ঈদে সিনেমা মুক্তির হিড়িক থেকে বেরিয়ে আসা উচিত: নিরব
Published: 17th, February 2025 GMT
প্রতিবছর দুই ঈদকে কেন্দ্র করে সিনেমা মুক্তি দেওয়ার একটা হিড়িক পড়ে; গত কয়েকবছর ধরেই এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে চলচ্চিত্র জগতে। গেল বছর ঈদুল ফিতরে মুক্তি পায় ১২টি সিনেমা। এতো ছবির ভিড়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায় দর্শক। দেশে প্রেক্ষাগৃহ সংকটের মধ্যে একসঙ্গে এত বেশি সিনেমা মুক্তির বিষয়টি ভালো চোখে দেখছেন না চিত্রনায়ক নিরব।
তিনি বলেন, ‘ঈদে যদি ১০০টি সিনেমাও মুক্তি পায় মানুষ কিন্তু সর্বোচ্চ তিনটি সিনেমা দেখে। কিছু পরিচালক ও প্রযোজক আছেন যারা জোর করে ঈদের সময় সিনেমা মুক্তি দিয়ে থাকেন। এতে করে দর্শক দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যান। শেষ পর্যন্ত দুই একটা বাদে সব সিনেমা ক্ষতি হয়। আমার মনে হয়, এই জায়গা সবার বেরিয়ে আসা উচিৎ। তাতে সবারই ভালো হবে।’
সম্প্রতি নতুন সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন নিরব। ‘গোলাপ’ নামের সিনেমাটি বানাবেন সামসুল হুদা। এ সিনেমায় প্রথমবার নিরবের সঙ্গে জুটি হতে যাচ্ছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি।
পরীমণির সঙ্গে প্রথম কাজের বিষয়ে সমকালকে নিরব বলেন, ‘পরীমণির সঙ্গে এটা আমার প্রথম কাজ। সিনেমার জন্য আমার ছবি প্রকাশ হওয়ার পর দেখলাম দর্শক আমাদের সাদরে গ্রহণ করছেন। পরীমণি ওয়ের সিরিজসহ যে কয়েকটি কাজ দেখেছি আমার কাছে দারুণ লেগেছে। আমার মনে হয়, এ সিনেমায় ডানা ও গোলাপ চরিত্রের যে রসায়ন সেটা দর্শক পছন্দ করবে।’
এর আগে বেশ কয়েকটি সিনেমায় অ্যাকশন হিরোর অবতারে পাওয়া গেছে নীরবকে। তবে গোলাপ সিনেমায় অ্যাকশন, রোমান্স ও থ্রিলার মিলে পর্দায় হাজির হবেন তিনি।
নিরব জানান, “এর আগে অ্যাকশনধর্মী সিনেমা করেছি। আমার সর্বশেষ ‘ক্যাসিনো’ সিনেমায় অ্যাকশন-থ্রিলার ছিল। এর আগের সিনেমা ‘আব্বাস’ ছিল পুরান ঢাকার একটা দারুণ গল্প। কিছুটা সেই জনরা থেকেই ‘গোলাপ’ নির্মাণ হচ্ছে। বলা যায়, ‘গোলাপ’ সিনেমাটি রাজনৈতিকধর্মী সিনেমা সঙ্গে থ্রিলার বিষয়টিও আছে।”
নিরবের কথায়, ‘ফুলের নামের হলেও এটা একাটা চরিত্রের নাম। সাধারণ একটা ছেলে যার নাম গোলাম মিয়া। তার চরিত্রের কারণেই সিনেমার নাম গোলাম। তবে এখানে ফুলের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।