আ.লীগের রাজনীতির মৃত্যু দেশে, দাফন দিল্লিতে: সালাহউদ্দিন
Published: 17th, February 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘আওয়ামী লীগের ইতিহাস নিজেদের নিজেরা দাফন করার ইতিহাস। বাকশাল কায়েম করে শেখ মুজিব একবার দাফন করেছেন। ২০২৪ সালে তার কন্যা শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে চূড়ান্তভাবে দাফন করেছেন।’’
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজার গোলচত্বর মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ সব কথা বলেন। জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘জাতিসংঘের রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে হাসিনা একজন বিশ্বখুনি। হাসিনা ও তার মন্ত্রীরা গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছেন।’’ শেখ হাসিনাকে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম খুনি আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতির মৃত্যু হয়েছে। আর দাফন হয়েছে দিল্লিতে।’’
আরো পড়ুন:
মরুভমিতে রূপ নেওয়া তিস্তা রক্ষায় নির্বাচিত সরকার দরকার: বুলু
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু
শেখ হাসিনাকে ‘মৃত’ উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘মুর্দা কথা বললে মানায় না। দিল্লির কবর থেকে মাঝে মাঝে হাসিনা উঁকি দিয়ে কী যেন বলতে চান। এদেশে আওয়ামী লীগের নামে রাজনীতি করা আর জায়েজ নাই।’’ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি বলেন, ‘‘আপনারা আওয়ামী লীগের কথা ভুলে যান।’’
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘দ্রুত নির্বাচনী রোড ম্যাপ ঘোষণা করে আপনার সদিচ্ছার প্রমাণ দিন।’’ উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা জনগণের কথা শুনুন, দ্রব্যমূল্য কমান। জনগণের বিরুদ্ধে যাবেন না। ন্যায় বিচার ও আইন শৃঙ্খলাসহ সব জায়গায় এখনো খুনি হাসিনার দোসররা অস্থিররতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আর এর পেছনে খুনি হাসিনা দিল্লিতে বসে উসকানি দিচ্ছেন। তার কোনো উসকানি সফল হবে না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘বিএনপির ইতিহাস শহীদ জিয়ার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাস। খালেদা জিয়ার ইতিহাস, সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার ইতিহাস। একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তারেক রহমান।’’ তিনি তারেক রহমানের নেতৃত্ব বিএনপিকে সুশৃঙ্খল দল হিসেবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য উপস্থিত জনতার প্রতি আহ্বান জানান।
জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন দলের মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর ফরিদ ও জেলা সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্নাসহ স্থানীয় নেতারা।
ঢাকা/তারেকুর/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ আওয় ম ল গ স ল হউদ দ ন রহম ন ব এনপ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
গণহত্যার অস্বীকার ঠেকাতে আগে বিচার দরকার
ব্যক্তির স্বাধীনতার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতার বোধও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার বিচারের দাবি দানা বাঁধতে বাঁধতে প্রতিশোধপরায়ণ রাজনীতিতে পর্যবসিত হয়েছিল। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান অস্বীকারের প্রবণতা একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং গণহত্যা দিবস স্মরণে বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সেমিনারে উঠে এসেছে এ কথাগুলো। গতকাল মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এ সেমিনারে ‘গণহত্যা, অস্বীকারের প্রবণতা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসর’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক ও গবেষক সহুল আহমদ।
সহুল আহমদ তাঁর প্রবন্ধে বলেন, গণহত্যাকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদাহরণ পৃথিবীতে কমই আছে। গণহত্যা বা এ ধরনের অপরাধের ঘটনার সত্যতার অস্বীকার ঠেকাতে সবার আগে দরকার বিচার।
এই প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম ও লেখক সারোয়ার তুষার। তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণমানুষের অধিকার ও ন্যায্যতার হিস্যা বুঝে নেওয়ার লড়াই। তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পক্ষপাতের পঙ্ক থেকে মুক্ত করতে হবে। ১৯৭১ থেকে ২০২৪—গণহত্যার পক্ষগুলো সব সময় জাতিগত অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করে দিয়েছে, মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করেছে।
স্বাগত ভাষণে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, ১৯৭১–এর পূর্বকালে এ অঞ্চলের মানুষ সুদীর্ঘকাল রাজনৈতিক আলোচনা, মীমাংসা ইত্যাদি চালিয়েছে। তবে একাত্তরের ২৫ মার্চ সবকিছু ছাপিয়ে সর্বাত্মক স্বাধীনতা অর্জনের প্রশ্নই বড় হয়ে উঠেছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বপ্নে সুদীর্ঘকাল লড়াই–সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে, স্বপ্নভঙ্গের শিকারও হয়েছে। যে বিপুল জনগোষ্ঠী একাত্তরে গণহত্যার শিকার হয়েছে, তাদের ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বদেশে আমরা স্বাধীনতাকে অর্থবহ এবং মানুষের জন্য কল্যাণকর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি কি না, সেটাই আজকের দিনের বড় প্রশ্ন।’
অনুষ্ঠান শেষে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।