সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়ম লঙ্ঘন করে প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলোকে ঋণ দিয়ে এখন চরম বিপদে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। ঋণ বিতরণে মানা হয়নি একক ঋণ গ্রহীতার সীমাও। বিশেষ করে সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো, চট্টগ্রাম ভিত্তিক ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলম গ্রুপ ও অপর কোম্পানি এননটেক্সের প্রতি বেশি উদারতা দেখিয়ে এখন পথে বসেছে জনতা ব্যাংক। এই তিন কোম্পানিকেই দিয়েছিল ৩৫ হাজার কোটি টাকা। আর এই তিন গ্রুপসহ ২৩টি গ্রুপ ও প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। আর বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ রয়েছে ৬০ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা, যেটা ব্যাংকটির মোট বিতরণকৃত ঋণের ৬৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র বলছে, জনতা ব্যাংকের ঋণের অধিকাংশ টাকা খেলাপিতে পরিণত হলেও এগুলো উদ্ধারে কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করছে না ব্যাংকটি। খেলাপি ঋণ রিকভারি না করে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকা ধার চেয়েছে জনতা ব্যাংক। কিন্তু তাদেরকে টাকা ধার দিতে রাজি হয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে একটি বৈঠক করেছে জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে জনতা ব্যাংকের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। ওই সময় চলমান সংকট মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকা ধার চেয়েছিল জনতা ব্যাংক। কিন্তু তাদের প্রস্তাবে গভর্নর ড.

আহসান এইচ মনসুর রাজি হয়নি।

সূত্রটি জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোনো টাকা দেয়া হবে না। গ্রাহকদেরকে দেয়া টাকা উদ্ধারে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। লোনের বিপরীতে যে জামানত রাখা আছে প্রয়োজনে সেগুলো বিক্রি করে টাকা আদায় করুন।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ে আমরা তাদেরকে পরামর্শ দিচ্ছি। কিন্তু তারা কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে জনতা ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) মুজিবুর রহমানের নম্বরে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকোকে সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক। বহুল আলোচিত বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ২০ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।

এরপর জনতা ব্যাংক থেকে দ্বিতীয় শীর্ষ ঋণ গ্রহীতা হল চট্টগ্রামভিত্তিক আলোচিত ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলম। গ্রুপটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে জনতা ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ৭ হাজার ৮৩২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ১ হাজার ২১৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

ব্যাংক খাতের ঋণ কেলেঙ্কারির আরেক আলোচিত নাম হল এননটেক্স। এই গ্রুপও জনতা ব্যাংক থেকে ৭ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এই ঋণের প্রায় শতভাগই খেলাপির খাতায় চলে গেছে। এননটেক্সে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭ হাজার ৭০৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

এর মধ্যে আবার আলোচিত এননটেক্সকে দেয়া ঋণের টাকা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে দুদকও। এমনকি দুদকের পক্ষ থেকে রেকর্ড সংগ্রহের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি চিঠিও দেয়া হয়েছে। দুদকের একটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অভিযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে দুদক বলেছে, ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে এননটেক্স গ্রুপভুক্ত ২২টি প্রতিষ্ঠানকে প্রদত্ত ঋণের অর্থ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ। উপরিউক্ত অভিযোগ সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে নি¤েœ বর্ণিত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, জনতা ব্যাংক থেকে রিম্যাক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের নেওয়া ১ হাজার ৭৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা ফান্ডেড ঋণের পুরোটাই খেলাপি হয়ে পড়েছে। আর ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ ২ হাজার ৮৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ঋণের মধ্যে ১ হাজার ৮০৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকাই খেলাপি। রতনপুর গ্রুপে জনতার ঋণ ১ হাজার ২২৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা, যার পুরোটাই খেলাপি হয়ে পড়েছে।

অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রাঙ্কা গ্রুপে ১ হাজার ৭১৯ কোটি ৯ লাখ টাকা, ওরিয়ন গ্রুপে ২ হাজার ৮৫৪ কোটি ৪২ লাখ, থার্মেক্স গ্রুপে ১ হাজার ৯৪৪ কোটি ৭৭ লাখ, সিকদার গ্রুপে ৮২৯ কোটি, জনকণ্ঠ গ্রুপে ৭৮৭ কোটি ৪৮ লাখ, মেঘনা সিমেন্টে ৬৭৪ কোটি ৭২ লাখ, লেক্সো লিমিটেডে ৬৫৫ কোটি ৪৭ লাখ, হাবিব হোটেল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডে ৬৩৫ কোটি ৪৫ লাখ, আনন্দ শিপইয়ার্ডে ৬১৪ কোটি ৫৪ লাখ এবং বিআর স্পিনিং লিমিটেডে ৫৭৪ কোটি ২২ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক। এ ছাড়া চৌধুরী গ্রুপকে ব্যাংকটির দেওয়া ৬৫৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকার ঋণের মধ্যে ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকাই খেলাপি হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জনতা ব্যাংকের কাছে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্টের (বিএডিসি) ঋণ ৪ হাজার ৩৭৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ঋণ ৩ হাজার ৬২৩ কোটি ৭৫৭ লাখ টাকা। পাশাপাশি বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ঋণ ২ হাজার ৯২১ কোটি ৩ লাখ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সুগার অ্যান্ড ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের ঋণ ১ হাজার ৬৯১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

এএ

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: ঋণ র প আল চ ত ঋণ দ য়

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কার ও নির্বাচন দুটোই হতে হবে

এখন কোনো কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন চায়, সংস্কার চায় না। তাদের মনে রাখা উচিত, জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেবল ক্ষমতার পালাবদলের জন্য হয়নি। এই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা হলো সংস্কার এবং নির্বাচন দুটিই হতে হবে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো কেবল ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে নিজেদের স্বার্থে রাজনীতি করেছে। জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। এ ধারার আমূল পরিবর্তন করতে হবে।

রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে গতকাল শনিবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতি’ শীর্ষক একটি অধিবেশনে এসব কথা বলেন বক্তারা। গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহানের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইজিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. মির্জা এম হাসান।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বর্তমান সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর কাজের জন্য জবাবদিহির আওতায় আনার কোনো ব্যবস্থা নেই। এতে প্রধানমন্ত্রীর স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠার যথেষ্ট সুযোগ আছে। সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহি নিশ্চিতের প্রবিধান সংযুক্ত করা হবে।

আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধান সংস্কারের ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করে তোলার ওপর। বিগত সরকারের সময়ে দেশের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চরমভাবে দুর্বল করে ফেলা হয়, যা প্রধানমন্ত্রীকে কর্তৃত্ববাদী হওয়ার পথ প্রশস্ত করে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ধারার পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য সংবিধানে বিশেষ অনুচ্ছেদ যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

আলী রীয়াজ আরও বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থাকে কেউ কেউ ‘বিপ্লব’ বলেন। আদতে এটা বিপ্লব ছিল না। বিপ্লব হলে বিভিন্ন কমিশন গঠন করার দরকার হতো না। তিনি উল্লেখ করেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাব দিয়েছে। এখন রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করবে তারা কতটুকু গ্রহণ করবে। 

সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, অতীতের ক্ষমতার চর্চা ছিল অর্থের ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য। আদর্শের চর্চার প্রভাব খুব একটা ছিল না। জাতীয় সংসদের প্রধান থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পর্যন্ত সবাইকে এ ধারায় চলতে দেখা গেছে। আওয়ামী লীগ চলে গেলেও সেই টাকার প্রভাবের শূন্যতা পূরণ হয়ে যাচ্ছে। 
তিনি বলেন, দাবি আদায় করতে লোক জড়ো করা এবং সহিংসতা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা খুঁজতে হবে।

অধ্যাপক রওনক জাহান বলেন, সবাই সংস্কার চান। তবে কী সংস্কার চান, তা সুস্পষ্ট করা উচিত। সংস্কার কেবল আইনের পরিবর্তনের মধ্যে আটকে থাকলে হবে না। আইন অনেক আছে। সমস্যা রাজনৈতিক চর্চার। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র ব্যবস্থায় অনেকগুলো সংস্কারের জন্য কাজ করছে। এরই মধ্যে অনেক সংস্কার প্রস্তাবও এসেছে। তবে সংস্কার প্রস্তাবের অনেকগুলো আইন পরিবর্তনের জন্য। সত্যিকার অর্থে, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাইলে জনগণকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূল ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক চর্চার পরিবর্তনের জন্য অন্তর্বর্তী নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সরকার ব্যবস্থাকেও রাজনীতিকীকরণ করা হয়েছিল। রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে ক্ষমতা ধরে রাখার চর্চাও দেখা গেছে। প্রতিবছর সম্পদের হিসাব প্রকাশ করবে– ‘দিন বদলের’ কথা বলে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সে প্রতিশ্রুতি রাখেনি। কীভাবে মানুষ এটা বিশ্বাস করবে, রাজনৈতিক দলগুলো যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসছে, সেই প্রতিশ্রুতি রাখবে। 

সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, বিগত সরকারের সময়ও অনেক কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ওই কথা শোনার বা শুনে তা আমলে নিয়ে কাজ করা হয়নি। সংবিধান সংশোধনের কথা হচ্ছে। এটা করতে হলে তা কীভাবে যুগোপযোগী হয়, তা নিয়ে ভাবতে হবে।

৫৩ বছরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হয়নি এবং এ কারণে নব্বই বা চব্বিশে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে বলে মত দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার গভীরে বৈষম্য রয়ে গেছে। মানুষ শান্তি চায়, ভয়ের পরিবেশে বাঁচতে চায় না। তারা চায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের কথা শোনা হোক। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে জবাবদিহি করার ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জনগণের মতকে প্রতিষ্ঠা করার পথে এগোনো সহজ হতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের অধ্যাপক ড. আসিফ শাহান বলেন, অর্গানাইজেশন এবং ইনস্টিটিউশনের মধ্যকার পার্থক্য করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে কঠোরভাবে। 

জাতীয় নাগরিক কমিটির সহআহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, অতীতের সরকার ব্যবস্থায় মানুষের কথা শোনার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল, তারা সে প্রতিশ্রুতি রাখেনি।

তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে সুষ্ঠু নির্বাচনই ছিল মানুষের প্রধান আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর মানুষের আকাঙ্ক্ষা কেবল নির্বাচনে আটকে নেই। অতীতের সরকার ব্যবস্থাগুলোতে দেখা গেছে, সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ মানুষের ভোট নিয়ে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন পেয়েছিল এবং তারা সংবিধান বদলের অধিকার পেয়ে ইচ্ছামতো পরিবর্তন করেছে। নতুন বাংলাদেশের মানুষ এর বদল চান। কেবল ক্ষমতার পালাবদল করে দিতে এ গণঅভ্যুত্থান হয়নি।

বিএনপিসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবি বিষয়ে সারোয়ার তুষার বলেন, তারা হয়তো সংস্কার চায় না। তিনি উল্লেখ করেন, জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এখন স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নামে আছে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা। এর বদল করতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, নিজেদের পক্ষে কথা বলার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থায় প্রতিনিধি পাঠানোর পর যদি জনগণ দেখেন তাদের পক্ষে ওই প্রতিনিধি কথা বলছেন না, তাহলে তাকে ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থাও থাকা উচিত। রাজনৈতিকগুলো গণতন্ত্রের কথা বললেও নিজেরা গণতন্ত্রের চর্চা করে না। মুখে জনগণই সব ক্ষমতা উৎস– এমনটা বললেও সংসদে নিজ দলের বিরুদ্ধেই কথা বলতে পারে না। 


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ