ভারতকে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হলে দাদাগিরি করা চলবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হলে প্রথমে তিস্তার পানি দিতে হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। তাহলে বন্ধুত্ব হতে পারে।

আজ সোমবার লালমনিরহাটে তিস্তা সেতু সংলগ্ন নদীপাড়ে জনতার মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একদিকে তারা (ভারত) পানি দেয় না, অন্যদিকে আমাদের শত্রুকে আশ্রয় দেয়। দিল্লিতে তাকে (শেখ হাসিনা) রাজার হালে রেখেছে। ওখান থেকে বসে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হুকুম দিচ্ছেন।’ 

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় এল তখন সবাই ভাবল ভারতের বন্ধু এবার মনে হয়  পানি আনতে পারবে। ১৫ বছরে তারা তিস্তার এক ফোঁটা পানিও আনতে পারিনি। ৫৪টি অভিন্ন নদীর উজানে ভারত বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি উত্তোলন করেছে। তারা ভারতের কাছে দেশ বেচে দিয়েছিল।’ 

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্যে করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারতকে স্পষ্ট করে বলতে হবে, তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে।’

তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জেলা বিএনপির সভাপতি আসাদুল হাবিব দুলুর সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। 

আয়োজক সূত্রে জানা যায়, আজ রাতে লালন সঙ্গীত পরিবেশিত হবে। রংপুর বিভাগের ১১টি পয়েন্টে রাতে মশাল প্রজ্বলন  করা হবে। আগামীকাল মঙ্গলবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ কর্মসূচি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ

মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর পূর্ণ হলো আজ। আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যদায় এ দিবসটি পালিত হবে। রাজধাানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিভিন্ন স্থানে ভাষা শহীদদের নিয়ে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতি একুশ’র মহান ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।

রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশ’র কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এছাড়াও কালো ব্যাজ ধারণ, প্রভাতফেরি সহকারে আজিমপুর কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানো হবে।

আরো পড়ুন:

চির নিদ্রায় শায়িত ভাষা সৈনিক বড়দা

হিলির শূন্যরেখায় দুই বাংলার ভাষাপ্রেমিদের মিলনমেলা

মহান ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী প্রদান করেছেন।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গত কয়েক বছর ধরে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশী বাঙালিদের জন্য এই দিবসটি হচ্ছে শোক ও বেদনার। অন্যদিকে, মায়ের ভাষা বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত।

১৯৫২ সালের এদিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে পূর্ব বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠির চোখ-রাঙ্গানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শংকিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।

একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি। এদিন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সঠিক নিয়মে, সঠিক রং ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।

দিবসটি পালন উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আজিমপুর কবরস্থানে ফাতেহা পাঠ ও কোরানখানির আয়োজনসহ দেশের সকল মসজিদে ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া এবং উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়কদ্বীপে ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা জনক স্থানগুলোতে বাংলা ভাষার বর্ণমালা সম্বলিত ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করা, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেরিভিশন এবং অন্যান্য স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতে একুশের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার এবং ভাষা শহীদদের সঠিক নাম উচ্চারণ, শহীদ দিবসের ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা, শহীদ মিনারের মর্যাদা সমুন্নত রাখা, সুশৃঙ্খলভাবে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, ইত্যাদি জনসচেতনতা মূলক বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যমগুলোতে প্রয়োজনীয় প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এছাড়া, বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্র বিশষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।
 

ঢাকা/হাসান/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ