (এনআইডি) ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট দেবে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ থেকে পাঠানো এ–সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টা এই সারসংক্ষেপ অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানিয়েছে তাঁর প্রেস উইং। এখন এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে গতকাল রোববার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিধান বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছিলেন, পাসপোর্ট পাওয়া নাগরিক অধিকার।
পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা শিথিল করার পেছনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্তি হচ্ছে, ইতিবাচক পুলিশ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। বিদ্যমান পদ্ধতিতে একটি সাধারণ পাসপোর্ট ১২ কর্মদিবস ও এক্সপ্রেস ডেলিভারির ক্ষেত্রে তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হয়ে থাকে।
কিন্তু পুলিশ ভেরিফিকেশন যথাসময়ে না পাওয়ার কারণে বা পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় অনাবশ্যক কাগজপত্র যাচাইয়ের কারণে আবেদনকারীর ভোগান্তি হয়। আবেদনকারীর ভোগান্তি কমানোর পাশাপাশি যথাসময়ে পাসপোর্টপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জনভোগান্তি লাঘবে পাসপোর্ট সেবা সহজ করতে পরিপত্রে বেশ কিছু নির্দেশনা থাকবে।
এক.
নতুন পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাই করা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া পাসপোর্ট দেওয়া হবে।
দুই. বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্টের নতুন আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট দেওয়া হবে।
তিন. পাসপোর্ট পুনঃ ইস্যুর ক্ষেত্রে বিদ্যমান পাসপোর্টের সঙ্গে মৌলিক তথ্যের পরিবর্তন হলে জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট ইস্যু করা যাবে।
চার. পাসপোর্ট আবেদনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র ডেটাবেজ বা জন্মনিবন্ধন ডেটাবেজের সঙ্গে যাচাই করা হলে তা বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ ১৯৭৩ এর ৫ (২) ধারার উদ্দেশে পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষ হয়েছে বলে গণ্য হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, মঙ্গলবারের মধ্যে পরিপত্র জারি হবে। পরিপত্র জারির পর থেকে এ ব্যবস্থা কার্যকর হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনা-রেহানা-জয় ও পুতুলসহ ১০ জনের ‘এনআইডি লক’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ১০ সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) লক বা স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কমিশনের (ইসি) অধীন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ একটি চিঠির মাধ্যমে এ তালিকাভুক্ত ১০ জনের এনআইডি লক করেছে।
নথিপত্র অনুসারে, ১৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীরের মৌখিক নির্দেশে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সোমবার (২১ এপ্রিল) বিষয়টি প্রকাশ পায়।
আরো পড়ুন:
চিফ প্রসিকিউটর
গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন যেকোনো দিন
ভাস্কর মানবেন্দ্রের বাড়িতে আগুন
হয়নি রিমান্ড শুনানি, আ. লীগের ৮ নেতা কারাগারে
তবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো নির্দেশ ছিল কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
যাদের এনআইডি লক করা হয়েছে- শেখ হাসিনা, সজীব আহমেদ ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক, শাহিন সিদ্দিক, বুশরা সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
এনআইডি লক হলে কার্ডটি আর ব্যবহার করা যায় না। এ ছাড়া মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভোটার হলে বা এনআইডি নিয়ে তদন্ত কাজ চললে, তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এনআইডি লক করা হয়। অধিকাংশ সময় ভিভিআইপি অনুরোধেও এনআইডি লক করা হয়, যাতে কেউ এনআইডির অপব্যবহার করতে না পারে। তাদের অনুরোধে আবার আনলক করা হয়। তবে এনআইডি লক থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ভোট দিতে বা প্রার্থী হতে বাধা নেই।
গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং এখনও সেখানে অবস্থান করছেন। এরই মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে গ্রেপ্তারের জন্য রেড এলার্ট জারির আবেদন করা হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠিও দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ