ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘সরকারকে বার্তা দিতে চাই, ধীরে ধীরে ছয় মাস পার হয়ে গেছে। আমরা এই সময় কোনো কথা বলিনি। আমরা বলেছিলাম, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিন। তিন মাসের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া যায়; কিন্তু আমরা তা বলিনি। এখন আমাদের দাবি, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। বিএনপি নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চায়। সংস্কারের নামে আর অযথা সময়ক্ষেপণ চায় না বিএনপি।’

আজ সোমবার দুপুরে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় পুরাতন কালেক্টরাল প্রাঙ্গণে এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো ও দ্রুত নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে সৈয়দ এমরান সালেহ বলেন, এই সরকারের ছয় মাস চলে গেছে কিন্তু দৃশ্যত কোনো কিছুই হচ্ছে না। দ্রব্যমূল্য অসহনীয়ভাবে বেড়ে যাচ্ছে। চারদিকে চাঁদাবাজি, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই হচ্ছে। খুন–রাহাজানি বেড়ে যাচ্ছে। এগুলো কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, খুন এসব প্রশাসনকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ প্রসঙ্গে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘শয়তানকে ধরার যে এই অপারেশন ডেভিল হান্ট, তা এত দিন পরে কেন? আমাদের প্রশ্ন—কেন ৮ আগস্ট এই সরকার কয়েমের পর থেকে এই ডেভিল হান্ট হলো না? কেন ওবায়দুল কাদেরকে ধরা হলো না? কেন তাঁকেসহ অন্যান্য শয়তানকে পালিয়ে যেতে দেওয়া হলো? কেন সন্ত্রাসী গডফাদার, দুর্নীতিবাজ লুটেরাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে দেওয়া হলো? এখনো যারা প্রশাসনে আওয়ামী লীগের দোসর রয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?’

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো.

আনোয়ারুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম হিলালী। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছাড়া বক্তব্য দেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক এ টি এম আবদুল বারী, সদস্য আরিফা জেসমিন, সদস্য অধ্যক্ষ রাবেয়া আলী প্রমুখ।

এদিকে দুপুর ১২টা থেকে সমাবেশ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই জেলার ১০টি উপজেলার বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নির্ধারিত স্থানে জড়ো হন। একপর্যায়ে সমাবেশস্থল ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যায়। দুপুর সোয়া ১২টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হলে দেখা যায়, নেতা-কর্মী জায়গা না পেয়ে অনুষ্ঠানস্থল লাগোয়া প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। মানুষের চাপে একপর্যায়ে ছোটবাজার এলাকা থেকে মোক্তারপাড়া পৌরসভা কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। এতে তীব্র যানজটসহ পথচারীদের কিছুটা বেগ পোহাতে হয়। ঘণ্টা চারেক পর সমাবেশ শেষ হলে অবশ্য যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ব এনপ র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

তরুণীকে মারধর মামলায় কফি হাউজের দুই কর্মচারী রিমান্ডে 

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলায় ‘আপন কফি হাউজ’-এ এক তরুণীকে মারধরের মামলায় দুই কর্মচারীর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসানের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। 

রিমান্ডে যাওয়া দুই আসামি হলেন-আপন কফি হাউজের ম্যানেজার আল আমিন ও কর্মচারী শুভ সূত্রধর।

এদিন দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামপুরা থানার উপ-পরিদর্শক মো. মহসিন। আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। 

শুনানি শেষে আদালত তাদের এক দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

রামপুরা থানার (নারী-শিশু) আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের সাব-ইন্সপেক্টর জাহিদুল ইসলাম রিমান্ডের তথ্য নিশ্চিত করেন।

গত ১১ এপ্রিল খিলগাঁওয়ের তালতলা এলাকায় ক্যাফের সামনেই ওই দুই কর্মচারী ওই তরুণীকে লাঞ্ছিত করেন। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রায় দেড় মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আপন কফি হাউজের সামনে এক তরুণীর সঙ্গে প্রথমে খারাপ আচরণ করছেন ক্যাফের কর্মচারী। পরে লাঠি দিয়ে তাকে আঘাত করতে দেখা যায়।

এ ঘটনায় গতকাল সোমবার তাদের আটক করে মঙ্গলবার নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ও ৩২৩ ধারায় মামলা দেয় রামপুরা থানা পুলিশ।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, আপন কফি হাউজে গত ১১ এপ্রিল বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আসামিরা তরুণীকে লাঠি দিয়ে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ