নাফ নদে টানা জালের আটকা পড়া ভোল মাছটি অবশেষে কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার উপরের বাজারে বিক্রি করা হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল নয়টার দিকে শুরু হয়ে বেলা ১১টায় শেষ হয় মাছ বিক্রি। মাছটি দেখার জন্য এবং কেনার জন্য উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

সকালে বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ভ্যানগাড়িতে করে মাছটি বাজারে আনা হয়। চারজন শ্রমিক মাছটি কেটে টুকরো করছিলেন। সেখান থেকে কেউ দুই কেজি, কেউ তিন কেজি, কেউ বা পাঁচ, দশ ও বিশ কেজি করে কিনে নিয়ে যান। প্রতি কেজি মাছ বিক্রি করা হয়েছে ১ হাজার ৭০০ টাকায়। তবে আগের দিন মাইকিং করে দাম হাঁকা হয়েছিল মাছের দাম ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি।

এর আগের দিন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের নাফ নদের ঘোলারচর এলাকায় ফেলা হয়েছিল টানা জাল। বেলা ১১টার দিকে এ মাছ ধরা পড়ে। এ জালে ধরা পড়ে ২০০ কেজি (৫ মণের বেশি) ওজনের বিশাল একটি ভোল মাছ। প্রায় চার ফুট আকারের মাছটিকে ছয়জন মিলে তুলে আনেন মাছের পাইকারি আড়তে।

সাবরাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, শাহপরীর দ্বীপ কোনারপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা ফয়েজ আহমদের ছেলে মোহাম্মদ কালু ফকিরের টানা জালে ভোল মাছটি ধরা পড়ে।

শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া ট্রলার মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হাসান বলেন, রোববার ভোরে নাফ নদের শাহপরীর দ্বীপ ঘোলারচর অংশে ১০ থেকে ১২ জেলে টানা জাল ফেলেন। কয়েক ঘণ্টা পর জাল টানেন জেলেরা। এসময় ছোট ছোট মাছের সঙ্গে বিশাল বড় ভোল মাছটি জালে আটকে যায়। পরে জেলেরা নাফ নদ থেকে বড় মাছটি রশি দিয়ে বেঁধে টেনে টেনে চরের উপরে তুলে নিয়ে আসেন।

স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মাছটি শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া মৎস্যঘাটে তুলে আনা হয়। পরে টেকনাফের মাছ ব্যবসায়ী জাফর আলম ২ লাখ ৬০ হাজার টাকায় মাছটি কিনে নেন। পরে তিনি মাছটি টেকনাফ নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে মাছটি বরফ দিয়ে রাখা হয়েছিল।

মাছ ব্যবসায়ী জাফর আলম জানান, ১ হাজার ৩৫০ টাকা কেজি দরে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকায় মাছটি তিনি কেনেন। এটি টেকনাফ বড়বাজারে কেটে প্রতি কেজি ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এজন্য পৌরসভায় মাইকিং করা হয়। গতকালই তিন মণের মতো মাছ আগাম বিক্রি হয়েছে।

জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, শাহপরীর দ্বীপের এক জেলের টানা জালে একটি বিশাল ভোল মাছ ধরা পড়ার খবর শুনেছি। শীত মৌসুমে ৫ থেকে ১৫ কেজি ওজন পর্যন্ত ভোল মাছ জেলেদের জালে আটকা পড়ে। এই মাছ সাধারণত ৪০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

মৎস্য কর্মকর্তা আরো বলেন, সাগরে মাছ ধরার ওপর বিভিন্ন ধরনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে পালন হওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। জেলেরাও ভালো দাম পাচ্ছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ হপর র দ ব প

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যারাডোনার মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ

চার বছর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে যান আর্জেন্টাইন ফুটবল কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা। তবে তার মৃত্যু ঘিরে এখনো বিতর্ক চলছে। চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে সাত স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা চলছে, যেখানে নতুন এক তথ্য সামনে এনেছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ মরিসিও কাসিনেয়ি।

আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে তিনি জানান, ম্যারাডোনার মৃতদেহ দেখে মনে হয়েছে, মৃত্যুর আগে তিনি প্রচণ্ড যন্ত্রণায় ছিলেন। হৃদযন্ত্রের সমস্যা ও লিভার সিরোসিসের কারণে মৃত্যুর অন্তত ১০ দিন আগে থেকেই তার ফুসফুসে পানি জমছিল। চিকিৎসকদের বিষয়টি লক্ষ্য করা উচিত ছিল বলে মত দেন তিনি। এছাড়া, ম্যারাডোনার হৃদযন্ত্র স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বড় হয়ে গিয়েছিল, যা তার শারীরিক অবস্থাকে আরও জটিল করে তুলেছিল।  

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের মতে, ম্যারাডোনা যেখানে ছিলেন, সেটি আদর্শ চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য যথেষ্ট ছিল না। অস্ত্রোপচারের দুই সপ্তাহ পরই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু ঘটে।  

আরো পড়ুন:

ম্যারাডোনার মৃত্যুর নতুন কারণ, মেয়ের ক্ষোভ

ফিফা প্রেসিডেন্টের আক্রমণভাগে ডানে পেলে বাঁয়ে ম্যারাডোনা

এ মামলার কৌঁসুলিরা ম্যারাডোনার শেষ দিনগুলোকে ‘ভয়াবহ নাটকীয় পরিস্থিতি’ বলে উল্লেখ করেছেন। তাদের দাবি, দীর্ঘদিন যন্ত্রণা ভোগ করার পরও তাকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয়নি, বরং ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই অভিযুক্ত সাত স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

দোষ প্রমাণিত হলে তাদের ৮ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। মামলাটি আগামী জুলাই পর্যন্ত চলতে পারে, যেখানে ১২০ জন সাক্ষ্য দেবেন।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ