ফরিদপুরের সালথা প্রেসক্লাবে তালা দেওয়া উপজেলা শ্রমিক লীগের ‘বিতর্কিত’ সেই নেতা মাহমুদ আশরাফ টুটু চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়েছে। 

রোববার রাতে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন সালথা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম নাহিদ। রাতেই এহাজারটি মামলা হিসেবে রুজু করে নেওয়া হয়। মামলায় টুটু চৌধুরী ছাড়াও এফএম শাহজাহান নামে এক ‘ভুয়া’ সাংবাদিকসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রধান আসামি সালথা উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আশরাফ টুটু চৌধুরী সালথা প্রেসক্লাবের সদস্য থাকা অবস্থায় বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিকদের বিভিন্ন সময় মারধর ও হুমকি দিয়ে আসছিল। এমনকি সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি সেলিম মোল্যার ওপরও তিনি হামলা করেন। এছাড়া টুটু চৌধুরী ও শাহজাহানসহ অন্যান্য আসামিরা সালথা প্রেসক্লাবের সদস্যদের পেশাগত কাজে বাধা সৃষ্টি এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে চাঁদাবাজি করায় ২০২৪ সালের ২৪ অক্টোবর টুটু চৌধুরীর সদস্য পদ স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে তাকে বহিষ্কারর করা হয়।

এরই ধারবাহিকতায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় টুটু চৌধুরী ও তার সহযোগিরা দেশীয় অস্ত্র রামদা, ছ্যান, লোহার রড ও হাতুড়ি নিয়ে বেআইনিভাবে সালথা প্রেসক্লাবে প্রবেশ করে সহসভাপতি মনির হোসেন, সাইফুল ইসলাম, সদস্য আবু নাসের হুসাইন, দপ্তর সম্পাদক জাকির হোসেন ও সদস্য আজিজ হোসেনকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে প্রেসক্লাব থেকে জোর করে বের করে দেয়। এ সময় প্রেসক্লাবের আসবাবপত্র ও কম্পিউটার ভাঙচুর করে তারা। পরে প্রেসক্লাবের মেইন গেটে তালা মেরে দিয়ে চলে যায়।

মামলার বাদী সালথা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শ্রমিক লীগ নেতা টুটু চৌধুরীর একটা সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। যে কারণে আমরা অনেক সময় তার ভয়ে মুখ খুলি না। তবে প্রেসক্লাবে তালা দেওয়ার পর আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমরা আইনি সহযোগিতা নিতে মামলা করেছি। প্রেসক্লাব উদ্ধারে আমরা পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।  

মামলার পর থেকে সালথা উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আশরাফ টুটু চৌধুরী পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

আতাউর রহমান বলেন, প্রেসক্লাবে তালা দেওয়ার ঘটনায় শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে একটি মামলা থানায় রুজু করা হয়েছে। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারবো।

এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হন সালথা উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন। এমন অবস্থায় গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন ফন্দি-কৌশল করে উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আশরাফ টুটু চৌধুরী সালথা উপজেলা প্রেসক্লাব নামে নতুন একটি গঠন দাড় করিয়েছেন। ওই প্রেসক্লাবের সভাপতি হয়েছেন টুটু চৌধুরী নিজে এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম। স্থানীয়রা মনে করছেন টুটু চৌধুরী নতুন প্রেসক্লাবের সভাপতি হয়েছেন গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য।
  
অন্যদিকে গত রোববার দুপুরে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. শাহিন মাতুব্বরে ভাতিজা পিয়াল মাতুব্বরকে (২৫) কোদাল দিয়ে কুপিয়ে জখম করে শ্রমিক লীগ নেতা মাহমুদ আশরাফ টুটু চৌধুরীর ভাতিজা মাদকাসক্ত মো. বাহার চৌধুরী। পরে উত্তেজিত জনতা শ্রমিক লীগ নেতা টুটু চৌধুরী বাড়ি ও তার ভাই লুলু চৌধুরীর দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম উপজ ল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ওঠানামার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি মাসেই জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি বিভাগ। এবার তুলনামূলক সাশ্রয়ীমূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিত কর‍তে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন এবং পেট্রোলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। যা ১ এপ্রিল থেকে এ কার্যকর হবে।

সোমবার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

আদেশে বলা হয়, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কমা বা বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দেশে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণের জন্য প্রাইসিং ফর্মুলার আলোকে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের জন্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিতকরণের জন্য বিদ্যমান মূল্য কাঠামো অনুযায়ী ডিজেলের বিক্রয়মূল্য প্রতি লিটার ১০৫ টাকা, কেরোসিন ১০৫, অকটেন ১২৬ টাকা এবং পেট্রোল ১২২ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ