সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর আইনজীবী আজ সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেল শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন না। তিনিও সরকারি চাকরিতে কোটার বিলোপ চেয়েছিলেন।

তবে ইনুর আইনজীবীর এ কথা সঠিক নয় বলে আদালতে দাবি করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।

পরে ইনুকে এজলাসকক্ষ থেকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পথে তাঁর কাছে এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘আপনার আইনজীবী বলেছেন, আপনি কোটাবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন? আপনার বক্তব্য কী?’

তখন ইনু হাসতে হাসতে বলেন, ‘যে লাউ, সেই কদু।’ সাংবাদিক পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আপনি লাউ নাকি কদুর পক্ষে?’ ইনু আবার হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমি লাউ-কদু দুটিরই বিপক্ষে।’

‘তাঁরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার অন্যতম সহযোগী’

আজ সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটের দিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে একটি বড় নীল রঙের প্রিজনভ্যান এসে থামে সিএমএম আদালতের হাজতখানার সামনে।

প্রিজনভ্যান থেকে প্রথমে নামেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তাঁর পরনে ছিল পায়জামা, পাঞ্জাবি ও নীল রঙের সোয়েটার। গলায় ছাই রঙের মাফলার। বাম হাতে ধরা একটি পাউরুটি। মেননের পর প্রিজনভ্যান থেকে নামেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে তাঁদের আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।

১০ মিনিট পর ইনু ও মেননকে আদালতের এজলাসে নেওয়ার জন্য হাজতখানা থেকে বের করে আনা হয়। তখন দুজনের মাথায় হেলমেট ও বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ছিল।

ঢাকার সিএমএম আদালতের প্রবেশপথের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় ইনু সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমার বলার কিছু নাই। শুধু মিথ্যা মামলার ঢেউ চলতেছে, এটুকুই বলতে পারি।’

এরপর ইনু ও মেননকে আদালতের এজলাসকক্ষে তোলা হয়। তখন বিচারক খাস কামরায় অবস্থান করছিলেন। এ সময় ইনু ও মেনন তাঁদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা নিজেদের মধ্যেও কথা বলতে থাকেন।

বেলা ১১টা ১০ মিনিটের দিকে বিচারক এজলাসে এসে চেয়ারে বসেন। তখন বিচারকের পাশে দাঁড়ানোর এক পুলিশ কর্মকর্তা বলতে শুরু করেন, ‘আসামি হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রয়েছে। এই হত্যা মামলায় তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসা করার আবেদন করা হয়েছে।’

রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের করা আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক নাসির উদ্দিন সরকার আদালতকে বলেন, ‘হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনন এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। আসামিরা ১৪ দলীয় জোটের নেতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তাঁরা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করেন। আওয়ামী লীগ ও তাঁদের সহযোগী সংগঠনের সদস্যরা নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছেন।’

এ সময় ইনু ও মেননের রিমান্ডের স্বপক্ষে আরও যুক্তি তুলে ধরেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি আদালতকে বলেন, ‘ইনু ও মেনন দুজনই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন তাঁরা। দুই হাজারের মতো নিরীহ ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পাখির মতো মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আরও শত শত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গু হয়েছেন। এসব হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আসামিরা জড়িত ছিলেন।’

ওমর ফারুক ফারুকীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন ইনু ও মেননের আইনজীবীরা। মেননের আইনজীবী বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমার মক্কেল ছয়বার সংসদ সদস্য ছিলেন। ছাত্র অবস্থা থেকে তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কোটাবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন না আমার মক্কেল। তিনি কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে তাঁকে একের পর মামলা দেওয়া হচ্ছে। কয়েক দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।’

অন্যদিকে ইনুর আইনজীবী বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ১৯৭০ সাল থেকে আমার মক্কেল রাজনীতি করে আসছেন। বুয়েটে পড়ার সময় থেকে তিনি নিপীড়িত ও অসহায় মানুষের অধিকার আদায়ে রাজনীতি করে আসছেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধাও।’

ইনু কোটাবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন না বলে দাবি করেন তাঁর আইনজীবী। তিনি আদালতকে বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলন যখন চলছিল, তখন তাঁরা মক্কেল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি এই আন্দোলনের বিপক্ষে নন। সরকারি চাকরিতে কোটার বিলোপ চেয়েছিলেন তিনি। শুধু আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে থাকার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। তিনি কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন।

ইনুর আইনজীবীর বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি বলেন, ইনুর ১৯৭০ সাল থেকে পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন তাঁর আইনজীবী। কিন্তু গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার শাসনামলের গুম, খুন, ক্রসফায়ার, দিনের ভোট রাতে করার প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে এই আসামি জড়িত। বিগত সরকারের সময় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৬০ লাখ মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।

ওমর ফারুক ফারুকী আরও বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমরা জানি, জনগণের অভ্যুত্থানের মুখে কোনো রাষ্ট্রপ্রধান দেশ থেকে পালিয়ে যান। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে কেবল শেখ হাসিনা পালাননি, পালিয়েছেন প্রধান বিচারপতি, বায়তুল মোকাররমের খতিবও। আরও পালিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল, ঢাকা কোর্টের প্রধান পিপিও।’

উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত ইনু ও মেননকে এই মামলায় তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

পরে ইনু ও মেননকে এজলাসকক্ষ থেকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পথে ইনুর কাছে এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘আপনার আইনজীবী বলেছেন, আপনি কোটা আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন? আপনার বক্তব্য কী?’

তখন ইনু হাসতে হাসতে বলেন, ‘যে লাউ, সেই কদু।’ তখন সাংবাদিক পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আপনি লাউ নাকি কদুর পক্ষে?’ ইনু হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমি লাউ-কদু দুটিরই বিপক্ষে।’

‘বিপ্লব পরবর্তী বিচার হয় বিপ্লবী আদালতে’

একই মামলায় সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপাকে আজ সকাল ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলায় তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ।

রাষ্ট্রপক্ষে পিপি ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, সাংবাদিক শাকিল ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে আরও ফ্যাসিস্ট হতে সহযোগিতা করেন এই আসামিরা। বিগত ১৫ বছরে শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হতে সহযোগিতা করেছিলেন এ ধরনের সাংবাদিকেরা। তাঁরা সাংবাদিকতাকে কলঙ্কিত করেছেন।

ফারজানা রুপা আদালতকে বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। আমাকে এর আগে নয় দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমরা তো রাজপথে কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিইনি। কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। কেবলমাত্র সাংবাদিকতা করার জন্য একের পর হত্যা মামলার আসামি করা, এটি কতখানি ন্যায়বিচার?’

আরও পড়ুনআবার রিমান্ডে মেনন, ইনু, শাকিল ও ফারজানা২ ঘণ্টা আগে

পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আজ উনারা এসে অনেক বড় বড় কথা বলেন। বাস্তবতা হচ্ছে, জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থান হয়নি, হয়েছে বিপ্লব। বিপ্লব হয়েছে রাশিয়ায়, বিপ্লব হয়েছে ফ্রান্সে। বিপ্লবের পরে যারা হেরে যায়, যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে, তাদের বিচারের জন্য গঠন করা হয় বিপ্লবী আদালত। তাদের বিচার করা হয় বিপ্লবী আদালতে। পরাজিতদের শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা দুর্ভাগা জাতি, যারা খুন করল, তাদের নিয়মিত আদালতে বিচার হচ্ছে।’

ফারজানা রুপার বক্তব্যের পর শাকিল আহমেদ আদালতে কথা বলার অনুমতি চান। তবে আদালত তাঁকে কথা বলার অনুমতি দেননি।

উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে ফারজানা ও শাকিলকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওমর ফ র ক ফ র ক হ জতখ ন য় ন ছ ত র জনত র এক র পর ম নন র র জন ত ও ম নন দ ন কর কর ছ ন ধরন র সহয গ আপন র এজল স সরক র র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াক্ফ আইনের বাস্তবায়ন স্থগিতেও রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে

ভারতের বিতর্কিত সংশোধিত ওয়াক্ফ আইনের বাস্তবায়ন স্থগিত করেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার আইনটির বিরুদ্ধে করা ৭৩টি পিটিশনের শুনানি শুরু হয়। পরে বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ সংশোধিত ওয়াক্ফ আইন স্থগিতের ঘোষণা দেন। বৃহস্পতিবার ছিল ওয়াক্ফ মামলায় সুপ্রিম শুনানি। আইন স্থগিতের পর সরকারের পক্ষ থেকে আদালতকে নিশ্চিত করা হয়, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ওয়াক্ফ বোর্ডে নতুন নিয়োগ বা সম্পত্তির অবস্থা পরিবর্তন করা হবে না। পুরোনো ওয়াক্ফ এবং ‘ওয়াক্ফ বাই ইউজার’ সম্পত্তিও আগের মতো থাকবে। তবে আদালতের এই সিদ্ধান্তের পরও দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সরকার জানায়, নতুন আইনের ৯ ও ১৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী কোনো নিয়োগ করা হবে না। এই ধারাগুলো কাউন্সিল ও বোর্ডে সদস্য নিয়োগের বিষয়ে। সরকারের আইনজীবী তুষার মেহতা মামলার জবাব দেওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় চান, যা আদালত মঞ্জুর করেছেন। আদালত বলেছেন, আবেদনকারীরা সরকারের জবাবের পর পাঁচ দিনের মধ্যে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারবেন।

সুপ্রিম কোর্ট ৭৩টি পিটিশনের মধ্যে পাঁচটি নিয়ে আলোচনা করবেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, ১০০ বা ২০০টি পিটিশন নিয়ে আলোচনা সম্ভব নয়। বাকিগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে বলে ধরা হবে।

‘ওয়াক্ফ বাই ইউজার’ এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধর্মীয় বা দানের কাজে ব্যবহৃত সম্পত্তিকে ওয়াক্ফ হিসেবে দাবি করতে পারে, এমনকি কাগজপত্র না থাকলেও। নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ বা সরকারি জমিতে এটি প্রযোজ্য হবে না। শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 

তিনি বলেন, আমরা শুনেছি, দিল্লি হাইকোর্ট ওয়াক্ফ জমির ওপর। সব ওয়াক্ফ বাই ইউজার ভুল নয়। তিনি জানান, ১৩০০, ১৪০০ বা ১৫০০ শতাব্দীর মসজিদের জন্য কাগজপত্র পাওয়া অসম্ভব। তিনি সরকারকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা কি বলছেন, আদালতের রায়ে প্রতিষ্ঠিত ওয়াক্ফ এখন বাতিল হবে? আইন দিয়ে আদালতের রায় বাতিল করা যায় না।’

আইনজীবী কপিল সিবাল বলেন, ‘হাজার বছর আগে ওয়াক্ফ তৈরি হলে এখন কাগজপত্র চাওয়া সমস্যা।’ আইনজীবী অভিষেক সিংভি জানান, ভারতের ৮ লাখ ওয়াক্ফ সম্পত্তির মধ্যে ৪ লাখই ওয়াক্ফ বাই ইউজার।

নতুন আইনে কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিল ও রাজ্য ওয়াক্ফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য রাখার বিধান আছে। এতে মুসলিম সদস্যের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। কাউন্সিলে ২২ জনের মধ্যে আটজন এবং রাজ্য বোর্ডে ১১ জনের মধ্যে চারজন মুসলিম থাকবে। এই বিধান মুসলিম সম্প্রদায় ও বিরোধী দলগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার ২৭৪ জন: মুর্শিদাবাদে ওয়াক্ফ আইন নিয়ে সাম্প্রতিক অশান্তি ও হিংসার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত এনজামুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতার ভবানী ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে এ তথ্য জানান এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। তিনি জানান, এই ঘটনার তদন্তে বর্তমানে সিট-এ সদস্য সংখ্যা ১১। এই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ ওয়াকার রেজা। বিগত কয়েকদিন ধরে জঙ্গিপুর মহকুমার শামসেরগঞ্জ থানা থেকে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন তিনি।

সাংবাদিকদের সামনে এডিজি জানান, অশান্তির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬০টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ২৭৪ জনকে। এই প্রসঙ্গে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনা হলো- জাফরাবাদে বাবা ও ছেলেকে নৃশংসভাবে খুনের মামলায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত এনজামুল হককে গ্রেপ্তার করেছে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। সুতি এলাকা থেকে বুধবার রাতে তাকে ধরা হয়। পেশায় রাজমিস্ত্রি, এনজামুল সুলিপাড়ার বাসিন্দা।

এডিজি জানান, নিহত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়। ওই মামলায় এরই মধ্যে কালু ও দিলাবর নাদাব নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এনজামুল বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙার চেষ্টা করে প্রমাণ লোপাট করতে চেয়েছিল। তদন্তে উঠে এসেছে, এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড সে-ই।

অশান্ত মুর্শিদাবাদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে এডিজি আশ্বস্ত করে বলেন, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। প্রায় ৭০ শতাংশ দোকান ও বাজার ইতোমধ্যেই খুলে গেছে। আমরা আশাবাদী শনিবারের মধ্যে বাকি দোকানগুলোও খুলে যাবে।

এদিন বিকেল পর্যন্ত ৮৫ জন ঘরছাড়া মানুষকে পুলিশি নিরাপত্তায় বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ধুলিয়ান, সুতিসহ বেশ কিছু স্পর্শকাতর এলাকায় মোতায়েন রয়েছে রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওয়াক্ফ আইনের বাস্তবায়ন স্থগিতেও রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে ভারতে
  • আইনজীবী তালিকাভুক্তিকরণ পরীক্ষা, প্রস্তুতিতে যা যা করতে পারেন
  • ওয়াক্ফ আইনের বাস্তবায়ন স্থগিতেও রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে
  • আইনজীবী তালিকাভুক্তির এমসিকিউ পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহ শুরু
  • গাইবান্ধার সাবেক এমপি সারোয়ার কবির কারাগারে 
  • বিচারক বললেন, আদালতের অনুমতি ছাড়া মক্কেলের সঙ্গে আইনজীবীর কথা নয়
  • অনলাইন জুয়ার ওয়েবসাইট–অ্যাপ ব্লক, প্রকাশিত বিজ্ঞাপন সরাতে নির্দেশনা চেয়ে রিট
  • অনলাইন জুয়া ও বেটিং সাইটের বিজ্ঞাপন বন্ধে রিট
  • সাবেক দুই এমপি-আইজিপি-ওসি রিমান্ডে
  • ১১ আসামিকে আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ