পৃথিবীতে সবচেয়ে স্বার্থপর জায়গা চলচ্চিত্রাঙ্গন, কেন বলেছিলেন মান্না
Published: 17th, February 2025 GMT
বাংলা চলচ্চিত্রে গণমানুষের নায়ক মান্নার সাক্ষাৎকারের একটি অংশ এখনো নেট দুনিয়ায় ঘুরে বেড়ায়। এছাড়া অভিনয়শিল্পীদের অনেকেই মান্নার উক্তি বিভিন্ন সময় তুলে ধরেন। সাক্ষাৎকারে ফিল্ম জীবনে বন্ধুত্ব নিয়ে কিছু অপ্রিয় কথা বলে গেছেন। তার মতে, ‘চলচ্চিত্রাঙ্গনে কেউ কারও বন্ধু না। এখানে প্রদর্শিত আন্তরিকতা বা হাসি-আনন্দ সব মেকি।’
অপি করিমের উপস্থাপনায় সেই সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের জবাবে চলচ্চিত্রাঙ্গনকে স্বার্থপর দাবি করে মান্না বলেন, ‘পৃথিবীতে সবচেয়ে স্বার্থপর জায়গা বলে যদি কিছু থাকে তবে তা চলচ্চিত্রাঙ্গন। এখানে আমরা সবাই কমার্শিয়াল। হৃদয়, প্রেম, ভালোবাসা বন্ধুত্ব সব মেকি এখানে।’
এরপর বন্ধুত্ব নিয়ে এই অভিনেতা বলেন, ‘ফিল্মে বন্ধুত্বের কোনো মূল্য নেই। আমার কোনো বন্ধু নেই এখানে। চলচ্চিত্রের কেউ যদি বুকে হাত দিয়ে বলেন, আমরা সবাই এক পরিবার তবে সেটা হবে সবচেয়ে বড় মিথ্যা। কারণ এখানে সবাই স্বার্থ নিয়ে চলেন।’
তবে এই স্বার্থপরতার ভীড়েও একজন বন্ধু খুঁজে পেয়েছেন উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘শোবিজে আমার একজন বন্ধু আছে। তিনি ফাইট ডিরেক্টর মোসলেম ভাই। আমার সুখে, দুঃখে, হাসি, আনন্দে পাশে থাকেন। আমাদের মধ্যে স্বার্থ বলে কিছু নেই। সেকারণেই এই মানুষটা আমার পরিবারের একজন সদস্য।’
মান্নাকে হারানোর ১৮ বছর হয়ে গেল। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান মান্না।
১৯৮৪ সালে তিনি এফডিসির নতুন মুখের সন্ধান কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে আসেন। নায়করাজ রাজ্জাক মান্নাকে প্রথম চলচ্চিত্রে সুযোগ করে দেন। ‘তওবা’র মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তার।
তার অভিনীত প্রথম মুক্তি প্রাপ্ত ছবি ‘পাগলি’। ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ ছবিতে প্রথম একক নায়ক হিসেবে কাজ করেন মান্না। ছবিটি ব্যবসা সফল হওয়াতে মান্নাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
এরপর কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ ছবির মাধ্যমে তার একক নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া সহজ হয়ে যায়। একে একে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দেশদ্রোহী’, ছবিগুলো মান্নার অবস্থান শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।
১৯৯৯ সালে ‘কে আমার বাবা’, ‘আম্মাজান’, ‘লাল বাদশা’র মতো সুপারহিট ছবিতে কাজ করেন মান্না। অভিনয়, অ্যাকশন, সংলাপ বলার ধরন সবকিছু মিলেই একটা স্বতন্ত্র স্টাইল দাঁড় করেছিলেন তিনি।
প্রযোজক হিসেবেও মান্না বেশ সফল ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠান থেকে যতগুলো ছবি প্রযোজনা করেছেন প্রতিটি ছবি ব্যবসাসফল হয়েছিল। ছবিগুলোর মধ্যে ‘লুটতরাজ’, ‘লাল বাদশা’, ‘আব্বাজান’, ‘স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’, ‘মান্না ভাই’ ও ‘পিতা-মাতার আমানত’ অন্যতম।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র ঙ বন ধ ত ব পর চ ল ত
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ.লীগ নেতাদের বাড়িতে পুলিশ
যশোর জেলা আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ শাহীন চাকলাদারসহ শীর্ষ কয়েকজন নেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে নেতাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এসময় কাউকে আটক করতে পারেনি তারা।
পুলিশ বলছে, বিভিন্ন মামলার আসামি আটক, মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারের অংশ হিসাবে অভিযান চালানো হয়।
পুলিশ সূত্রে ও সরেজমিনে দেখা যায়, ডিবি পুলিশের দুইটি ও পুলিশের পাঁচটি মোট সাতটি গাড়ি প্রথমে যায় যশোর শহরের কাঁঠাতলাস্থ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের বাড়িতে। এই বাড়ি ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের দিন বিক্ষুদ্ধ জনতা পুড়িয়ে দেন। এরপর থেকে শাহীন চাকলাদার ও তার পরিবারের সদস্যরা এই বাড়িতে থাকেন না। এই বাড়ি সংস্কারের কাজে নিয়েজিত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশ কথা বলে চলে যায়।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে ২ শিশুর মৃত্যু
খাগড়াছড়িতে এবার ২ টেকনিশিয়ান ‘অপহরণ’
এরপর পুলিশের টিমটি যশোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলনের বাসায় যায়। সেখান থেকে শহরের কদমতলাতে অবস্থিত জেলা যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েলের বাসাতে যায় পুলিশ সদস্যরা। সেখানে তারা জুয়েলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
এরপর পুলিশের টিমটি কাজীপাড়াতে অবস্থিত যশোর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাইফুজ্জামান পিকুল ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলের বাড়িতে যায়।
যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েলের ভাবি জ্যোৎস্না বেগম বলেন, ‘আমাদের বাসায় পুলিশ আসে, তারা জুয়েলের খোঁজ খবর নেয়। আমরা বলি, জুয়েল অনেক আগে থেকেই বাড়িতে নেই। তারপর পুলিশ চলে যায়। তারা কাউকে হেনস্তা করেনি।”
অভিযানে থাকা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, নেতাকর্মীদের বাড়িতে বিভিন্ন মামলার আসামিরা অবস্থান করছেন বলে তথ্য ছিল। এরপরই অভিযান চালায় পুলিশ। কাউকে পাওয়া যায়নি। এই ধরণের অভিযান অব্যহত থাকবে।
যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, “দলীয় পরিচয় থাকা কারো বাড়িতে অভিযান চালানো হয়নি। অস্ত্র ও মাদক অভিযানের অংশ হিসাবে অভিযানে যায় পুলিশ। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা কিছু উদ্ধার করা যায়নি।”
ঢাকা/রিটন/মাসুদ