শিবির সন্দেহ ও বিভাগের শিক্ষকদের অন্তঃকোন্দলে মাস্টার্সের থিসিস জালিয়াতির অভিযোগে এনে ছাত্রত্ব বাতিল করা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ফলিত গণিত বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলামের। ফলে প্রায় ১০ বছরেও প্রকাশ করা হয়নি রফিকুলের মাস্টার্সের ফলাফল।

গত বছর ৫ নভেম্বর শিবির সন্দেহে রফিকুল ইসলাম মাস্টার্সের সনদ না পাওয়া নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড.

মো. ফজলুল হককে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ছাত্রত্ব বাতিল বিষয়ে গঠিত রিভিউ কমিটির সদস্যদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রফিকুল ইসলামের ছাত্রত্ব পুনর্বহাল ও তার পরীক্ষার অপ্রকাশিত ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৬তম সিন্ডিকেট সভায় এ ফলাফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদার।

এদিকে, এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় বিভাগের তিন শিক্ষক ড. আব্দুল হক, ড. আলী আকবর ও ড. আশরাফুজ্জামান খানকে আগামী ৫ বছর পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়েছে।

ছাত্রত্ব ফিরে পেয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন,“ শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, আলী রায়হান, শাকিল, আহনাফদের রক্তের বিনিময়ে দীর্ঘ ১০ বছর ৬ মাস ধরে বয়ে বেড়ানো জুলুমের পাহাড় আজ বুক থেকে নেমে গেল, আলহামদুলিল্লাহ। এত দীর্ঘ সময় পর আমার ছাত্রত্ব ফিরে পাওয়ায় রাবি প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”

তিনি বলেন, “যদিও আমার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো কখনোই ফিরে আসবে না, তবুও প্রিয় ক্যাম্পাস থেকে মাস্টার্সের ফলাফল ফিরে পাওয়াটা আমার জন্য পরম আনন্দের। এ আনন্দের গভীরতা ভাষায় প্রকাশ করা আমার পক্ষে সত্যিই অসম্ভব। শিক্ষকদের দ্বন্দে আর কোন ছাত্রের জীবনে এমন অমানিশার অন্ধকার আর নেমে না আসুক, এ আমার প্রত্যশা।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল হক বলেন, “সংশ্লিষ্ট সবার  মৌখিক ও লিখিত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এবং সব তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে রিভিউ তদন্তের কাজ শেষ করা হয়। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দিন খান বলেন, “রফিকুল বিভাগের ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট ছিলেন। শিক্ষক নিয়োগে যেন আবেদন করতে না পারেন, সেজন্য থিসিস জালিয়াতির অভিযোগ এনে তার ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়। যার কোন সত্যতাই ছিলো না।”

তিনি বলেন, “এ নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৬তম সিন্ডিকেট সভায় নিয়মঅনুযায়ী রফিকুল ইসলামের মাস্টার্সের ফলাফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।”

মাস্টার্সের থিসিস জালিয়াতির অভিযোগে এনে ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬১তম সিন্ডিকেটের ১৩৭ নং সিদ্ধান্তে মাস্টার্সের রেজিষ্ট্রেশন বাতিলের মাধ্যমে রফিকুলের ছাত্রত্ব বাতিল করে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম র ফল ফল

এছাড়াও পড়ুন:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ফ্রন্টের নতুন কমিটি

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১৯ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইভান তাহসীব ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন একই শিক্ষাবর্ষের শামসুল আলম মারুফ।

বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনে ছাত্র ফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১৩তম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতি ইভান তাহসীব বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ ও সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম আইন বিভাগের শিক্ষার্থী।

কমিটিতে সহসভাপতি হয়েছেন খাদিজা তুল কুবরা, সাংগঠনিক সম্পাদক আপেল আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক তৌকির আহমেদ, অর্থ সম্পাদক সিদ্ধার্থ কুমার রায়, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খিজির আল সিফাত, স্কুলবিষয়ক সম্পাদক পল্লব কুমার, সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক জুনায়েদুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক সাজু আহমেদ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক দীপংকর রায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আহাম্মদ নাঈম। কার্যকরী সদস্য ফারিহা তাসনিম, মিশকাতুল জামান, তাজুল ইসলাম, সৌরভ আহমেদ, তাজ‌ওয়ার ইসলাম, নাজিব মাহমুদ ও রিয়াদ সরকার।

কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ।

কাউন্সিলে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির স্কুলবিষয়ক সম্পাদক দীপা মজুমদার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও বাসদের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ