স্লেজিং (কটু কথা) করাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষকসহ ২০ জন আহত হন। এরই প্রেক্ষিতে আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল হককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট স্লেজিং (কটু কথা) করার প্রেক্ষিতে ‘হামলার’ প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। আগামী তিনদিনের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
 
রোববার বিকেলে শেখ কামাল স্টেডিয়ামে আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ ও গণিত বিভাগের খেলা হয়। খেলায় গণিত বিভাগ তিন রানে জয়ী হয়। স্টেডিয়ামে উভয়পক্ষের সমর্থকেরা পাশাপাশি অবস্থান নেয়। খেলা শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সমর্থকেরা স্টেডিয়াম ত্যাগ করার সময় স্লেজিং করা নিয়ে গণিত বিভাগের সমর্থকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। পরে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সমর্থকেরা স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে গণিত বিভাগের সমর্থকের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে তারা স্টেডিয়ামের উত্তর পাশের গেট ভেঙে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে দুই বিভাগের সমর্থকেরা মুখোমুখি অবস্থান নিলে কয়েক দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সমর্থকেরা লাঠি-সোঁটা নিয়ে গণিত বিভাগের সমর্থকদের ওপর হামলা করেন। এতে গণিত বিভাগের অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে তারা প্যারিস রোডে জড়ো হয়ে মানববন্ধন করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন।
 
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছেন। দাবিগুলো হলো- প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটি গঠন করে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে হবে। হামলায় জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। সেই সঙ্গে ওই বিভাগকে সকল ধরনের খেলাধুলা থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে হবে। আহত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে হবে। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রশাসনকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
 
মানববন্ধনে বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত হামলা। যেখানে আমাদের বিভাগের ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হয়েছেন। অপরদিকে ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের কোনো শিক্ষার্থীই আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। আমরা প্রহসনমূলক কোনো তদন্ত কমিটি চাই না। তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই ন্যাক্কারজনক হামলার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

গণিত বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও খেলায় আহত শহীদ আখতার বলেন, ‘খেলায় ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ছিল। অন্যদিকে আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা শুরু থেকে চরম ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়ে আসছিল। ঠিক যখন আমরা জয়ের আনন্দে মেতে উঠব, তখনই তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। যা থেকে আমাদের বোনরাও রেহাই পায়নি। আমার চোখে চশমা না থাকলে হয়তো আজ আমি আপনাদের দেখতেও পেতাম না।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘গতকালকের ঘটনায় বেশকিছু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর আহত। বিষয়টি তদন্তে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া সাময়িকভাবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ স্থগিত করা হয়েছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণ ত ব ভ গ র আম দ র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার স্থাপন বন্ধের দাবিতে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী’র মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম অংশে তথা নিতাইগঞ্জ, শীতলক্ষ্যা, পাইকপাড়া, ভূঁইয়াপাড়া, ফরাজীকান্দা, জল্লারপাড়, নয়াপাড়া, বাবুরাইল, দেওভোগ, বেপারীপাড়া, নন্দীপাড়া, ভূঁইয়ারবাগ, গলাচিপা, কলেজ রোড, চাষাড়া, মাসদাইর, জামতলা সহ বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে ডিপিডিসি কর্তৃক পোষ্ট পেইড মিটারের পরিবর্তে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের পায়তারা করছে, এই প্রি-পেইড মিটার স্থাপন বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন করেছে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী।  

সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরউদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে যুগ্ম সম্পাদক-১ মাহমুদ হোসেন এর সঞ্চালনায় কিল্লারপুর বিদ্যুৎ অফিসের সম্মুখে মঙ্গলবার সকাল ১১টায়   মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে নেতৃবৃন্দ প্রধান প্রকৌশলীর নিকট প্রি-পেইড মিটার বন্ধে দাবী সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপি প্রদানের সময় আটজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সহ আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর নেতৃবৃন্দের সহিত প্রধান প্রকৌশলী অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এতে কিছুটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। যার ফলে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাগণ ও নেতৃবৃন্দ তার আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

মানববন্ধন অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূর উদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে বিভিন্ন এলাকায় এই প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কারণে গ্রাহকদের নানা রকম জটিলতা ও অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টির কথা তুলে ধরে এই কার্যক্রম বন্ধের জোর দাবী জানান।

প্রধান বক্তা নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. এ বি সিদ্দিক বলেন, এ ধরনের একটি গণবিরোধী কার্যক্রম ডিপিডিসি কর্তৃপক্ষ কিভাবে পরিচালনা করছেন জনগণের কাছে তার জবাবদিহি করতে হবে। অবিলম্বে এই প্রি- পেইড মিটার স্থাপনের কার্যক্রম বন্ধ করা না হলে ভুক্তভোগী নারায়ণগঞ্জের মানুষকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আমার কথা মতো উপজেলা চলবে, কথা না শুনলি চাকরি কত্তি পারবা না’
  • কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন
  • কুবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে মানববন্ধন
  • কুয়েটে হামলা: জবি হিউম্যান রাইটস সোসাইটির মানববন্ধন
  • ‘ছাত্রদের গায়ে গুলি লাগার আগে সেই গুলি আমার বুকে লাগবে।’
  • রূপগঞ্জে আন্ডারপাসের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল 
  • বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার স্থাপন বন্ধের দাবিতে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী’র মানববন্ধন
  • কুষ্টিয়ায় অবৈধ যান বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের মানববন্ধন
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে কর্মবিরতির ডাক