আইএমএফ-এর ঋণ প্যাকেজের চতুর্থ কিস্তির সঙ্গে পঞ্চম কিস্তির অর্থ জুন মাসে একসঙ্গে ছাড় হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের একটি সেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘উভয়পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে’ আগামী জুন মাসে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে বাংলাদেশের ঋণের পরের দুই কিস্তি ছাড় করার সিদ্ধান্ত হতে পারে।’’

“আমরা তাদের বলেছি, এত শর্ত একসঙ্গে মানা যাবে না। তারাও সাজেস্ট করেছে, আমরাও প্রস্তাব দিয়েছি জুন মাসে দুই কিস্তি একসঙ্গে ছাড় করার।’’

উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা বলেছি, আমাদের কিছু কাজ আছে। আমরা এত তাড়া করছি না। আমি একটা জিনিস বলি, আপনারা তো ভাবছেন ভিক্ষা করে নিয়ে আসি আসলে অনেক শর্ত মেনে ও আমাদের নিজস্ব তাগিদে। কিছু শর্ত আছে বললেই আমরা পালন করবো তা নয়। এখন আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি ভালো। চলতি হিসাব, আর্থিক হিসাব ও প্রবাসী আয় ভালো। আমরা মরিয়া হয়ে উঠছি না।’’

‘‘চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের প্রস্তাব প্রথম দফায় গত ৫ ফেব্রুয়ারি সংস্থার নির্বাহী পর্ষদের সভায় উপস্থাপনের কথা থাকলেও প্রথম দফায় তা পিছিয়ে ১২ মার্চ করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে তা আরো পিছিয়ে জুনে নিয়ে যাওয়া হলো। বোর্ড অনুমোদন করলে তার কয়েক দিন পর দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড় হতে পারে।’’

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ) এর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখান থেকে কী নিয়ে আসলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ইফাদ বাংলাদেশের কৃষিখাত উন্নয়নে বড় অবদান রাখছে। আমাদের কৃষিখাত, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে যে উন্নয়ন দেখেন সেটা তাদের জন্য হয়েছে। তা না হলে আমরা ১৭ কোটি লোককে খাওয়াতে পারতাম না। আমরা তাদের বলেছি, এসব খাতে আরো বেশি অর্থায়ন করতে।’’

আইএমএফের কাছ থেকে এই ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পাওয়ার জন্য আর্থিক খাতে নানা ধরনের সংস্কারের শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এর মধ্যে চতুর্থ কিস্তিতে অর্থ পেতে শর্ত ছিল চারটি।

সেগুলো হল- অর্থনীতির বহির্চাপ সামাল দিতে রাজস্ব আদায় জোরদার করা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির ভঙ্গি আরও সঙ্কুচিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশ্নে সবুজ প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে নীতিমালার বাস্তবায়ন।

এর মধ্যে বিনিময় হার ও রাজস্ব আহরণ নিয়ে শর্ত পূরণের অগ্রগতি নিয়ে আইএমএফ সন্তুষ্ট হতে পারেনি।

কথা ছিল, তৃতীয় পর্যালোচনা শেষ করে ৫ ফেব্রুয়ারি এর বোর্ড সভার পর ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চতুর্থ কিস্তির ৬৪ দশমিক ৫ কোটি ডলার ছাড় করবে আইএমএফ। তবে সেই সভা ১২ মার্চ পর্যন্ত পিছিয়ে গেছে। ফলে চতুর্থ কিস্তি অনুমোদনের বিষয়টিও বিলম্বিত হচ্ছে।

বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের আগে তৃতীয় কিস্তির অর্থের ব্যবহার ও শর্ত পরিপালনের অগ্রগতি দেখতে গত ৪ থেকে ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা সফর করে আইএমএফ মিশন।

ওই সফর শেষে আইএমএফের প্রতিনিধি দল বলেছিল, বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানো, আর্থিক খাতের সংস্কার ও অর্থনৈতিক চাপ সামাল দিতে আগের ঋণের বাইরে নতুন করে ৭৫ কোটি ডলার দিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে তারা।

এ ঋণ আইএমএফের পর্ষদে অনুমোদন পেলে আগের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের মোট ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।

ডিসেম্বরে আইএমএফ মিশনের সফর শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজনৈতিক পালাবদলের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ধীর হয়ে পড়েছে এবং মূল্যস্ফীতির পারদ চড়ছেই।

অর্থপাচার বিশেষ করে ব্যাংক খাত থেকে অর্থ বের হওয়া চাপে পড়েছে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ। পাশাপাশি রাজস্ব আয় কমার বিপরীতে সরকারি ব্যয়ের চাপ বেড়েছে। এগুলোর চাপ পড়েছে আর্থিক খাতে।

এমন প্রেক্ষাপটে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসার আভাস দেওয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর একসঙ গ আম দ র আর থ ক দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

পহেলা মার্চ রোজা হলে ৩৩ বছর পর দেখা মিলবে ‘বিরল’ দিনের

আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রমজানের চাঁদ দেখার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ওইদিন চাঁদ দেখা গেলে পরেরদিন ১ মার্চ সেসব দেশে পালিত হবে প্রথম রোজা। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

আর এটি হলে মধ্যপ্রাচ্য ও মুসলিম বিশ্বের মানুষ প্রত্যক্ষ করবেন— চন্দ্র ও সৌর মাস একসঙ্গে শুরু হওয়ার ‘বিরল’ দিন। যেটি প্রতি ৩৩ বছর পর পর মাত্র একবার ঘটে।

মানে এবার আরবি বর্ষপঞ্জিকার রমজান মাসের প্রথমদিন আর ইংরেজি বর্ষপঞ্জিকার মার্চ মাসের প্রথমদিন একই দিনে হবে। অর্থাৎ দুটি পঞ্জিকার নতুন মাসের প্রথম দিনটি হবে একসঙ্গে।

সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর ঘূর্ণনের হিসাব করে সৌর বর্ষপঞ্জিকার দিন গণনা করা হয়। এতে লিপ ইয়ারের (অধিবর্ষ) বছরটি হয় ৩৬৬টি দিনের। আর সাধারণ বছরগুলো হয় ৩৬৫ দিনের। কিন্তু চন্দ্রবর্ষপঞ্জিকা গণনা করা হয় চাঁদের পর্যায় অথবা চন্দ্রচক্রের ভিত্তিতে। আর এ কারণে রমজান মাস প্রতি বছর ইংরেজি বর্ষপঞ্জিকার ভিন্ন ভিন্ন দিন এবং মাসে শুরু হয়।

জ্যোতির্বিদরা বলছেন, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে সৌদি ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যাবে। এটি হলে ওইদিন রাতে দেশটিতে পড়া হবে প্রথম তারাবির নামাজ। সৌদিসহ বেশিরভাগ দেশ এখনো খালি চোখে চাঁদ দেখাকেই রমজান মাস শুরুর নির্ণায়ক হিসেবে ব্যবহার করে। তবে কিরগিজস্তান, কাজাখস্তানসহ কিছু দেশ জ্যোতির্বিদ্যার হিসাব-নিকাশ করে আগেই জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ১ মার্চ তারা প্রথম রোজা পালন করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওরা কারা বসন্ত আটকে দিতে চায়!
  • জিম্মিদের একসঙ্গে মুক্তি দিতে ‘রাজি’ হামাস
  • বিয়ে করেছেন নার্গিস ফাখরি নাকি শুধুই ‍গুঞ্জন
  • মূল্যায়ন না পেলে কাজ করব না: ইয়াশ রোহান
  • শহীদ মিনারে আগে ফুল দেওয়া নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের মারামারি
  • কমেডিয়ান জুটির বিয়ে
  • যে জেলায় একসঙ্গে বাস করেন ১৪ ভাষার মানুষ
  • পহেলা মার্চ রোজা হলে ৩৩ বছর পর দেখা মিলবে ‘বিরল’ দিনের
  • মেহজাবীনদের আগেও যেসব প্রেম–বিয়ে নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়েছিল