সংযুক্ত আরব আমিরাতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তান শাহিনস বা পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৩৮.২ ওভারে ২০২ রান করে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।

রান পাননি টপ অর্ডারের তানজিদ তামিম ও নাজমুল শান্ত। ওপেনার সৌম্য সরকার ও চারে ব্যাট করতে নামা মেহেদী মিরাজ সেট হলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। পাকিস্তানের ওসামা মীর ১০ ওভারে ৬০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। 

শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৬ রানে প্রথম উইকেট হারায়। তানজিদ তামিম ৬ রান করে ফিরে যান। দলের রান ৫০ হলে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত। তিনি সময় নিয়ে খেলার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। ২১ বলে করেন ১২ রান। 

ওপেনার সৌম্য পরেই সাজঘরে ফেরেন। তিনি ৩৫ করে রান আউট হন। ৫৩ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন মিরাজ। তিনটি চারের শট খেলেন। তিনি ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে আউট হন। তার আগে ফিরে যাওয়া তাওহীদ হৃদয় ৩৩ বলে ২০ রান করেন। মুশফিকুর রহিম ৭ রান করে ফিরে যান।

পরে জাকের আলী (৪) ও রিশাদ হোসেন (১৪) ব্যর্থ হলে দুইশ’ রানের আগে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ দল। তানজিম সাকিব ২৭ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে দলের রান দুইশ’র ওপরে নেন। এছাড়া নাসুম খেলেন ১৫ রানের ইনিংস।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের ‘নিজস্ব ঢংয়ের’ ব্যাটিং, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাই এই দশা

সিলেটের আবহাওয়ার নিজস্ব একটা ঢং আছে। কখন রোদ উঠবে, কখন বৃষ্টি নামবে বোঝা কঠিন। সেই সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলও দেখিয়েছে ব্যাটিংয়ের নিজস্ব ঢং। কখন যে কী হবে বোঝা কঠিন!

যখনই কেউ উইকেটে থিতু হয়েছেন, বড় ইনিংস খেলার আশা জাগিয়েছেন; তখনই উইকেট উপহার দিয়ে এসেছেন! আর হঠাৎ ব্যাটিং ধস তো সেই কবে থেকেই বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

বাটিংয়ে চিরাচরিত সবকিছুই যখন এভাবে দাড়ি-কমাসহ মিলে যাবে, সেদিন বাংলাদেশের সংগ্রহ বড় না হওয়াটাই তো স্বাভাবিক। হয়েছে সেটাই। সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৯১ রানে।

উপহার না দিলে এই উইকেটে ব্যাটসম্যানদের আউট করা যে কঠিন, সে তো প্রথম দিনের শেষবেলায় জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং দেখেই বোঝা গেছে। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৭ রান নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেছেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ও বেন কারেন। বেনেট ৩৭ বলে ৪০ রানে অপরাজিত, কারেন ৪৯ বলে ১৭ রানে। প্রথম দিনে খেলা হয়েছে ৭৫.১ ওভার, জিম্বাবুয়ে পিছিয়ে ১২৪ রানে।

বাংলাদেশি ঢংয়ের ব্যাটিংয়ের ‘নেতৃত্বে’ ছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেনই। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে ২০২৪ সালে নিজের ব্যাটিংয়ের কিছু ভুল তুলে ধরেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৩০-৪০ রানের ইনিংসগুলোকে কীভাবে বড় করা যায়, সেটি নিয়েই কাজ করেছেন বলেই জানান নাজমুল। এত কিছু বলে বছরের প্রথম টেস্টে সেই একই ভুল! ব্লেসিং মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরে করা শর্ট বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন ব্যক্তিগত ৪০ রানে।

সাদা পোশাকের ক্রিকেটে কেন এমন শট খেলতে গেলেন, এই যুগে সেই প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। বরং অফ স্টাম্পের বাইরে থাকা বলটি কেন ফিল্ডারের হাতে গেল, সেই প্রশ্ন নিজেকে করতে পারেন নাজমুল। সঙ্গে আর কত দিন ভালো খেলতে খেলতে মনযোগ হারিয়ে এভাবে উইকেট দিয়ে আসবেন, সেটিও!

নাজমুলের বিদায়ে যিনি উইকেটে আসেন, সেই মুশফিকুর রহিম যেভাবে আউট হয়েছেন, তা আরও দৃষ্ট কটু। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার যে বলটিতে আউট হয়েছেন, সেটিতে চার মারার চেয়ে আউট হওয়া কঠিন। মুশফিক কঠিন কাজটাই করেছেন। নিরীহ শর্ট বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন ৪ রান করে।

ক্রিকেটে দিনটা নিজেদের হলে অবিশ্বাস্য কিছুই করেন ব্যাটসম্যানরা। অন্তত বিশ্বমানের ক্রিকেটে সেটাই হয়। তবে আজ মুমিনুল হকের বিষয়টি ছিল অন্যরকম। শূন্য রানে জীবন পেয়েছেন, এজ হয়ে চার পেয়েছেন কয়েকটি। এরপরও ৫৬ রানের বেশি করতে পারেননি। হয়তো বুঝতেই পারেননি, ভাগ্যবিধাতাও তাঁর কাছ থেকে একটা বড় ইনিংস চাইছেন! তাই শেষ পর্যন্ত মাসাকাদজার হাওয়ায় ভাসানো বলে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন।

কাছাকাছি সময়ে বাউন্সারে ব্যাটসম্যানদের একের পর এক পরীক্ষা নিচ্ছিলেন মুজারাবানি। এই পেসার গতির ঝড় তুলতে না পারলেও সিলেটের উইকেট আর নিজের উচ্চতা কাজে লাগিয়ে বাউন্স ঠিকই আদায় করেছেন। ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলেছেন। তাঁর লাফিয়ে ওঠা বলে অনেকটা অসহায় আত্মসমর্পণ করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

দলের ৪ জন মূল ব্যাটসম্যানের এমন হতশ্রী বিদায়ে ব্যাটিং ধস তো হবেই! এরপর তাইজুল ইসলামও যোগ দেন এই তালিকায়। এতে ২ উইকেটে ৯৮ রান করা বাংলাদেশ পরের ৫৬ রান করতে হারায় ৫ উইকেট। ১৪৬ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে জাকের আলী লড়াইটা না করলে সংগ্রহটা আরও ছোট হতে পারত। সেখান থেকে হাসান মাহমুদকে সঙ্গে নিয়ে ৪১ রানের জুটি গড়েন জাকের।

সেই জুটি ১৮৭ রানে ভাঙার পর বাংলাদেশ দল আর টিকেছে ৯ বল। যোগ করতে পেরেছে ৪ রান। জাকের আউট হয়েছেন ২৮ রানে। ঘরের মাঠে টেস্টে ২০০ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়া অনেকটা অভ্যাসে পরিণত করেছে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে সর্বশেষ ৮ ইনিংসে এ নিয়ে ছয়বার দুই শর নিচে অলআউট।

মুজারাবানি উইকেট নিয়েছেন ৩ টি। প্রথম দিনে নাহিদ রানার সঙ্গে লড়াইয়ে আপাতত এগিয়েই আছেন এই পেসার। বল হাতে ৩ উইকেট নিয়েছেন স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজাও।

অথচ তাঁকে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন প্রথম বল দেন ম্যাচের ৩৮ তম ওভারে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যে এত এত ‘উপহার’ দেবেন, আরভিনের অবশ্য তা জানার কথা নয়!

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এনামুলের দিনে রনিরও সেঞ্চুরি, জিতেছে আবাহনী–মোহামেডান–গাজী
  • গা-ছাড়া ক্রিকেটে ডুবল আশার সূর্য
  • বাংলাদেশের ‘নিজস্ব ঢংয়ের’ ব্যাটিং, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাই এই দশা