অশ্লীল সিনেমা বন্ধে মান্নার অগ্রণী ভূমিকা ছিল: মিশা সওদাগর
Published: 17th, February 2025 GMT
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক মান্না। অসংখ্য ভক্তকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে চলে যান এক সময়ের এই ঢালিউড কিং। জীবদ্দশায় অসংখ্য সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়ে ‘গণমানুষের প্রিয়নায়ক’ হয়ে উঠেছিলেন মান্না। তার মৃত্যু শোক আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন স্বজন ও কোটি ভক্তরা। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মান্নাকে স্মরণ করছেন তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা।
‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে সিনেমার জগতে যাত্রা শুরু করেছিলেন প্রয়াত চিত্রনায়ক মান্না। একই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে খল অভিনেতা হিসেবে বড় পর্দায় পা রাখেন মিশা সওদাগর। নায়ক মান্নার সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করেছেন বেশ কিছু সিনেমায়। এই নায়কের প্রয়াণ দিবসে মিশা সওদাগর বলেন, “আমার দৃষ্টিতে মান্না মহানায়ক। আর মহানায়ক বলার কারণ এই যে, আমাদের চলচ্চিত্রের অনেকের পক্ষে অনেক কিছু করাই সম্ভব হয়নি, যা মান্নার পক্ষে করা সম্ভব হয়েছে। ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ থেকে মান্না দুই নাম্বার হিরো, দুই নাম্বার হিরো থেকে নিজেকে চলচ্চিত্রের অপরিহার্য নায়কে পরিণত করেছিলেন।”
মৌসুমী-শাবনূরকে এক সিনেমায় কাস্ট করেছিলেন মান্না, যা তার আগে কেউ পারেননি। এ তথ্য উল্লেখ করে মান্না বলেন, “মান্না যখন নিজের প্রযোজনা সংস্থা থেকে সিনেমা নির্মাণ শুরু করেন, প্রথম সিনেমাতেই পরিচালক কাজী হায়াতকে নেন। তা ছাড়া একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সেটি হলো, মৌসুমী আর শাবনূরকে কেউ এক সিনেমায় নিতে পারেননি। কিন্তু সেই কাজটি করে দেখিয়ে ছিলেন নায়ক মান্না। ‘দুই বধূ এক স্বামী’ সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছেন মৌসুমী-শাবনূর। ফলে দুই নায়িকার দর্শকই সিনেমাটি দেখেছেন। সিনেমাটি হিট হয়েছে। চলচ্চিত্র নিয়ে অনেক বেশি চর্চা করতেন তিনি। চলচ্চিত্র নিয়ে মান্না যেই কথাগুলো বলতেন অনেক চিন্তাভাবনা করে বলতেন।”
আরো পড়ুন:
সেই নির্মাতাকে বিয়ে করছেন মেহজাবীন চৌধুরী!
বিরল প্রজাতির সাপ-ব্যাঙের নাম কেন ‘লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও’?
চলচ্চিত্রে পাইরেসি ও অশ্লীলতা বন্ধে মান্নার ভূমিকা উল্লেখ করে মিশা সওদাগর বলেন, “সিনেমা পাইরেসি বন্ধে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করেছে। কোথাও পাইরেসি হচ্ছে এমন খবর শুনে দেয়াল টপকিয়ে জীবন বাজি রেখে সেখানে গিয়ে তা প্রতিহত করেছেন। পরে পাইরেসির সঙ্গে জড়িতদের পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করিয়েছেন। এ ছাড়া অশ্লীল সিনেমা বন্ধে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করে গেছেন। বলতে গেলে, এখন তার সেই যুদ্ধের ফল ভোগ করছে। এটা শতভাগ সত্য যে, তিনি পাইরেসি ও অশ্লীলতা বন্ধে একেবারে শীর্ষে থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। চলচ্চিত্রের যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে মান্না একা দাঁড়িয়ে গেছেন।”
মান্না তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করার পাশাপাশি আমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
মান্না অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো— ‘দাঙ্গা’, ‘লুটতরাজ’, ‘তেজি’, ‘আম্মাজান’, ‘আব্বাজান’, ‘বীর সৈনিক’, ‘শান্ত কেন মাস্তান’, ‘খল নায়ক’, ‘রংবাজ বাদশা’, ‘সুলতান’, ‘ভাইয়া’, ‘টপ সম্রাট’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘ঢাকাইয়া মাস্তান’, ‘মাস্তানের ওপর মাস্তান’ ‘মান্না ভাই’, ‘জুম্মন কসাই’, ‘আমি জেল থেকে বলছি’, ‘কাবুলিওয়ালা’ ইত্যাদি।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ার কাছে রেকর্ড রানও নিরাপদ নয়!
ওয়ানডে ক্রিকেটে তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। কেন তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তারই আরেকটি প্রমাণ মিলল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মঞ্চে। ইংল্যান্ডকে স্রেফ নাকানিচুবানি খাইয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির যাত্রা শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া।
লাহোরে দুই দলই ইতিহাসের পাতায় নিজেদের জড়িয়ে নিয়েছে। ইংল্যান্ড আগে ব্যাটিং করে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রান ৩৫১ জমা করে। এই রানও অস্ট্রেলিয়ার কাছে নিরাপদ নয়। পাল্টা জবাব দিয়ে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতেছে ৫ উইকেটে, ১৫ বল হাতে রেখে।
ইংলিশ ওপেনার বেন ডাকেট চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান করেছিলেন প্রথম ইনিংসে। ১৬৫ রানের ইনিংস খেলেন। তার দেড়শ’র জবাব সেঞ্চুরিতে দিয়েছেন জশ ইংলিস। তাতেই অস্ট্রেলিয়ার বিজয়ের রূপকথা লিখা হয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
সাকিবসহ ১০৪ ক্রিকেটারের দলবদল সম্পন্ন, আগামীকাল করবেন তামিম
পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের কোনো উত্তাপ টের পাচ্ছে না ভারত!
অজি দলে নিয়মিত একাধিক ক্রিকেটার নেই। কামিন্স, স্টার্ক, মার্শ, হ্যাজেলউড, স্টয়নিসকে ছাড়া অস্ট্রেলিয়া দলটি কেমন হবে তা নিয়ে চিন্তায় ছিল সমর্থকরা। কিন্তু স্কোয়াডের গভীরতা যে এতোটা বেশি তা কেউ ভাবতে পেরেছিল?
তার ওপরে ট্র্যাভিস হেড (৬), অধিনায়ক স্মিথ (৫) ও মার্নাস লাবুসানে (৪৭) ফেরার পর সাড়ে তিনশর বেশি রান তাড়া করা যাবে এমন ভাবনার লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল ছিল। কিন্তু পাঁচে নামা জশ ইংলিস সব হিসেব পাল্টে দিলেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন অ্যালেক্স ক্যারি। দুজন মিলে পঞ্চম উইকেটে ১১৬ বলে ১৪৬ রানের জুটি গড়েন।
ক্যারি ফিফটি ছুঁয়ে ৬৯ রানে ফিরে গেলে ইংলিস তুলে নেন ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম সেঞ্চুরি। তাতে লিখা হয়ে অনবদ্য এক বিজয়ের গল্প। ৮৬ বলে ৮ চার ও ৬ ছক্কায় ইংলিস তার ইনিংসটি সাজান। এছাড়া ম্যাক্সওয়েল ১৫ বলে ৩২ রান করেন ৪ চার ও ২ ছক্কায়।
এর আগে বেন ডাকেটের একক ব্যাটিং প্রদর্শনীতে রানের পাহাড়ে চড়ে ইংল্যান্ড। ওপেনিংয়ে নেমে ৪৮তম ওভার পর্যন্ত ক্রিজে ছিলেন। প্রায় পৌনে চার ঘণ্টার ইনিংসে ১৭ চার ও ৩ ছক্কা হাঁকিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৬৫ রানের ইনিংস খেলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন জো রুট। ১৫৫ বলে ১৫৮ রান যোগ করেন দুজন। রুট ৭৮ বলে ৬৮ রান করে ফিরে গেলেও ডাকেট তুলে নেন ওয়ানডে ক্রিকেটের তৃতীয় সেঞ্চুরি।
এই দুই ব্যাটসম্যান বাদে বিশের ঘর পেরিয়েছেন কেবল জস বাটলার ও জোফরা আর্চার। বাটলার ২১ বলে ২৩ ও আর্চার ১০ বলে ২১ রান করেন। শেষ দিকে আর্চারের অতি গুরুত্বপূর্ণ রানের সুবাদে ইংল্যান্ডের রান সাড়ে তিনশ পেরিয়ে যায়।
ইনিংসের শুরুতে অ্যালেক্স ক্যারি দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে আলো কেড়ে নেন। বেন ডোয়ার্শুইসের বলে মিড অনে ক্যাচ দিয়েছিলেন। সেখানে ক্যারি ডানদিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে অসাধারণ দক্ষতায় বল তালুবন্দি করেন।
অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ে তেমন ঝাঁজ ছিল না। ডোয়ার্শুইস ৬৬ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন অ্যাডাম জাম্পা ও মার্নাস লাবুসানে।
প্রথমে রেকর্ড রান গড়া। সেই রান তাড়া করে জয়। দুই ইনিংসে দুটি অনবদ্য সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে বলা যায় ওয়ানডে ক্রিকেট দারুণ একটি দিন কাটাল। আর ক্রিকেটপ্রেমীরাও সেটা মনভরে উপভোগ করলো।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল