আওয়ামী শাসনামলে সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার ইসলামী নেতৃবৃন্দরা: মাম
Published: 17th, February 2025 GMT
আওয়ামী শাসনামলে ইসলাম ও ইসলামী নেতৃবৃন্দরা সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক।
তিনি বলেন, “আওয়ামী শাসনামলে সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছে ইসলাম ও ইসলামী নেতৃবৃন্দরা। আলেমদের জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে শুধু জানে মেরে ফেলা নয়, চরিত্র হননেরও চেষ্টা করা হয়েছে। আজ স্বল্প মাত্রায় হলেও সমাজে যে বৈষম্য দূরীভূত হয়েছে, তা জুলাই বিপ্লবের ফসল। দীর্ঘ ১৬ বছরে যে বৈষম্য অন্যায় অবিচার সংগঠিত হয়েছে, তার অবসান ঘটেছে এ বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে। বাংলার মানুষ ক্ষমা করলেও আল্লাহ আওয়ামী লীগ কে ক্ষমা করবেন না।”
সোমবার (১৭ ফেব্রয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত ‘জুলাই পরবর্তী করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
মামুনুল হক বলেন, “বিগত ১৬ বছর দেশের মানুষের উপর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট অন্যায়, নির্যাতন ও জুলুম করেছে। শত শত নিরাপরাধ মানুষ গুম-খুনের শিকার হয়েছে। গুমের শিকার হলে একটি পরিবার কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়ে, সেটি শুধু ভুক্তভোগী পরিবারই জানে। আমরা সেই গুমের রাজ্যে আর ফিরে যেতে চাই না।”
তিনি আরো বলেন, “পরবর্তী বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ। যার সংবিধান হবে আল কোরআান। কারণ আমরা দেখেছি, রাজপথে ছাত্ররা রক্ত দিয়েছে, আযান হলে সেখানেই আবার তারা নামাজে দাঁড়িয়ে গেছে। এগুলোই ছিল জুলাই বিপ্লবের চেতনা আর স্পিরিট। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অধিকার নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আলী, ইবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.
এছাড়া ইবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মজল স র আওয় ম ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো কবি রফিক আজাদের স্মৃতিস্মারক বাড়ির একাংশ
প্রয়াত কবি রফিক আজাদের ধানমণ্ডির বাড়ির একাংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাড়িটিতে প্রায় ২৯ বছর সপরিবারে বসবাস করেছেন রফিক আজাদ। এ বাড়িতে বসেই কবি লিখেছেন ২০টিরও বেশি কাব্যগ্রন্থ। বুধবার সকালে বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু করে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।
চার ইউনিটের বাড়িটির একটিতে থাকছেন কবির স্ত্রী দিলারা হাফিজ। বাকি তিন ইউনিট অন্যদের নামে বরাদ্দ রয়েছে। আজ বুধবার বাড়িটির পূর্বাংশের দুটি ইউনিট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ধানমণ্ডির ১ নম্বর সড়কের ১৩৯/৪এ ঠিকানার বাড়িটিতে (পশ্চিমাংশ) কমবেশি ৫ কাঠা পরিমাণ জায়গা রয়েছে।
১৯৮৮ সালে একতলা এ বাড়িটি রফিক আজাদের স্ত্রী কবি দিলারা হাফিজের নামে সাময়িকভাবে বরাদ্দ দেয় ‘এস্টেট অফিস’। দিলারা হাফিজ তখন ইডেন কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বরাদ্দ কপিতে দেখা যায়, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক এম বেগমের স্বাক্ষর করা এ বরাদ্দনামায় উল্লেখ করা হয়, এই বরাদ্দের দ্বারা বাসার ওপর কোনো অধিকার বর্তাবে না, তবে পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে বসবাস করতে পারবেন।
দীর্ঘদিন পর বাড়িটি নিজের বলে দাবি করেন সৈয়দ নেহাল আহাদ নামের এক ব্যক্তি। ২০১২ সালে নিজের মালিকানার পক্ষে আদালতের রায় পান তিনি। এ নিয়ে সৈয়দ নেহাল, হাউজিং অ্যান্ড পাবলিক ওয়ার্কস এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে বিবাদী করে মামলা করেন দিলারা হাফিজ। এর ফলে আদালত বাড়িটির ওপর স্থিতাবস্থা দেন। পরের বছর এই স্থিতাবস্থা স্থায়ী করেন আদালত।
পরবর্তীতে মামলাটি ঢাকার সপ্তম সহকারী জজ আদালতে স্থানান্তরিত হয়। আগামী মে মাসের ২৫ তারিখ এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কথা রয়েছে। এইসব তথ্য উল্লেখ করে গতকাল মঙ্গলবার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, একই মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পৃথক চিঠি দেন দিলারা হাফিজ। এর মাঝেই আজ বুধবার সকালে বাড়িটি উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়।
দিলারা হাফিজ শিক্ষা ক্যাডারের একজন প্রভাষক হিসেবে বাড়িটির বরাদ্দ পেয়েছিলেন। সর্বশেষ সরকারি তিতুমীর কলেজে ৪ বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডর চেয়ারম্যান হিসেবে চাকরি জীবন থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। তার স্বামী রফিক আজাদ একুশে পদক, বাংলা একাডেমিসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমানে তাদের দুই সন্তান—অভিন্ন আজাদ ও অব্যয় আজাদ প্রবাসে রয়েছেন।
এ বিষয়ে দিলারা হাফিজ বলেন, জাতীয় জীবনে একজন অগ্রগণ্য কবি ও বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদ। তার স্মৃতি সংরক্ষণ ও ধারণের জন্যে বাড়িটির অংশবিশেষের স্থায়ী বন্দোবস্তের আদেশ পেতে গতকালও তিনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ঘুরেছেন। মামলা চলমান থাকাবস্থায় উচ্ছেদ অভিযান চালানোর আশা করেননি তিনি।