প্লাস্টিক দূষণ রোধে মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
Published: 17th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
প্লাস্টিক বর্জ্য কমাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্লাস্টিকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে, তখন অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও এই উদ্যোগ নিতে পারে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আরও দায়িত্বশীল হয়ে ওঠে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্লাস্টিকমুক্ত জিরো-ওয়েস্ট ক্যাম্পাস: গ্রিন প্লেজ’ শীর্ষক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, প্লাস্টিক দূষণ এখন মানবদেহেও প্রবেশ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, কিডনি, লিভার এমনকি মস্তিষ্কেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। মস্তিষ্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যা গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, দেশে প্রতিদিন দুই কোটি প্লাস্টিকের ব্যাগ উৎপাদিত হয়। নদীগুলোর তলদেশ প্লাস্টিক বর্জ্যে ঢাকা পড়ছে। বুড়িগঙ্গা নদীর তলদেশে পলিথিনের পুরু স্তর জমে গেছে, যা ড্রেজিংকেও ব্যয়বহুল করে তুলছে। প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রভাব শুধু নদীতে নয়, কৃষিক্ষেত্রেও পড়ছে। জমি প্রস্তুতের সময় কৃষকরা মাটির নিচে প্লাস্টিকের ব্যাগ খুঁজে পাচ্ছেন, যা অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফল।
তিনি নাগরিকদের প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা প্লাস্টিক ব্যাগ ছাড়াই চলতে পারতেন, আমরা কেন পারব না? কেনাকাটায় নিজের ব্যাগ নিয়ে যান। বাজারে প্রচুর পাটের ব্যাগ পাওয়া যায়, এগুলোই ব্যবহার করুন।
পুনর্ব্যবহারযোগ্যতার গুরুত্ব স্বীকার করে তিনি বলেন, পুনর্ব্যবহারও চূড়ান্ত সমাধান নয়। উন্নত দেশগুলোর উন্নত রিসাইক্লিং ব্যবস্থা থাকলেও তারা বিকল্প ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছে, কারণ রিসাইক্লিং জটিল এবং ব্যয়বহুল। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত নতুন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি বন্ধ করা।
বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, অনেকে প্রশ্ন করেন, পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ হলেও তা বাজারে কেন? বরং নিজেদের প্রশ্ন করুন, আপনি কেন এখনো এটি ব্যবহার করছেন?
অনুষ্ঠানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর চেয়ারম্যান তামারা আবেদ, উপাচার্য ড.
অনুষ্ঠানে ব্রাক ও ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। পরে উপদেষ্টা প্লাস্টিকের বিকল্প উপকরণ প্রদর্শনীর স্টল পরিদর্শন করেন এবং বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন।
এম জি
উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: প ল স ট ক বর জ য ব যবহ র উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
৫ দফা দাবিতে রংপুরের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, সড়ক অবরোধ
এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া চিকিৎসকের স্বীকৃতি দেওয়া বন্ধসহ ৫ দফা দাবিতে রংপুরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছেন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। একই দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরাও কর্মবিরতিতে আছেন।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহীদ মুখতার ইলাহী চত্বরে (মেডিকেল মোড়) সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ কর্মসূচিতে রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ, প্রাইম মেডিকেল কলেজ, রংপুর আর্মি মেডিকেল কলেজের কয়েক শ শিক্ষার্থী অংশ নেন। এক ঘণ্টার সড়ক অবরোধ শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা রংপুর মেডিকেল কলেজের ভেতর পথসভা করেন। পরে মহাসড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, একই দাবিতে ১৭, ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি এই তিন দিন ধারাবাহিক বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছেন তাঁরা। ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করছেন। এসব দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আবু রায়হান প্রথম আলোকে জানান, ৫ দফা দাবিতে তাঁরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছেন। তাঁরা আন্দোলন করছেন যাতে মানুষের সঙ্গে স্বাস্থ্য নিয়ে প্রতারণা করা না হয়। দেড় বছর বা ৬ মাসের একটি প্রশিক্ষণ নিয়ে কেউ চিকিৎসক লিখে মানুষের সঙ্গে যাতে প্রতারণা করতে না পারে।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো,
১. এমবিবিএস/বিডিএস ব্যতীত কেউ চিকিৎসক লিখতে পারবে না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে হাসিনা সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে। এই ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
২. উন্নত বিশ্বের চিকিৎসাব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস বা বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি লিস্টের বাইরের ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরের কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।
৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে সব শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে আগের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতিবছর ৪-৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। চিকিৎসকদের বিসিএসে বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।
৪. সব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করতে হবে। ইতিমধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।