ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের আইনের আওতায় আনা হবে: উপদেষ্টা
Published: 17th, February 2025 GMT
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ডিসি সম্মেলনের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, “ডিসিরা অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন জায়গায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন-এদের ব্যাপারে জেলায় জেলায় মুক্তিযোদ্ধারা খুবই সোচ্চার। এদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। এটাতে তারা সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা চান।”
আরো পড়ুন:
মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে আগুন: পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে
লাঞ্ছিত মুক্তিযোদ্ধার ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা
“আমরা বলেছি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) পুনর্গঠন করা হয়েছে। জামুকার যে আইন ছিল সেটাতে সংশোধনী আনা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞার নিরিখে এই সংশোধনী আসছে। সংশোধনী আসার পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদও পুনর্গঠিত হবে।”
অপারেশন জ্যাকপটে অংশ নেওয়া এই বীরপ্রতীক বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পুনর্গঠিত হলে প্রতিটি জেলায় যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আমরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করব। যাদের আমরা শনাক্ত করতে পারব- তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসব।”
আওয়ামী লীগের টানা দেড় দশকের শাসনের অবসান ঘটানো জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আদর্শ ও চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ গঠন প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
তিনি বলেন, “এ সপ্তাহের মধ্যে এটা হয়ে যাবে। এ নিয়ে একটা নীতিমালাও তৈরি করা হচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন-তারা জুলাই শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন, যারা আহত হয়েছেন-তাদেরকে বলা হবে জুলাই যোদ্ধা।”
প্রত্যেক শহীদ পরিবার ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র পাবে। আহতরা পরিচয়পত্রের পাশাপাশি আজীবন ভাতা ও চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।
গুরুতর আহতরা এককালীন ৫ লাখ টাকা পাবেন এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। আর যাদের এক অঙ্গহানি হয়েছে, তারা এককালীন ৩ লাখ টাকা পাবেন এবং ১৫ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা পাবেন।
ঢাকা/এএএম/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুরে-গানে-তালে বৈশাখকে বরণ করল রাবি
বাংলা বছরের প্রথম দিনকে স্বাগত জানাতে বাঙালি মেতে উঠেছে নানা আয়োজনে। বাঙালি জাতিসত্তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার অন্যতম দিনটিকে কেন্দ্র করে সর্বত্রই বইছে উৎসবের আমেজ। জাতি-গোত্র-বর্ণ সব ভেদাভেদ ভুলে সকলে একযোগে দিনটি উদযাপন করেছে।
বৈশাখের আগমনকে নতুন সুরে, গানে, তালে বরণ করে নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় চারুকলা চত্বরে মুক্তমঞ্চে বর্ষবরণের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। পরে বেলা ১০টায় চারুকলা চত্বর থেকে শুরু হওয়া বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
আরো পড়ুন:
নববর্ষে থাকবে রাবি অধ্যাপকের ৩০০ ফুটের স্ক্রলচিত্র প্রদর্শনী
রাবি শিক্ষার্থীদের বিজু উৎসব উদযাপন
শোভাযাত্রায় উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেন।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও নিজ নিজ কর্মসূচির মাধ্যমে বর্ষবরণ উদযাপন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, লোক প্রশাসন বিভাগ, ফলিত গণিত বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগসহ একাধিক বিভাগ নতুন বছরকে বরণ করে নিতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
এবারের আয়োজনে ছিলো নানা ধরনের ব্যানার আর ফেস্টুন। শোভাযাত্রায় ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান, বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরতে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন মোটিফ। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার আয়োজনের ব্যাপ্তি কিছুটা কমেছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা কেউ শখের হাড়ির ভাস্কর্য, আবার কেউ বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে রঙ তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন। কেউ ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে এঁকেছেন নানা চিত্র। মাঠজুড়ে বিরাজ করছে বাঁশের ফালি দিয়ে শখের হাঁড়ি ও পালকি। আবার কেউ কেউ মধ্যপ্রাচ্যের মানবতার বিপর্যয়কে প্রতীকী করে শলাকা দিয়ে মিসাইল বোমা ও ড্রোন বানিয়েছেন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিহা সাঈদ নিশা বলেন, “এটা আমার জীবনের প্রথম বৈশাখ পালন। আগে কখনো এত বড় করে পালন করা হয়নি। সবার সঙ্গে অনেক আনন্দ করলাম, অনেক ভালো লাগলো। বৈশাখের আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক, এই কামনা করছি।”
রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বকুল বলেন, “শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে নতুন বর্ষকে আমরা বরণ করে নিলাম। আমার শিক্ষার্থীরা গত এক সপ্তাহ ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ব্যানার ফেস্টুন তৈরি করেছে। সেসব নিয়ে সবাই উল্লাসে মেতেছে আজ। নববর্ষে এমন আয়োজন করতে সত্যি খুশি লাগছে। এর জন্য আমার শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তারা অনেক পরিশ্রম করেছে।”
বর্ষবরণের কর্মসূচিতে ক্যাম্পাস জুড়ে বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠনের উদ্যোগে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী