জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে দুই পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সোমবার সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা চলাকালে মোবাইল ফোনের সাহায্যে উত্তরপত্র (ওএমআর) পূরণের সময় পারমিতা দত্ত ভূমি (১৭) নামে এক পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। পরে তাকে সহায়তাকারী হিসেবে পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে থাকা তার বোন নিবেদিতা দত্তকেও আটক করে প্রক্টরিয়াল টিম। তারা দুজনই কিশোরগঞ্জ সদরের নয়ন চন্দ্র দত্তের মেয়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম সূত্রে জানা যায়, পারমিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ কেন্দ্রের ১৯ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। পরীক্ষা চলাকালে তিনি মোবাইল ফোন দেখে উত্তরপত্র পূরণ করছিলেন। বিষয়টি কক্ষ পরিদর্শকের নজরে এলে তিনি শৃঙ্খলা কমিটিকে বিষয়টি জানান। পরে শৃঙ্খলা কমিটি ও প্রক্টরিয়াল টিম এসে পরীক্ষার্থীকে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তার সহযোগী হিসেবে বাইরে অপেক্ষারত নিবেদিতা দত্তকেও আটক করা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, আটক পরীক্ষার্থী মোবাইল ফোন ব্যবহার করে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মবহির্ভূত। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। মোবাইল কোর্ট না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র থ

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েট ভিসিকে অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশনের ঘোষণা জাবি শিক্ষার্থীদের

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। 

কুয়েটের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে তারা জানান, বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকে তারা এ অনশন শুরু করবেন।

মার্কেটিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জল বলেন, “কুয়েটের ভিসিকে অপসারণ না করা হলে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতি পূর্ণ সংহতি জানিয়ে আমরণ অনশনে বসবো আমরা।”

এদিকে, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, "কুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কুয়েটের ভিসিকে অপসারণের দাবিতে বুধবার থেকে আমরণ অনশনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। তাকে অপসারণ না করা পর্যন্ত জাবির শহীদ মিনারে আমাদের অনশন কর্মসূচি চলমান থাকবে। সকলকে আমাদের এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।”

এছাড়া, অনেক শিক্ষার্থী তাদের নিজেদের টাইমলাইনে আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীরা #kuetVCmustSTEPDOWN হ্যাশট্যাগে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

গত ২১ এপ্রিল পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী কুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ৩২ জন আমরণ অনশন শুরু করেন। বিকেল ৩টায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দার পূর্বদিকে অবস্থান নেন। এরপর সেখানে বিভিন্ন বিভাগের ৩২ জন শিক্ষার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে অনশন শুরু করেন।  অনশনরত ৩২ শিক্ষার্থীর মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়।

এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য গঠিত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

এর মধ্যে কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোসেন আলী নামের এক ব্যক্তি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেন।

আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে, আন্দোলন আবারও দানা বাঁধতে থাকে।

গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।

এর মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবির ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা কুয়েটের ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে হলগুলোতে অবস্থান নেন।

ঢাকা/আহসান হাবীব/ইভা  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টাইমস হায়ার এডুকেশন র‌্যাঙ্কিং: দেশসেরা বুয়েট, ২য় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবির অবস্থান কত
  • জাবিতে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি
  • কুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি, আরও তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশন
  • কুয়েট ভিসিকে অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশনের ঘোষণা জাবি শিক্ষার্থীদের