মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।

মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘স্বৈরাচারের আমলে গ্রেপ্তার এটিএম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখা তার প্রতি জুলুম ও অন্যায় ছাড়া কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে তাকে এখনো আটক রাখায় জাতি বিস্মিত ও হতবাক হয়েছে। ইতোমধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে। সরকার ইচ্ছা করলে এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিতে পারে।’’

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দল

রিজভীর বক্তব্যের প্রতিবাদে যা জানাল জামায়াত

সোমবার (১৭) সকালে খুলনা প্রেস ক্লাবের লিয়াকত আলী মিলনায়তনে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ সব কথা বলেন। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শহীদ হাদিস পার্কের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল উপলক্ষে খুলনা মহানগরী ও জেলা জামায়াত এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে আজহারুল ইসলাম আপিল করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং তাকে খালাস দেওয়ার জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যায়। দেশ স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্তিলাভ করে। রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় ফ্যাসিস্ট সরকারের গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মী মুক্তিলাভ করেন। রাষ্ট্রপতির আদেশে অনেককে তাৎক্ষণিক মুক্তি দেওয়া হয়। দেশবাসী আশা করেছিল, জুলুম-নির্যাতনের শিকার এটিএম আজহারুল ইসলামও মুক্তিলাভ করবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার ৬ মাস ৮ দিন অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।’’  

প্রেস বিফ্রিংয়ে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, মহানগরী সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম ফারাজি, মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসাইন মিলন, বটিয়াঘাটা উপজেলা আমীর মাওলানা শেখ মো আবু ইউসুফসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান স্বাগত বক্তৃতায় বলেন, ‘‘২০১২ সালে এটিএম আজহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর সাজানো মামলা ও পাতানো বিচারের মাধ্যমে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।’’ 

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ জানান, শহীদ পার্কের বিশাল সমাবেশে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা থেকে মিছিল আসবে। সেখানে ৩০-৪০ হাজার মানুষের সমাগম হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এই সমাবেশে সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। মহানগরী ও জেলায় মাইকিং করা হয়েছে। লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। সমাবেশ শেষে মিছিল নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলো, ফেরিঘাট মোড়, পাওয়ার হাউজ মোড় হয়ে মীর মুগ্ধ মোড়ে গিয়ে শেষ হবে। 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম র সহক র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বাবাকে ‘হত্যার’ পর ছেলের মৃত্যু

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় বাবাকে হত্যার পর এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে যুবক তার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এর কিছুক্ষণ পর অভিযুক্তের মরদেহ উদ্ধার হয়।

নিহত ব্যক্তির নাম মকবুল হোসেন মোল্লা। তিনি উপজেলার চেরাগআলী বেপারী কান্দি এলাকার বাসিন্দা। মারা যাওয়া যুবকের নাম রুবেল মোল্লা।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চেরাগআলী বেপারী কান্দি এলাকার কৃষক মকবুল হোসেন মোল্লার প্রথম স্ত্রী হাসিনা বেগম ২৯ বছর আগে তিন সন্তান রেখে মারা যান। এরপর মকবুল বিয়ে করেন সেলিনা বেগমকে। সেই ঘরে জন্ম নেয় চার সন্তান। মকবুল আগের ঘরের একমাত্র ছেলে সন্তান রুবেল মোল্লা বড় হওয়ার পর তাকে সাবলম্বী করতে পাঠিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়।

আরো পড়ুন:

মাদারীপুরে শ্রমিক দল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার

১৪ বছর প্রবাস জীবন শেষে দেড় বছর আগে বাড়ি ফেরেন তিনি। এরপর দুই স্ত্রীর সন্তানদের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য, মকবুল বাড়ির পাশেই রুবেল মোল্লার জন্য তৈরি করে দেন আলাদা বাড়ি। এছাড়াও বিয়ের জন্য দেখা শুরু করেন পাত্রী। 

বছর খানেক আগে নতুন বাড়ির আঙ্গিনায় কিছু আম ও পেয়ারা ফলের গাছ লাগিয়ে দেন মকবুল। গতকাল রবিবার (২৩ মার্চ) কোনো কারণ ছাড়াই গাছগুলো কেটে ফেলেন ছেলে। বিষয়টি নিয়ে সন্ধ্যায় মকবুল ও তার ছেলে রুবেল মোল্লার কথা কাটাকাটি হয়। এরই একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে রুবেল মোল্লা কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন বাবা মকবুলকে। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে মকবুলকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক মকবুলকে মৃত ঘোষণা করেন। 

ওই ঘটনার পর রুবেল মোল্লাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় মাঠের মধ্যে। পুলিশের ধারণা, ঘটনা ঘটিয়ে পালানোর সময় মাটিতে পড়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান রুবেল মোল্লা। পুলিশ দুইটি মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, “চিৎকার চেচামেচির খবর পেয়ে দৌঁড়ে এসে দেখি মকবুল মাটিতে পড়ে আছেন। তার শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেন, তিনি মারা গেছেন। তার ছেলে রুবেল মোল্লাকে একটি মাঠের পাশে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।”

মকবুলের ভাই আনোয়ার মোল্লা বলেন, “রুবেলের মা মারা যাওয়ার পর আমার ভাই মকবুল আরেকটি বিয়ে করেন। সৎ মা ও বাবা দুইজনই সন্তানকে ভালোবাসতেন। ছেলের সঙ্গে বাবার মধুর সম্পর্ক ছিল। ছেলে বাবাকে হত্যা করবে এমনটি কখনো কল্পনা করতে পারিনি আমরা।”

নড়িয়া থানার ওসি আসলাম উদ্দিন মোল্লা বলেন, “মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে  ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন রাষ্ট্রপতি
  • পরিবারের ইচ্ছায় ঢাকায় তামিমকে স্থানান্তর
  • মা হলেন আথিয়া, নানা সুনীল শেঠি
  • তামিম এখন কেমন আছেন
  • ‘আমার ভাই যেন সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারে’, তামিমকে নিয়ে সাকিব
  • হাসপাতালে তামিম, মোহামেডানের জয় ছাপিয়ে প্রশ্ন, খেলা বন্ধ হলো না ক
  • ব্যক্তিগত ছবি ফাঁসের হুমকি, ভীত-সন্ত্রস্ত ইরানি এই অভিনেত্রী
  • ব্যক্তিগত ছবি ফাঁসের হুমকি, ভীত অভিনেত্রী
  • জ্ঞান ফিরেছে তামিমের, কথাও বলছেন
  • বাবাকে ‘হত্যার’ পর ছেলের মৃত্যু