আ.লীগ কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর-লুটপাট, মোটরসাইকেলে আগুন
Published: 17th, February 2025 GMT
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ফুলবাড়ীয়া গ্রামে রাস্তার জমির উপর বাড়ি নির্মাণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের পর প্রবাসী আওয়ামী লীগ কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এসময় একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম (৩২) নামের এক বিএনপি কর্মীকে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ভাঙচুর হওয়া বাড়ির মালিকের নাম জাহাঙ্গীর আলম (৩৫)। তিনি ফুলবাড়ী গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে আছেন। তার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের ছোট ভাই জুয়েল জানান, স্থানীয় বিএনপি নেতা সাগর হোসেনের নেতৃত্বে তার বাড়িতে হামলা করা হয়। হামলাকারীরা বাড়ি ভেঙে সব আসবাবপত্র লুট করেছে। তারা বাড়ি থেকে তিন ভরি স্বর্ণের গয়না, নগদ তিন লাখ টাকাসহ দামি জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। এছাড়াও তারা জাহাঙ্গীর আলমের শ্বশুর আব্দুল কাদেরের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাস্তা মেরামত করার জন্য জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনে ফেলা মাটি সরাতে যায় জুয়েল। এ সময় স্থানীয় বিএনপি কর্মী সাইফুল ইসলাম বাধা দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দুই জনের মধ্যে মারামারি বেধে যায়। এ সময় লোহার শাবল দিয়ে জুয়েল আঘাত করলে সাইফুলের মাথায় জখম হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
পরে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ চলে গেলে বিএনপি কর্মী সাগরের নেতৃত্বে লোকজন গিয়ে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে হামলা করে।
এ বিষয়ে বিএনপি কর্মী সাগর হোসেন বলেন, রাস্তার জায়গা না রেখে তারা বাড়ি নির্মাণ করেছে। বাড়ি নির্মাণের সময় স্থানীয় জনসাধারণ বাধা দেন। রাস্তার জায়গা ছেড়ে বাড়ি নির্মাণ করতে বলেন। কিন্তু জাহাঙ্গীর আলম কারো কথা শোনেননি।
তিনি বলেন, ওই রাস্তার সংস্কার কাজ চলছে। কিছু মাটি তার বাড়ির সামনে রাখা হয়েছিল। জুয়েল গিয়ে সেই মাটি ফেলে দিতে থাকে। এ সময় সাইফুল ইসলাম নামের একজন বাধা দিলে তাকে পিটিয়ে জখম করে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে গ্রামবাসী তার বাড়িতে হামলা করে।
পুঠিয়া থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, খবর পেয়ে দুই দফায় সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ র আলম ল ইসল ম ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে গাজার বাসিন্দাদের, অপুষ্টিতে ধুঁকছে শিশুরা
দেড় মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলের অবরোধে ত্রাণবাহী গাড়ি ঢুকতে না পারায় ক্রমেই তীব্র হচ্ছে খাদ্যসংকট। এতে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে উপত্যকার বাসিন্দাদের। বিশেষ করে শিশুরা ধুঁকছে ব্যাপক অপুষ্টিতে। এ অবস্থায় ক্ষুধাকে অস্ত্র বানানোর অভিযোগ তুলেছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ অবরোধ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় পুনরায় হামলা শুরুর এক সপ্তাহ আগে ২ মার্চ সব ধরনের ত্রাণ প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইসরায়েল। এরই মধ্যে তারা গাজার বিভিন্ন এলাকায় স্থলাভিযানও শুরু করেছে। পাশাপাশি অব্যাহতভাবে চালানো হামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার এক দিনে আরও ৪০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হন ৭৩ জন। এর মধ্যে গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে এক হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত হন।
গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, অবরোধই হচ্ছে হামাসের ওপর চাপ প্রয়োগের উপায়। এ অবরোধ সরানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত তাদের নেই। এ অবস্থায় জানিয়েছে, পুষ্টিহীনতার কারণে গাজার পরিস্থিতি দ্রুতই খারাপের দিকে যাচ্ছে। কাটজ বলেন, যুদ্ধ বন্ধে শেষ পর্যন্ত কোনো সমঝোতা হলেও তাদের বাহিনী গাজায় নিজেদের বানানো বাফার জোন ছাড়বে না। ইসরায়েলের মন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে হামাস বলছে, তাঁর এ বক্তব্য যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করা ছাড়া কিছু নয়। বৃহস্পতিবার টেলিগ্রাম পোস্টে সংগঠনটি লিখেছে, ইসরায়েল নিরপরাধ বেসমারিক লোকজনের জীবনরক্ষার মৌলিক উপাদান যেমন– খাবার, ওষুধ, পানি ও জ্বালানি থেকে বঞ্চিত করছে।
এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ বলছে, পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে না দেওয়ায় শিশুরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএর এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলের অবরোধের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে জানায়, মানবিক সহায়তা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ায় গাজায় তীব্র খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সেখানে মাংস, হাঁস-মুরগি, দুগ্ধজাত পণ্য, শাকসবজি ও ফলমূলের মতো পুষ্টিকর খাদ্য একেবারেই কমে গেছে। ওসিএইচএর তথ্য অনুযায়ী, মার্চে অপুষ্টিতে ভোগা ৩ হাজার ৬৯৯ শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ২ হাজার ২৭। পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি গাজায় বিশুদ্ধ পানির সংকটও তীব্র।
যুদ্ধের এ পরিস্থিতির মধ্যে ফিলিস্তিনে পালন করা হচ্ছে ‘কারাবন্দি দিবস’। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় আগ্রাসন শুরুর আগে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনির সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ২৫০ (৪০ নারী ও ১৭০ শিশু)। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত এ সংখ্যা ৯ হাজার ৯০০ জনে পৌঁছেছে, যাদের মধ্যে নারী ২৭ জন; শিশুর সংখ্যা কমপক্ষে ৪০০। ফিলিস্তিনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের কারাগারে ৬৪ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, স্থায়ীভাবে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা দখলের বিষয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে জার্মানি। মূলত ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ গাজার তথাকথিত নিরাপত্তা অঞ্চলে সেনাদের অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান করার কথা বলার পর এ সতর্কবার্তা এলো। অন্যদিকে, ইসরায়েল স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলেছে উত্তর কোরিয়া। পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় নতুন করে শুরু করা ইসরায়েলের হামলার সমালোচনাও করেছে পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) এ খবর জানায়।