৪৫ বছর পর ইউনাইটেডের হ্যাটট্রিক হার
Published: 17th, February 2025 GMT
রুবেন আমোরিম যেন হাড়ে-হাড়ে টের পাচ্ছেন, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে কোচিং করানো কতটা কঠিন। ওল্ড ট্রাফোর্ডকে ‘স্বপ্নের গালিচা’ বলা হলেও পর্তুগিজ কোচের জন্য যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠছে দিন দিন। রেড ডেভিলদের সামলাতে রীতিমত হিমশীম খাচ্ছেন স্পোর্টিং সিপিতে দারুণ সফল এই ট্যাকটেশিয়ান। এসবের সঙ্গে ছিল ম্যানুয়েল উগার্তে, কোবি মাইনো, এবং লিসান্দ্রো মার্টিনেজের মত একাদশের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের চোটের কারণে স্কোয়াডের বাইরে থাকা। এবার সেই তালিকায় যোগ দিলেন আমাদ দিয়ালো।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) রাতে চোটগ্রস্ত দল নিয়ে আরও একবার হোঁচট খেলেন আমোরিম। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড হেরে গেছে ১-০ গোলে।
এই মৌসুমে টটেনহ্যামও চোটের কারণে দারুণ ভুগছে। এখনও তাদের মূল একাদশের গুরুত্বপূর্ণ ৫ ফুটবলার চোটের কারণে বাইরে। ম্যাচ জয়ের পর স্পার্স ম্যানেজার অ্যাঞ্জ পোস্তেকোগলু তাই আমোরিমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমার দুনিয়ায় স্বাগতম।”
আরো পড়ুন:
তোমার হলো শুরু, আমার হলো সারা
পুচকে ব্রাইটনের বিপক্ষে উড়ে গেল বিলিয়ন ডলারের চেলসি
টটেনহাম স্টেডিয়ামে ম্যাচের ১৩ মিনিটে করা জেমস ম্যাডিসনের গোলটির সৌজন্যেই এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ইউনাইটেডের বিপক্ষে টানা তৃতীয় জয় পেল টটেনহাম। সুদীর্ঘ ৪৫ বছর পর ইউনাইটেডের বিপক্ষে জয়ের হ্যাটট্রিক পেল উত্তর লন্ডনের ক্লাবটি।
অন্যদিকে এর আগে সবশেষ ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে শীর্ষ লিগে প্রথম ২৫ ম্যাচের ১৩টি হেরেছিল ইউনাইটেড; সেবার অবনমিত হয়েছিল দ্বিতীয় স্তরে নেমে গিয়েছিল রেড ডেভিলরা। ৫১ বছর পর এই মৌসুমে প্রথম ২৫ ম্যাচে ১২ ম্যাচ হেরেছে তারা। চোখ রাঙ্গাচ্ছে অবনমন।
ম্যাচটি শুরুর আগে ইউনাইটেড ছিল পয়েন্ট তালিকার ১৪ নম্বরে। অন্যদিকে স্পার্সের অবস্থান ছিল ১৫ নম্বরে। মৌসুমের নবম জয়ে ২৫ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে টটেনহাম উঠে গেছে ১২ নম্বরে। সমান সংখ্যক ম্যাচ শেষে ১২তম হারের দেখা পাওয়া রেড ডেভিলরা ২৯ পয়েন্ট নিয়ে নেমে গেছে ১৫ নম্বরে।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্পার্স ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করা হয় চোটগ্রস্থ স্কোয়াড নিয়ে যুদ্ধ করা আমোরিমের প্রতি সহানুভূতি অনুভব করেন কিনা? জবাবে পোস্তেকোগলুকে বলেন, “যদি আমি আমার অফিস খুঁজি, তবে দেখব আমি অন্যান্য ম্যানেজারদের কাছ থেকে কোনো সহানুভূতির কার্ড পাইনি। তাই আমি বলতে পারি যে অনুভব করিনি।”
তবে এরপরই পেশাদারিত্বের খোলস থেকে বের হয়ে আসেন এই গ্রীক ম্যানেজার, “কিন্তু অবশ্যই সহমর্মিতা ছিল। আমি দেখতে পাচ্ছি আজ রুবেন একটি দল তৈরি করেছে যেখানে খেলোয়াড়দের নিজস্ব পজিশনের বাইরে খেলিয়েছে। আমার দুনিয়ায় স্বাগতম। কিন্তু এটা এক ম্যাচের জন্য। এখন দুই মাসের জন্য সেটা করুক। যে কোনো ক্লাব, দুই মাস ধরে সেটা করে দেখাক।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আবু তালহার ইসলাম গ্রহণ
উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান (রা.) একজন বুদ্ধিমতী নারী সাহাবি। তিনি ইসলাম গ্রহণকারী আনসারদের মধ্যে অন্যতম এবং খ্যাতিমান সাহাবি আনাস ইবনে মালিকের (রা.) মা। আনাসের বাবা মালিক ছিলেন উম্মে সুলাইমের মুসলিম হওয়ার আগের স্বামী। উম্মে সুলাইম ও আনাস ইসলাম গ্রহণ করলে স্বামী ক্ষোভে স্ত্রী-পুত্র ত্যাগ করে চলে যান। বিধবা হয়ে পড়েন উম্মে সুলাইম (রা.)।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘একবার স্বপ্নে আমি জান্নাতে প্রবেশ করি। হঠাৎ আমার সামনে কারও জুতার আওয়াজ শুনতে পাই। আমি ফেরেশতাদের জিজ্ঞেস করলাম, কে? তারা বললেন, আনাস ইবনে মালিকের মা উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান।’ (মুসলিম, হাদিস: ২,৪৫৬)
শিশু পুত্র আনাসকে নিয়ে কাটছিল তার দিন। উম্মে সুলাইম (রা.) ঠিক করলেন, আনাস বড় না হওয়া পর্যন্ত তিনি বিয়ে করবেন না। আনাস যখন তার মায়ের বিয়েতে মত দেবে তখনই তিনি বিয়ে করবেন। একসময় আনাস উপযুক্ত বয়সে উপনীত হন।
আরও পড়ুনজীবনে একবার হলেও যে নামাজ পড়তে বলেছেন নবীজি (সা.)১৩ মার্চ ২০২৫সে সময় আবু তালহা আল আনসারি নামে এক লোক উম্মে সুলাইমকে পছন্দ করে এবং বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু তালহা মুসলিম ছিলেন না। তাই তিনি বিয়েতে অমত করলেন। আবু তালহা বললেন, ‘তুমি অর্থকড়ি চাও? আমি তোমাকে মূল্যবান সবকিছুর বিনিময়ে বিয়ে করতে চাই।’ উন্মু সুলাইম (রা.) বললেন, ‘না, আমি তোমার মধ্যে ইসলাম চাই।’
অবশেষে আবু তালহা ইসলাম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। উম্মে সুলাইমের (রা.)-এর সঙ্গে তার বিয়ে হয় এবং বিয়ের মোহর হয় ‘আবু তালহার ইসলাম গ্রহণ’। সাবিত (রা.) বলেছেন, উম্মে সুলাইমের বিয়ের মোহরের চেয়ে উত্তম মোহরের কথা আমরা আর শুনিনি। আবু তালহার ইসলাম গ্রহণের যুগপৎ এই সিদ্ধান্ত ও তাঁদের বিয়ে আরবে সেসময় বেশ আলোচনার সৃষ্টি করে। বলা হয়, ইসলামের ইতিহাসে এটিই ছিল বিয়েতে সবচেয়ে মূল্যবান মোহর।
উম্মে সুলাইম (রা.) যুদ্ধে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে শরিক হয়েছিলেন। আনাস (রা.) বলেন, ‘আমি আয়েশা (রা.) ও আমার মা উম্মে সুলাইমকে যুদ্ধের দিন মশক ভরে পানি এনে আহতদের পানি পান করাতে দেখেছি। মশক খালি হয়ে গেলে তারা আবার ভরে এনে পান করিয়েছেন।’ (সহিহ বুখারি, ২/৫৮১)
আরও পড়ুন ধৈর্য কাকে বলে১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫