ভারতীয় ক্রিকেটের দুই ভাই হার্দিক পান্ডিয়া ও ক্রুনাল পান্ডিয়া আইপিএলে পা রাখার আগে ছিলেন চরম অর্থকষ্টে। মুম্বাই ইন্ডিয়ানস যখন তাদের দলে ভেড়ায়, দুজনে দেখতে ছিলেন লিকলিকে ও রোগা-পাতলা। ওই সময় টাকার অভাবে টানা তিন বছর তারা ম্যাগি নুডলস খেয়ে কাটিয়েছেন।

হার্দিক ও ক্রুনাল সম্পর্কে কথাগুলো বলেছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের মালিক নীতা আম্বানি। ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের খবরে বলা হয়, সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে এক অনুষ্ঠানে নীতা কীভাবে তরুণ ও আনকোরা খেলোয়াড়দের তাঁর দলে সুযোগ করে দিয়েছেন, সেই গল্প করতে গিয়ে হার্দিক ও ক্রুনালের কথা বলেন।

গুজরাট থেকে উঠে আসা হার্দিক ও ক্রুনাল ২০১৫ সালে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের হয়ে প্রথমবার আইপিএল খেলতে নামেন। পরবর্তী সময়ে ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলেও জায়গা করে নেন দুজনে। ক্রুনাল এই মুহূর্তে জাতীয় দলের আশপাশে না থাকলেও আইপিএলে খেলছেন নিয়মিত, আর হার্দিক মুম্বাইকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ভারতের সাদা বল ক্রিকেটে প্রধান খেলোয়াড়দের একজন।

মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের মালিক নীতি কীভাবে দল তৈরি করা হয়, সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে বোস্টনের অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আইপিএলে আমাদের নির্দিষ্ট একটি বাজেটের মধ্যে দল বানাতে হয়। যে কারণে আমাদের প্রতিভাবান খেলোয়াড় পাওয়া নতুন নতুন উপায় বের করতে হয়। আমার মনে পড়ে, প্রতিভাবান খেলোয়াড় খুঁজে বের করতে আমি রঞ্জি ট্রফির সব ম্যাচ দেখতে যেতাম। আমার দলের স্কাউটরা ঘরোয়া ক্রিকেট দেখতে যেত। একদিন আমাদের স্কাউটরা ক্যাম্পে দুটো রোগা-পাতলা, লিকলিকে শরীরের ছেলে নিয়ে এল।’

ওই দুই ছেলে ছিল দুই ভাই হার্দিক ও ক্রুনাল। দুজনের ওই সময়ের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে নীতা আম্বানি বলেন, ‘আমি তাদের সঙ্গে কথা বললাম। তারা বলল তিন বছর ধরে ম্যাগি নুডলস ছাড়া কিছুই খায়নি। তাদের টাকা ছিল না। কিন্তু আমি তাদের মধ্যে বড় হওয়ার তাড়না ও ক্ষুধা দেখলাম। সেই দুই ভাই ছিল হার্দিক পান্ডিয়া ও ক্রুনাল পান্ডিয়া। ২০১৫ সালে হার্দিককে আমরা নিলাম থেকে ১০ হাজার ডলারে কিনলাম। আজ সে আমাদের মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের অধিনায়ক।’

২০১৭ সালে টাইমস অব ইন্ডিয়ার ‘অবশেষে স্বপ্নের ঘর তৈরি পান্ডিয়া ভাইদের’ শিরোনামের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, পান্ডিয়াদের পরিবার ২০ বছর আগে সুরাট থেকে বরোদায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। দুই ভাই ক্রিকেটে সাফল্য পেয়ে ফ্ল্যাট কেনার আগে ভাড়া বাসায় থাকত পরিবার। তাদের বাবা হিমাংশু পান্ডিয়া ছিলেন ঋণদাতা এক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

১২ বছর পর নেই ৩ জনের কেউ, অস্ট্রেলিয়ার এবার কী হবে

মিচেল স্টার্ক নেই, প্যাট কামিন্স নেই, নেই জশ হ্যাজলউডও। অস্ট্রেলিয়া আজ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি অভিযান শুরু করছে তিন নিয়মিত ও অভিজ্ঞ পেসারকে ছাড়া। এক যুগ পর এই প্রথম ৫০ ওভারের আইসিসি টুর্নামেন্টের কোনো ম্যাচে তিনজনের একজনও নেই। অথচ গত ১২ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া যে দুবার বিশ্বকাপ জিতেছে, দুটিতেই ছিলেন তাঁরা তিনজন।

স্টার্ক, কামিন্স ও হ্যাজলউডকে না পাওয়াটা ‘বিগ লস’ই মনে হচ্ছে স্টিভেন স্মিথের। তিন অভিজ্ঞ পেসারের বদলে যাঁরা দলে আছেন, তাঁদের সম্মিলিত অভিজ্ঞতা যে ১৯৭৯ সালের পর আইসিসি টুর্নামেন্টে সর্বনিম্ন!

এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তিন পেসারের মধ্যে সবার আগে ছিটকে গেছেন হ্যাজলউড। ডানহাতি এ পেসার নিতম্বের চোটে ভুগছেন। এরপর হাঁটুর চোটে টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যায় কামিন্সেরও। কামিন্স শুধু পেস আক্রমণের একজনই নন, অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কও। তাঁর জায়গায় অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্মিথকে।

হ্যাজলউড, কামিন্স ছিটকে গেলেও স্টার্ক চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে ছিল সপ্তাহ দু-এক আগেও। এমনকি বাঁহাতি এ পেসার কোনো চোটেও পড়েননি। আচমকাই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানিয়ে দেয়, স্টার্ক নিজেকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। যদিও ঠিক কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।

স্টার্ক, কামিন্স ও হ্যাজলউড—এ তিনজনকে ছাড়া অস্ট্রেলিয়া সর্বশেষ ৫০ ওভারের আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলেছে ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। সেবার কামিন্স ও হ্যাজলউড দলেই ছিলেন না। আর দলে থাকলেও লন্ডনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে খেলানো হয়নি স্টার্ককে। অস্ট্রেলিয়া একাদশে খেলিয়েছিল মিচেল জনসন, ক্লিন্ট ম্যাকাই ও জেমস ফকনারদের। তবে ১৭ জুন দ্য ওভালের ম্যাচটির পর ৫০ ওভারের আইসিসি টুর্নামেন্টের সব ম্যাচেই স্টার্ক, কামিন্স ও হ্যাজলউডের মধ্যে অন্তত একজন খেলেছেনই।

এর মধ্যে ২০১৫ ও ২০২৩ বিশ্বকাপ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৫ বিশ্বকাপের ফাইনালে ছিলেন স্টার্ক, হ্যাজলউড। আর ২০২৩ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে ছিলেন তিনজনই, নিয়েছেন ৭ উইকেটও। এ দুই বিশ্বকাপের মাঝে ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে ছিলেন তিনজনই, ২০১৯ বিশ্বকাপে স্টার্ক ও কামিন্স।

তিন অভিজ্ঞ পেসারের জায়গায় অস্ট্রেলিয়ার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে আছেন শন অ্যাবোট, স্পেনসার জনসন ও নাথান এলিস, যাঁরা অভিজ্ঞতায় বেশ পিছিয়ে। স্টার্ক, হ্যাজলউড ও কামিন্সদের সম্মিলিত ৩০৮ ম্যাচে শিকার মোট ৫২৫ উইকেট, অ্যাবোট-জনসন-এলিসদের ৪০ ম্যাচে ৪৭। ১৯৭৯ বিশ্বকাপের পর আর কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ এত কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ছিল না।

ভয়ের জায়গা আছে আরও একটি। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের পর এখন পর্যন্ত স্টার্ক-কামিন্স-হ্যাজলউডকে ছাড়া মোট ২৮টি ওয়ানডে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া, জিততে পেরেছে মাত্র ১০টি। সব মিলিয়ে তিন অভিজ্ঞ পেসারের না থাকাটা অস্ট্রেলিয়ার জন্য বড় ক্ষতি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্মিথের কথায়ও যা ফুটে উঠেছে, ‘তাদের না থাকা অবশ্যই বড় ক্ষতি। নিঃসন্দেহে তারা বিশ্বমানের পারফরমার। দলের জন্য অনেক বছর ধরে অবদান রেখে এসেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তারা এখন সঙ্গে নেই। আমাদের যা আছে তার দিকেই মনোযোগ দিতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১২ বছর পর নেই ৩ জনের কেউ, অস্ট্রেলিয়ার এবার কী হবে
  • ক্রসফায়ারের নামে সাজানো হত্যাকাণ্ড ছিল নিষ্ঠুরতম রাষ্ট্রীয় মিথ্যাচার: জহির উদ্দিন স্বপন