সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচন পেছানো চলবে না: সালাহউদ্দিন আহমেদ
Published: 17th, February 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচন পেছানো চলবে না। এ বছরের ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। যারা আনুপাতিক ভোটের কথা বলছেন, তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখেন না।
সোমবার বিকেলে কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা মাঠে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে কক্সবাজার জেলা বিএনপির উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দলটি এখন রাজনৈতিকভাবে মৃত। কাফনের কাপড় পরে দিল্লি গিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের বিচার দেশের সব গণতান্ত্রিক শক্তি চায়।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এবং প্রতিবেশী দেশ থেকে গণতন্ত্রবিরোধী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টার জন্যও আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে আয়োজনের প্রস্তাবনা প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তাই সবার আগে জাতীয় নির্বাচন হওয়া জরুরি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শেখ হাসিনার দোসরদের হাতেই দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসনে যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী ছিলেন, তাদের বাদ দিতে হবে এবং যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
বাজার পরিস্থিতির অবনতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়ান, সিন্ডিকেট ভাঙুন। জনগণ সংস্কার বোঝে না, তারা স্থিতিশীল বাজার চায়। রমজান মাসে কোনোভাবেই যেন পণ্যের দাম না বাড়ে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে ভ্যাট-ট্যাক্স কমিয়ে বাজার স্থিতিশীল রাখা জরুরি।
কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্নার সঞ্চালনায় আয়োজিত এই সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরীসহ জেলা ও উপজেলার শীর্ষ নেতারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহম দ স ল হউদ দ ন আহম দ ব এনপ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভূরাজনীতি আওয়ামী লীগকে প্রত্যাবাসন করতে চায়: মাহমুদুর রহমান
এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরেই বলেছিলাম, সম্ভবত প্রথম আলোতে লিখেছিও। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যখন বলেন ‘ইনক্লুসিভ পলিটিকস’–এর অর্থ কী। আমি যেটা বুঝি, দেশকে স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে নিতে হবে। গণতান্ত্রিক পথ মানে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নয়। অধ্যাপক ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে বিপ্লবী নন, আপাদমস্তক একজন গণতান্ত্রিক মানুষ। সে জন্য তিনি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে রেখেছেন সাংবিধানিক প্রতীক হিসেবে। তাঁর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স এনে তিনি সরকার গঠন করেছেন। তিনি গণতান্ত্রিক পথটা অনুসরণ করতে চান। সে জন্য তিনি (মুহাম্মদ ইউনূস) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ বা কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা তাঁর সরকারের নেই। এই প্রক্রিয়ায় তিনি যদি জিততে পারেন, সেটা বড় ব্যাপার। সেটা তিনি করছেন। কিন্তু পথটা বড় জটিল ও বন্ধুর।
আওয়ামী লীগ আসলে গণতান্ত্রিক দল নয়। তারা নিজেদের রাজনীতির স্বার্থ উদ্ধারের জন্য উগ্র বলপ্রয়োগ ও বিশৃঙ্খলার দিকে যেতে পারে, গত ১৫ আগস্ট এটা বোঝা গেছে। সরকার তাদের (আওয়ামী লীগ) সভা-সমিতি করার অনুমতি দেওয়ার কথা ভেবেছিল, কিন্তু পারেনি। এখনো এই সমস্যাটা আছে আমাদের। আওয়ামী লীগকে এই সুযোগ দিলে তারা দেশে বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করবে। কিন্তু আমার ধারণা বলে, ভূরাজনীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি আওয়ামী লীগকে প্রত্যাবাসিত করতে চায়। সরকার সেই চাপের সামনে নিজস্ব কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে সেনানিবাসের বৈঠকে তারই প্রতিফলন দেখা যায়। উদ্বেগের বিষয় হলো, সেনানায়কদের পক্ষ থেকে ছাত্রনেতাদের বলা হয়েছে, তোমরা তাদের (আওয়ামী লীগ) সঙ্গে নির্বাচনে সমঝোতা করো। তার মানে এই, এত দিন ধরে আমরা যে সংস্কারের মাধ্যমে একটি উন্নত নির্বাচনব্যবস্থায় যেতে চাচ্ছি, সেটা ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি এ জন্য গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
আমি মনে করি, অবিলম্বে সরকার এবং আইএসপিআরের (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বক্তব্য দেওয়া উচিত। হাজারো মানুষের রক্তের বিনিময়ে গণতন্ত্র বিনির্মাণের যে সুযোগ আমরা পেয়েছি, তা দেশি-বিদেশি কিছু স্বার্থান্বেষীর যূপকাষ্ঠের বলি হতে পারে না।
মাহমুদুর রহমান মান্না: সভাপতি, নাগরিক ঐক্য