মরুভমিতে রূপ নেওয়া তিস্তা রক্ষায় নির্বাচিত সরকার দরকার: বুলু
Published: 17th, February 2025 GMT
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, “তিস্তা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। তিস্তার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচিত সরকার দরকার। তা না হলে তিস্তার ন্যায্য হিস্যা আদায় করা সম্ভাব হবে না। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এই নদীর পাড়ের মানুষ আবার তাদের সবকিছু ফিরে পাবে। তাই নির্বাচিত সরকার গঠনে সবাইকে ঐক্যমতের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে।”
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাচাঁও’ এই স্লোগানে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে দুইদিন ব্যাপী অবস্থান কর্মসূচির শুরু হয় সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার হরিপুর-চিলমারি তিস্তা পিসি গার্ডার সেতুর হরিপুর পয়েন্টে। এই কর্মসূচির অনুষ্ঠানে প্রথমদিন তিনি এসব কথা বলেন। উত্তরের পাঁচটি জেলার ১১টি পয়েন্টে তিস্তা তীরে একযোগে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি চলছে।
বুলু বলেন, “নোবেল জয়ী ড.
আরো পড়ুন:
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু
আ.লীগ ছাড়াও একটি দল বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে: সোহেল
তিনি আরো বলেন, “বিএনপির ৬৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা মা-বাবার জানাজায় অংশ নিতে পারেনি, বোনের বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারেনি, এসব ভুলে গেলে চলবে না। বিএনপি জাতীয় সরকার গঠন করতে চায়। জাতীয় সরকার ছাড়া তিস্তার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বেগবান হবে না।”
গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সমন্বয়ক অধ্যাপক ডাক্তার মইনুল হাসান সাদিকের সভাপতিত্বে ও উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. মাহমুদুল ইসলাম প্রামানিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ডাক্তার মো. জিয়াউল ইসলাম জিয়া, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুন নবী টিটুন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. বাবুল আহমেদ, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. ইখতিয়ার উদ্দিন ভূইয়া নিপন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামায়েতের আমির মো শহিদুল ইসলাম মঞ্জু, সেক্রেটারি মো. আতাউর রহমান, পৌর জামায়াতের আমির মো একরামুল হক।
ঢাকা/মাসুম/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ নদ ব এনপ র স ল ইসল ম সরক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় সাংবাদিককে দাপট দেখালেন শিক্ষিকা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার অশালীন আচরণের শিকার হয়েছেন স্থানীয় একজন সাংবাদিক।
বুধবার ((২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে এক ফাঁকে প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তার মিলির কাছে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা। তখন মেজাজ হারান; সাংবাদিকদের ‘তুই, তোকারি’ করে লাঞ্চিত করার হুমকি দিতে থাকেন তিনি।
এই ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাতে দেখা যায় শিক্ষিকা মিলির মুখোমুখি ছিলেন সাংবাদিক মামুনুর রশীদ। এক পর্যায়ে মামুনুর রশীদকে হুমকি দিতে দেখা যায়; তাকে জুতা পেটা করার হুমকি দেওয়া হয়।
রাইজিংবিডি ডটকমের হাতে আসা ভিডিওতে অন্য সাংবাদিকদের দেখা যায়নি। তবে শিক্ষিকা মিলি শুধু মামুনুর রশীদের দিকেই নন, তাদের কাছাকাছি আরো কয়েকজনের উদ্দেশে অশালীন বাক্য ছুড়ছিলেন।
মামুনুর রশীদের দাবি, “নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন দপ্তরে দেওয়া বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন তিনি। এক পর্যায়ে গালিগালাজসহ পায়ের স্যান্ডেল খুলে মারাপিট করার হুমকিও দেন তিনি।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষিকা মিলি বলছেন, তুই এখান থেকে যা, তোকে আমি স্যান্ডেল খুল মারব। যদি ভালো চাস এখান থেকে যা। অপমান আরো করব আমি। স্যান্ডেল খুলে মারব।”
তখন মামুনুর রশীদ বলেন, আপনি আমাকে মের দেখান দেখি। মারেন, হিট মি।”
শিক্ষিকা মিলি বলেন, “লেট মি, তুই এখান থেকে যা।”
এরপর স্কুল ভবনের প্রবেশ গেটের গ্রিলের ওপার থেকে মামুনুর রশীদকে আবার অশালীন ভাষায় আক্রমণ করেন ফাতেম আক্তার মিলি। তিনি বলেন, তোর মতো মামুনের স্যান্ডেল দিয়ে মুখ ফাঁটাব আমি।”
তখন মামুন বলেন, আপনি যদি আমার একটা চুল ছিড়তে পারেন, তাহলে… আপনার মতো ফাতেমাকে আমি গুনি না; আপনি তো মহিলা বলে বেঁচে গেলেন।”
মামুনুর রশীদ দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার সাংবাদিক। ঘটনার পর কোনো আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন কি না, সে বিষয়ে জানতে চাইলে মামুনুর রশীদ বলেন, “আমি এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করব।”
অভিভাবক ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মামুনুর রশীদ বলছেন, তার কাছে অভিযোগ রয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর খোঁজ ছিল না প্রধান শিক্ষিকা মিলির। এমন কী ১৬ ডিসেম্বর, ২১ ফেব্রুয়ারিতে পতাকা উত্তোলন করেননি তিনি।
মামুনুর রশীদের বলছেন, সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিলি সুন্দরগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের শ্যালিকা। তার দুলাভাইয়ের দাপটে চলতেন তিনি। অনেক অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু মন্ডল বলেন, একজন সাংবাদিকের সঙ্গে এত নোংরা ভাষায় কথা বলাটা দুঃখজনক। আমি সামনে থেকে যা দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে, উনি কোনোভাবেই শিক্ষক হওয়ার যোগ্য না।
নুরুজ্জামান নামে আরেক অবিভাবক বলেন, এই প্রধান শিক্ষকের প্রতিষ্ঠানে আমার বাবা নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চাকরি শেষের দিকে এলে এনআইডি কার্ডে বয়সের ভুল ধরে বেতন বন্ধ করে দেন।
“আমার বাবা আব্দুর রহমান মারা গেছেন চার বছর হলো অথচ এখনো তিনি (প্রধান শিক্ষিকা) বেতন উত্তোলনে কোনো ব্যবস্থাই নেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও সুরাহা হয়নি,” অভিযোগ নুরুজ্জামানের।
ঘটনার ভিডিও হাতে আসার পর প্রধান শিক্ষিকা মিলির বক্তব্য নিতে মোবাইল ফোনে কলা দিলে তিনি তা কেটে দেন। ফলে তার বক্তব্য নিতে পারেনি রাইজিংবিডি ডটকম।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, “গণমাধ্যম কর্মীর সঙ্গে এমন আচরণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। অবশ্যই তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ব্যাখ্যা চাইব। আর তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আছে, সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
ঢাকা/লুমেন/রাসেল