সব জনতাই সমস্যা ক্রিয়েট করছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 17th, February 2025 GMT
শুধু ‘তৌহিদি জনতা’ নয়, সব জনতাই সমস্যা তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সব জনতাই বিভিন্ন সমস্যা ক্রিয়েট করতেছে। তবে আমরা সব জনতাকেই নিয়ন্ত্রণ করছি। সব জনতা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আমাদের। কোন ধরনের জনতা কিসের জন্য মব ক্রিয়েট করে সেটার ব্যাপারে গণমাধ্যমকেও খেয়াল রাখতে হবে। দেশের জন্য যেটা উপকারী সেটা দেখতে হবে, করতে হবে। ব্যক্তিগত লাভের থেকে দেশের জন্য যেটা লাভজনক সেটা বেশি দেখতে হবে।’
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরে ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
কোস্টগার্ডের কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের নদীপথ ও সমুদ্রের উপকূলের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব কোস্ট গার্ডের। তারা এটি খুব ভালোভাবে করে যাচ্ছে। মিয়ানমার সীমান্তে মাঝে মাঝে সমস্যা হয়। কোস্ট গার্ড সফলতার সঙ্গে সমাধান করছে। বিভিন্ন সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা আমাদের সীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে যায়৷ এসব ক্ষেত্রেও কোস্ট গার্ড ভালো ভূমিকা রাখছে।
দুর্নীতি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দুর্নীতি আমাদের সব জায়গায় গ্রাস করে নিয়েছে। এটা যদি কমানো যায় তাহলে সব সেক্টরে উন্নতি হবে। আমাদের বড় সমস্যা এটা। যদি আমরা দুনীতি করি.
পুলিশ থেকে সাধারণ মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না এবং পুলিশের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না—এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা যত অফিসারকে আইনের আওতায় এনেছি, গত ৫৩ বছরে তা হয়নি। আমরা যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি সেখানে ব্যবস্থা নিচ্ছি। রিপোর্ট হওয়ার পর আমাদের তদন্ত করতে হয়। অনেক সময় সত্যতা পাওয়া যায় আবার অনেক সময় মোটিভেটেড সংবাদও পাওয়া যায়। এ জন্য যেটার সত্যতা পাওয়া যায় সেটাতে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেমন আজকে একটি খবর দেখলাম, সঙ্গে সঙ্গে ওটার ইনভেস্টিগেশন শুরু করতে বলছি। সত্যতা পাওয়া গেলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ র আলম চ ধ র ব যবস থ আম দ র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ সন্দেহে চবির সাবেক শিক্ষার্থীকে মারধর, জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পরে জুতার মালা গলায় পরিয়ে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার শাওন হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের ছাত্র। পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান উপলক্ষে তিনি সোমবার ক্যাম্পাসে আসেন। পরে তিনি মারধরের শিকার হন। তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ব্যাংকের সামনে থেকে শাওনকে আটক করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এরপর তাকে মারধর করা হয়। পরে তাকে জুতার মালা পরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে চমেকে নেওয়া হয়।
মারধর ও জুতার মালা পরানোর সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি শিকার করেছেন চবি শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদল কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘২০২২ সালে চবিতে আমি গোপনে ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এই তথ্য জানার পর শাওন আমাকে মারধর করেন এবং ক্যাম্পাসে আসতেও বাধা দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আমানত হলের ৩০২ নম্বর কক্ষে আমাকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ রেজাউল হক রুবেল ও সাদাফ খানের উপস্থিতিতে আমাকে মারধর করা হয়। আমার পরিবার ক্ষমা চাওয়ায় পরে আমি ক্লাসে ফেরার সুযোগ পাই। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকে মারধরের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি।’
মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ছাত্রদল নেতাকর্মীসহ অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে শাওনের বিরুদ্ধে। তাই ছাত্রদল ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন।’
পুলিশে সোপর্দ করার সময় মারধরের শিকার শাওন হোসেন বলেন, ‘শামীমকে আমি আগে থেকেই চিনি। তবে কোনো নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই। আজ রাতে হঠাৎ কিছু লোক আমাকে আটক করে অগ্রণী ব্যাংকের পেছনে নিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এরপর তারা আমাকে সেন্ট্রাল ফিল্ডে এনে মারধর করে। আমার কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাও নেই। মিথ্যা অভিযোগে মারধর করা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে তিনি আতঙ্কিত ছিলেন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার বলেন, ‘ভুক্তভোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে প্রশাসনকে বিপাকে পড়তে হয়।’