ফিটনেসবিহীন পুরোনো লক্কড়-ঝক্কড় বাসগুলো রাতারাতি গোলাপি রং করে চালাতে গিয়ে নগরজুড়ে প্রতিদিনই বাড়ছে গণপরিবহন সংকট। এতে ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। এমন দাবি করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সংগঠনটি জানায়, নগরের সৌন্দর্যবর্ধন, পরিবেশ দূষণ রোধ এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকার ঢাকা মহানগরীতে ২০ বছরের পুরোনো লক্কড়-ঝক্কড় বাস উচ্ছেদে এ পদক্ষেপ নেয়।

তবে বাস্তবে এর সুফল পাওয়া যায়নি। ভয়াবহ যাত্রী দুর্ভোগ থেকে মুক্তি এবং একইসঙ্গে বিআরটিএ চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়রি) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো.

মোজাম্মেল হক চৌধুরী এসব অভিযোগ করেন। এসময় সমিতির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব রোববার নগরজুড়ে সড়ক অবরোধ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের তাণ্ডবলীলায় ভয়াবহ যাত্রী দুর্ভোগ তৈরির জন্য বিআরটিএকে দায়ী করেন এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে মামলা রুজুর প্রজ্ঞাপন বাতিল করে অসহায় যাত্রীদের ভাড়া নৈরাজ্যকারী অটোরিকশা চালকদের হাতে তুলে দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি বিলুপ্তি চাই।

এ সময় তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকার বিশৃঙ্খল গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, লক্কর-ঝক্কর বাস উচ্ছেদ করে মানসম্মত উন্নত গণপরিবহন চালু করতে অন্তবর্তী সরকার ইতোমধ্যে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। গত ১৯ ডিসেম্বর সরকারের চার উপদেষ্টা, পুলিশ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএসহ বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ঢাকা মহানগরীর ২০ বছরের পুরোনো বাস মে মাসের মধ্যে উচ্ছেদ করার নির্দেশনা দেন। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকার সব রুট বিলুপ্ত করে ৯টি রুটে ৯ রংয়ের উন্নত বাস পরিষেবা চালুর নির্দেশনা দেন তিনি। এমন নির্দেশনার অপব্যবহার করে নতুন উন্নত বাসের বদলে ২০ থেকে ৪০ বছর যাবত নগরীতে চলাচলরত মেয়াদোত্তীণ লক্কড়-ঝক্কড় ফিটনেসবিহীন বাস রাতারাতি গোলাপি রং করিয়ে চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাসের ভাড়া নির্ধারণের শর্ত লংঘন করে অব্যবস্থাপনায় গণপরিবহন সংকটে ভয়াবহ যাত্রী দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে নগরজুড়ে। এতে ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়ছেন প্রতিদিন অফিসগামী যাত্রীরা। এমন সংকট নিরসনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ, ট্রাফিক বিভাগ ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কোন ধরনের হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।

মোজাম্মেল হক বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা ঢাকা মহানগরীর ২১টি পরিবহন কোম্পানির গাড়ি ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কাউন্টারভিত্তিক পরিচালনা শুরু করেন। নগরীতে যেকোনো উন্নত গণপরিবহন পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রো আরটিসির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এক্ষেত্রে তা অনুসরণ করা হয়নি। ২৬১০টি বাসের রং পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিআরটিএর পূর্ব অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এসব বাসের তালিকা বিআরটিএ বা ট্রাফিক বিভাগ কারো কাছে পাওয়া যায়নি।

তিনি আরো বলেন, এসব বাস-মিনিবাসের সিংহভাগই ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কর, অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর উল্লেখ করে মোজাম্মেল হক বলেন, কোনো কোনো পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে এসব মেয়াদোত্তীণ লক্কড়-ঝক্কর ফিটনেসবিহীন বাস উচ্ছেদ ঠেকাতে কেবলমাত্র উপরে গোলাপি রং ধারণ করেছে। মেয়াদোত্তীণ ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কর বাস উচ্ছেদ করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে মালিক সমিতির পরিবর্তে একটি কোম্পানির আদলে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে রুট রেশনলাইজেশন পদ্ধতিতে কোরিডর ভিত্তিক চলাচল নিশ্চিত করে ৫ হাজার উন্নতমানের বাস নামানোর দাবি জানান তিনি।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণপর বহন ব আরট এ নগর ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চুয়াডাঙ্গায় বাসচাপায় ভ্যানচালকসহ নিহত ২

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় যাত্রীবাহী বাসচাপায় ভ্যানচালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কের নয়মাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজন হলেন সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের বাসিন্দা ভ্যানচালক আবদুর রাজ্জাক (৬৫) এবং মোহাম্মদজমা গ্রামের চাল ব্যবসায়ী সরোয়ার হোসেন (৭০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে মোহাম্মদজমা গ্রাম থেকে সরোয়ার হোসেন চালের বস্তা নিয়ে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে সরোজগঞ্জ হাটে যাচ্ছিলেন। সিন্দুরিয়া গ্রামের একটি গ্রামীণ সড়ক দিয়ে এসে নয়মাইল এলাকায় মহাসড়কে ওঠার সময় চুয়াডাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা ঝিনাইদহগামী একটি যাত্রীবাহী বাস ভ্যানটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ভ্যানচালক ও যাত্রী নিহত হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিন্দুরিয়া পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান।

চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, বাসের চাপায় ভ্যানটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং নিহত ব্যক্তিদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে। তাঁদের শনাক্ত করতে সময় লেগেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ