যুক্তরাষ্ট্রে শীতকালীন ঝড়ে ১০ জনের মৃত্যু
Published: 17th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলজুড়ে এ সপ্তাহান্তে তীব্র শীতকালীন ঝড়ে অন্তত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ঝড়ের সঙ্গে প্রচণ্ড বৃষ্টিতে কয়েকটি এলাকায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে।
কেন্টাকিতে বন্যার পানিতে অনেক রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। বাড়িঘরেও বন্যা পানি প্রবেশ করেছে। সেখানে ঝড়-বন্যায় অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার।
গতকাল রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে অ্যান্ডি বেশিয়ার লেখেন, ‘আমরা এইমাত্র পাইক কাউন্টিতে আবহাওয়া–সম্পর্কিত কারণে আরও একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছি। এই একজনকে নিয়ে আমরা মোট নয়জনকে হারিয়েছি।’
জর্জিয়ায় আরও অন্তত একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার কথাও জানিয়েছেন কেন্টাকির গভর্নর।
সপ্তাহান্তের এই ঝড়কে অ্যান্ডি বেশিয়ার অন্তত এক দশকের মধ্যে কেন্টাকিতে আঘাত হানা সবচেয়ে গুরুতর প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে একটি বলেও বর্ণনা করেছেন।
গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার বলেছেন, সেখানে এখন উদ্ধার কার্যক্রম চলেছে।
বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে ঝড় এবং ঝড়পরবর্তী সময়ের নানা ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলোয় ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছ, বন্যার পানিতে ডুবে থাকা যানবাহন ও আংশিক ডুবে থাকা বাড়িঘর দেখা যাচ্ছে। অনেক সড়ক বন্যার পানিতে ডুবে আছে। বিশেষ করে কেন্টাকি, টেনিসি ও ভার্জিনিয়ায়।
গত শনিবার যখন ঝড়ের তাণ্ডব চলছিল, ওই সময় কেন্টাকিতে বন্যার পানির উচ্চতা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
দুই বছর আগে কেন্টাকিতে ভয়াবহ বন্যায় ৪৩ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। বন্যায় অঙ্গরাজ্যটির একটি বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
এবারের ঝড়ও ‘ব্যাপক’ প্রভাব ফেলেছে জানিয়ে গভর্নর বেশিয়ার বলেছেন, ‘কেন্টাকির বাসিন্দাদের আমাদের সতর্ক করতে হবে। তিন শতাধিক সড়ক বন্ধ হয়ে আছে; স্থানীয় পরিবহননেতারা বলেছেন, অঙ্গরাজ্যজুড়ে ঐতিহাসিক প্রভাব পড়তে চলেছে। পূর্বে ভূমিধস থেকে পশ্চিমে তুষারপাত, পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক। কেন্টাকিবাসী, দয়া করে সামনের দিনগুলোর জন্য প্রস্তুত হন, ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন এবং নিরাপদে থাকুন।’
যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে একটি শিশুও আছে বলে জানিয়েছেন কেন্টাকির গভর্নর। নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও মত তাঁর। তিনি কেন্টাকির বাসিন্দাদের সড়ক থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় তীব্র শীতকালীন ঝড়, জরুরি অবস্থা জারি ১৬ জানুয়ারি ২০২২শীতকালীন ঝড় আঘাত হানতে চলেছে—সতর্কতা হিসেবে গত শুক্রবারই কেন্টাকিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন গভর্নর বেশিয়ার। গতকাল তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দেন। ট্রাম্প কেন্টাকিতে ফেডারেল ডিজাস্টার ঘোষণার একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহায়তার জন্য কেন্টাকি প্রশাসন ফেডারেল ত্রাণ তহবিল থেকে বরাদ্দ পাবে।
কেন্টাকির আবহাওয়া আরও কয়েক দিন বিরূপ থাকবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
ঝড় ও বন্যার কারণে কেন্টাকিতে বহু মানুষ বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। অনেক মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অঙ্গরাজ্যটির নয়টি কাউন্টিতে জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
আরও পড়ুনকেন্টাকিতে অসময়ের টর্নেডো, ১০০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা১২ ডিসেম্বর ২০২১.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন র ম ত য বন য র প ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নাকচ করল হামাস
ইসরায়েলের দেওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাবের আওতায় হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছিল। খবর বিবিসির।
যুদ্ধবিরতির আলোচনায় সম্পৃক্ত একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে হামাসের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের কথা জানান। তিনি বলেন, হামাসের মূল চাওয়া হলো চূড়ান্তভাবে যুদ্ধ বন্ধ করা এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা। কিন্তু ওই প্রস্তাবে এ বিষয়ে কোনো প্রতিশ্রুতি ছিল না বরং হামাসের হাতে থাকা জীবিত জিম্মিদের অর্ধেককেই মুক্তি দেওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যেই সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে এমন কথা জানা গেল।
ফিলিস্তিনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, মিসরের মাধ্যমে দেওয়া প্রস্তাবে স্পষ্টত হামাসকে নিরস্ত্র করার আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু এতে ইসরায়েলের পক্ষে যুদ্ধ বন্ধ করা এবং গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তাই হামাস এ প্রস্তাব পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো আলোচনায় এবারই প্রথম ইসরায়েলের পক্ষ থেকে হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এটাকে ফিলিস্তিনি সংগঠনটির জন্য চূড়ান্ত সীমারেখা (রেডলাইন) হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ইসরায়েল সময়ক্ষেপণ করছে। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছে। হামাসের হাতে থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের উদ্ধার করার চেষ্টায় এমনটা করা হচ্ছে।
হামাস জানিয়েছে, তাদের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দিতে তারা প্রস্তুত। তবে এর বিনিময়ে তারা যুদ্ধের সমাপ্তি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার চান।
এর মধ্যে বিবিসি জানতে পেরেছে, মিসরের মাধ্যমে একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সামনে আনা হয়েছে। সেটা বিবেচনা করছে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো। যদিও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো অগ্রগতির সম্ভাবনার বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেনি।
গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার ও নৃশংস হামলার ১৮ মাস চলছে। জাতিসংঘের সতর্কতা, এই ১৮ মাসের মধ্যে এখন গাজার মানবিক পরিস্থিতি সবচেয়ে বাজে অবস্থায় রয়েছে।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে সফরে গিয়ে ওয়াশিংটনে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন। এর কয়েক দিন পরই গত সপ্তাহের শেষের দিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারীদের কাছে একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে প্রধান আলোচক খলিল আল-হায়ার নেতৃত্বে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল মিসরের রাজধানী কায়রোয় দেশটির গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।