গরুর মাংস ৬৫০ টাকা কেজি, ডিমের ডজন ১১৪
Published: 17th, February 2025 GMT
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘‘আসন্ন রমজান মাসে জনসাধারণ যেন সহজেই প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটাতে পারেন সে লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় মাসব্যাপী সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমাণ দুধ, ডিম ও মাংস বিপণন ব্যবস্থা চালু করছে।’’
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘এ কর্মসূচির আওতায় পাস্তুরিত তরল দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ২৫০ টাকা এবং ডিম প্রতি ডজন ১১৪ টাকা দরে বিক্রি করা হবে।’’
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন রমজান মাসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রম এবং বিগত ৬ মাসে মন্ত্রণালয়ের কাজের অগ্রগতি বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘‘প্রথম রমজান থেকে শুরু হয়ে ২৮ রমজান পর্যন্ত দুধ, ডিম ও মাংস বিপণন ব্যবস্থা ঢাকা শহরের ২৫টি স্থানে চালু থাকবে। সুলভ মূল্যে প্রাণিজাত পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে জুলাই বিপ্লবের সময় যেসব স্থানে সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ বেশি ছিল, সেসব স্থানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি)-এর কারণে দেশের খামারিরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। ২০১৯ সালে দেশে প্রথম এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। কিন্তু খুব দ্রুত এই রোগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে এ রোগ খামারিদের বড় দুশ্চিন্তার কারণ। এ রোগের আক্রান্তের হার প্রায় ৩০% এবং আক্রান্ত গবাদি পশু ৫-১০% মারা যায়; যা খামারিদের জন্য খুব উদ্বেগের কারণ। আমদানি করা ভ্যাক্সিনের দাম কোম্পানি ভেদে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত হলেও সরকার এলএসডি ভ্যাকসিন উৎপাদনসহ গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করতে ৫০ টাকার মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে।’’
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ‘সাফওয়ান আখতার সদ্য’ গুলিবিদ্ধ হয়ে শাহাদাৎ বরণ করেন। তার স্মরণে বিসিএস লাইভস্টক একাডেমি, সাভার, ঢাকার মূল গেট ‘শহিদ সাফওয়ান সদ্য’ নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে শহিদ সাফওয়ান সদ্য নামের গেটটি উদ্বোধন করা হবে।’’
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সামুদ্রিক জলসীমায়ও ইলিশ ও অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মৎস্য আহরণের ওপর প্রতি বৎসর ২০ মে হতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সকল প্রকার মৎস্য নৌযান কর্তৃক যে কোনো প্রকার মৎস্য ও চিংড়ি, কাঁকড়া, লবস্টার ইত্যাদি (ক্রাস্টাশিয়ান্স) আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এর ফলে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণ ১২.
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষ যারা বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন এবং দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন, এমনকি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পাশে সোচ্চার ছিলেন, তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সীমিত আকারে ইলিশ মাছ রপ্তানির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সারা বছর পাঠানো না গেলেও অধিক ইলিশ প্রাপ্তির সময় (আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে) প্রবাসীদের জন্য ইলিশ পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় হতে প্রাথমিক অবস্থায় সৌদি আরবে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে মোট ১১ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে। এ বছর আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যা কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর অন্যান্য দেশে পাঠানোর বিষয়ে বিবেচনা করা যেতে পারে।’’
এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জেল হোসেন, অতিরিক্ত সচিব মো. ইমাম উদ্দীন কবীর, অতিরিক্ত সচিব আমেনা বেগম, অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. আবু সুফিয়ান, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. আবদুর রউফসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন য ন য র মৎস য উপদ ষ ট র সময় রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
শুনেছি লাখের কাছাকাছি ‘আওয়ামী সন্ত্রাসী’ ভারতে আশ্রয় নিয়েছে: তথ্য উপদেষ্টা
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, এখনও হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছেন। ভারত খুবই আনফরচুনেটলি হাসিনা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে আশ্রয় দিচ্ছে। আমরা শুনতে পেয়েছি- লাখের কাছাকাছি ‘আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী’ ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মানবাধিকার সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ এর কার্যালয়ে ‘গুম ও খুনের’ শিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় ও মিলনমেলায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাহফুজ আলম বলেন, এখানে আওয়ামী লীগ শুধু বাংলাদেশের জনগণের শত্রু। এ ভিন্ন এদের কোনো পরিচয় নেই। এটা কোনো রাজনৈতিক দল না, এটা একটা মাফিয়া গোষ্ঠী ছিল। এর প্রধান ছিলেন শেখ হাসিনা। যিনি বাবা হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার নামে দেশের জনগণের ওপর ভারতের সহযোগিতায় এ অত্যাচার নিপীড়ন চাপিয়ে দিয়েছিলেন।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, কোনোদিন আর আওয়ামী লীগকে এ দেশে রাজনৈতিকভাবে দাঁড়াতে দেব না, এটা আমাদের অঙ্গীকার। আওয়ামী লীগ আমলে ‘গুমের বিভিন্ন তথ্য’ তুলে ধরে এ সরকারের আমলে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। গুম ঘরের মতো পুরো বাংলাদেশেই আয়নাঘর ছিল। আমরা আসলে দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছি। আমরা আসলেই মুক্ত হয়েছি।
‘গুম’ হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা হাজারের উপরে দাবি করে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, অধিকাংশ ফ্যামিলি কাউকে খুঁজে পায়নি, গুম কমিশন বলেছে। অনেককে গুম করে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকে ভারতের কারাগারে ছিলেন। ওরা এখানেই ছিল, এখান থেকে অনেককে ভারতে পাচার করে দেওয়া হয়েছে।
মাহফুজ আলম বলেন, এমন একটা ব্যবস্থা চালু হয়েছিল, যেটা আসলে একটা যুদ্ধাবস্থার মত। এখানে যারাই রাজনৈতিক বিরোধিতা করেছে তাদের সন্ত্রাসী, জঙ্গি, অগ্নি সন্ত্রাসী, আরও অনেক ট্যাগ দিয়ে গুম করা, তাদের স্বজনদের আতঙ্কগ্রস্ত রাখাটাকে স্বাভাবিক করে তোলা হয়েছিল। এটা এমন ছিল যে ওরা যেহেতু সন্ত্রাসী, ওদেরকে মারাই যায়।
তথ্য উপদেষ্টার দাবি, শেখ হাসিনা পুরো দেশের ওপরেই জঙ্গিবাদ চাপিয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা বলছি না যে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ বা মিলিটেন্সি, চরমপন্থার কোনো বাস্তবতা নেই। বাস্তবতা আছে হয়ত। কিছু বাস্তবতা ছিল বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় বা বিভিন্ন উগ্রপন্থা ছিল এবং হয়ত আছেও। এটাকে মোকাবিলার পথ খুবই স্পেসিফিক এবং তার দায়িত্ব স্পেসিফিক লোকদের। কিন্তু হাসিনা এটা দেশের জনগণের ওপরে চাপিয়ে দিয়েছে, দেশের জনগণকেই সন্ত্রাসী জঙ্গি এবং রাষ্ট্রবিরোধী হিসেবে পোট্রেই করা হয়েছিল।