২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাতের আঁধারে ভেঙে দেওয়া একটি শহীদ মিনার এক মাসের মধ্যে তৈরি করে দেওয়ার সেই প্রতিশ্রুতি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এই বাস্তবতায় এবারও ঈশ্বরদীর সাঁড়াগোপালপুরে মহান শহীদ দিবস পালন করা হবে কাগজের তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারে। ভেঙে ফেলা শহীদ মিনার পুনঃস্থাপনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সমকাল সুহৃদ সমাবেশের ঈশ্বরদী ইউনিট। গতকাল সোমবার বিকেলে সাঁড়াগোপালপুর স্কুল মাঠে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সমকালের ঈশ্বরদী প্রতিনিধি সেলিম সরদারের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য দেন কলেজ শিক্ষক রাজিবুল আলম ইভান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা, শিক্ষক আরিফুল ইসলাম, মাসুম সিদ্দিকী, আলী হোসেন, জিহাদুল ইসলাম বাপ্পি, কামরুজ্জামান ফিরোজ, সুহৃদ হাসান চৌধুরী, দীপ্ত আল ফারাবী প্রমুখ।

তিন বছর আগে সাঁড়াগোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ করার অজুহাতে রাতের আঁধারে যে শহীদ মিনারটি নিশ্চি‎হ্ন করে দেওয়া হয়েছিল তা এক মাসের মধ্যে তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় উপজেলা প্রকৌশল অফিস। কিন্তু এত বছর পরও সেখানে নির্মিত হয়নি শহীদ মিনারটি। এজন্য এবারও অস্থায়ী শহীদ মিনারে ঈশ্বরদীর সাঁড়াগোপালপুরের দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে অমর একুশের দিন শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হবে। প্রতিবছর এই শহীদ মিনারে উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, স্কুল পরিচালনা কমিটি, অভিভাবক ও এলাকাবাসী শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকে।

সাঁড়াগোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান জানান, এখানে চমৎকার একটি শহীদ মিনার ছিল, এখন নেই। মনের কষ্ট বুকে চেপে কাগজের তৈরি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে হবে এবারও– এটি আমাদের সবার জন্য দুঃখজনক।

ইতোপূর্বে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, শিক্ষার্থী এবং এলাকার সাধারণ মানুষের আন্দোলন ও দাবির মুখে এক মাসের মধ্যে শহীদ মিনারটি আগের স্থানে নতুন করে নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দেয় উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু এক মাস তো দূরের কথা গত তিন বছরেও ভেঙে দেওয়া সেই শহীদ মিনার নির্মাণের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবীর বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য বলা হলেও ঠিকাদার তা এখনও করেনি। এই কাজের ঠিকাদার সৈকত ইসলাম বলেন, নতুন স্কুল ভবন নির্মাণের প্রয়োজনে শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলতে হয়েছিল। আমি ওই শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য কথা দিয়েছিলাম কিন্তু সময়মতো তা করতে পারিনি। শিগগিরই শহীদ মিনারটি আমরা নির্মাণ করে দেব।

 

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর এক ম স

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মা সেতুর মাওয়া টোলপ্লাজায় ঘরমুখো মানুষের ঢল

অফিস ছুটি হয়েছে। কয়েকদিন পর ঈদ। তাই, পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত পদ্মা সেতুর মাওয়া দিয়ে ঘরমুখো মানুষের যেন ঢল নেমেছে। এরই মধ্যে মাওয়া টোল প্লাজা থেকে চোখে পড়ছে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। আজ থেকে শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। তাই ভোর থেকেই ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে।

পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি ছাড়িয়ে গেছে। ছুটির প্রথম দিনে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের ঢল নেমেছে। ভোর থেকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে পদ্মা সেতুর দিকে এগিয়ে আসছে মোটরসাইকেলের সারি। সেতুর টোল প্লাজার মোটরসাইকেল বুথ ছাড়াও সাতটি বুথে টোল নিয়েও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না কর্তব্যরতরা।

সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, এবার ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সাতটি বুথে যানবাহনের টোল আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া ঈদে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নজরদারি বাড়িয়েছে সেতুর নিরাপত্তাকর্মীরা। তবে যানবাহনের তীব্র চাপে দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে।

মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজা থেকে এক কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ গাড়ির জট সৃষ্টি হয়েছে। পদ্মা সেতুর কল্যাণে ভোগান্তি অনেকটা কমলেও মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় অতিরিক্ত গাড়ির চাপে সৃষ্টি হয়েছে ভোগান্তি। মোটরসাইকেলের পাশাপাশি রয়েছে অন্যান্য পরিবহনের জটও।  

মাওয়া ফাঁড়ির ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জিয়াউল ইসলাম জানান, আজ ভোর থেকেই এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চলাচল বেড়েছে। পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবহনের জট তৈরি হয়েছে। টোল প্লাজার মোটরসাইকেল বুথ ছাড়াও সাতটি বুথে টোল নিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে। আজ সকালে বেশি চাপের কারণে মোটরসাইকেল বুথ বাড়িয়ে তিনটি করা হয়।

আজ ভোর রাত থেকেই পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের ঢল নামে। যা এখনও (বেলা ১১টা পর্যন্ত) অব্যাহত রয়েছে। মোটরসাইকেলের পাশাপাশি অন্যান্য যাত্রীবাহী গাড়ির চাপও বেড়েছে। তবে মোটরসাইকেলের জন্য বরাবরের মতোই এবারও রয়েছে আলাদাভাবে টোল নেওয়ার ব্যবস্থা। বর্তমানে তিনটি বুথ দিয়ে মোটরসাইকেলের টোল আদায় করা হচ্ছে। তারপরও গাড়ির অতিরিক্ত চাপে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে টোলপ্লাজা এলাকায়।

পদ্মা সেতুর সাইড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ জানান, শুক্রবার সকাল ৬টার পর থেকে সেতুতে যানবাহন চলাচল বেড়েছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল অস্বাভাবিক বেড়েছে। তাই, মোটরসাইকেলের টোল আদায়ের জন্য আলাদা আরও দুটি অস্থায়ী বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এখন সেতু এলাকায় মোট তিনটি বুথের মাধ্যমে মোটরসাইকেলের টোল আদায় করা হচ্ছে। তারপরও টোল প্লাজা থেকে এক কিলোমিটারের মতো গাড়ির জট সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ঈদের ৯ দিনের ছুটির শুক্রবার প্রথম দিনে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বেশি। চাপ সামাল দেওয়ার নিরলস চেষ্টা চলছে।

পদ্মা সেতু কর্তপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২০ এপ্রিল থেকে পদ্মা সেতুতে দ্বিতীয় দফায় বাইক চলাচল শুরু হয়। এর আগে ২০২২ সালের ২৬ জুন খুলে দেওয়া হলে বাইক দুর্ঘটনায় দুই যুবক নিহত হয়। এতে কর্তৃপক্ষ সেতু দিয়ে বাইক চলাচল নিষিদ্ধ করে। পরে অবশ্য আবার বাইক চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি জাকির হোসেন জানান, যাত্রী নিরাপত্তার জন্য পদ্মা সেতু এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি টহল টিম রাখা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের পৃথক টহল টিম মোতায়েন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, শুক্রবার ভোর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে, যা এখনও অব্যাহত আছে।

অন্যদিকে ঈদযাত্রায় এক্সপ্রেসওয়ে ও মহাসড়কের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেছে হাইওয়ে পুলিশ।

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে ও ওভারটেকিং বন্ধে স্পিড গানের মাধ্যমে যানবাহনের অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ।

তবে ঈদ ঘরমুখো মানুষজনের অভিযোগ, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে যানবাহনের টোল আদায় কার্যক্রম ধীর গতিতে চলায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে গাড়িচালক ও যাত্রীদের। তাদের দাবি, দ্রুত টোল আদায় ও বুথ সংখ্যা বাড়ালে যাত্রী ভোগান্তি কমবে।

হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের পুরো এক্সপ্রেসওয়ের নিরাপত্তায় হাইওয়ে পুলিশের আটটি ইউনিট কাজ করছে। চালকরা যেন বেপরোয়া গাড়ি না চালায়; তার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি আনসারও কাজ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত
  • পদ্মা সেতুর মাওয়া টোলপ্লাজায় ঘরমুখো মানুষের ঢল