বাংলা চলচ্চিত্রের গণমানুষের নায়ক মান্নাকে হারানোর ১৮ বছর হয়ে গেল। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পসহ সমগ্র দেশবাসীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে সুন্দর এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান মান্না। সেদিন এ নায়কের অকাল ও আকস্মিক মৃত্যু ছিল বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো।
১৯৬৪ সালের ১৪ এপ্রিল টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গায় নায়ক মান্না জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম সৈয়দ মোহাম্মদ আসলাম তালুকদার। নিজ এলাকায় স্থানীয় একটি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করে ঢাকা কলেজে স্নাতকে ভর্তি হন মান্না।
১৯৮৪ সালে তিনি এফডিসির নতুন মুখের সন্ধান কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে আসেন।
নায়করাজ রাজ্জাক মান্নাকে প্রথম চলচ্চিত্রে সুযোগ করে দেন। ‘তওবা’র মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তার।
তার অভিনীত প্রথম মুক্তি প্রাপ্ত ছবি ‘পাগলি’। ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ ছবিতে প্রথম একক নায়ক হিসেবে কাজ করেন মান্না। ছবিটি ব্যবসা সফল হওয়াতে মান্নাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
এরপর কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ ছবির মাধ্যমে তার একক নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া সহজ হয়ে যায়। একে একে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দেশদ্রোহী’, ছবিগুলো মান্নার অবস্থান শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।
১৯৯৯ সালে ‘কে আমার বাবা’, ‘আম্মাজান’, ‘লাল বাদশা’র মতো সুপারহিট ছবিতে কাজ করেন মান্না।
অভিনয়, অ্যাকশন, সংলাপ বলার ধরন সবকিছু মিলেই একটা স্বতন্ত্র স্টাইল দাঁড় করেছিলেন তিনি। প্রযোজক হিসেবেও মান্না বেশ সফল ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠান থেকে যতগুলো ছবি প্রযোজনা করেছেন প্রতিটি ছবি ব্যবসাসফল হয়েছিল। ছবিগুলোর মধ্যে ‘লুটতরাজ’, ‘লাল বাদশা’, ‘আব্বাজান’, ‘স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’, ‘মান্না ভাই’ ও ‘পিতা-মাতার আমানত’ অন্যতম।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসার সঙ্গে আমার সম্পর্ক, আর কারও সঙ্গে নয়’
‘আমাকে বিনা বিচারে জেলে পাঠানো হয়েছে। রাষ্ট্রদূত ঈসার সঙ্গেই আমার সম্পর্ক, আর কারও সঙ্গে নয়। সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। ঈসা অভিযোগ করেন আমি নাকি তার বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেছি। এটা মোটেও সত্য নয়।’ আদালতে এসব কথা বলেছেন মডেল মেঘনা আলম।
বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর পক্ষে শুনানি করেন।
‘সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের প্রেমের ফাঁদে ফেলার’ অভিযোগে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা প্রতারণার মামলায় আজ মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত। একই মামলায় তাঁর কথিত সহযোগী সানজানা ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. দেওয়ান সমিরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
শুনানিতে প্রসিকিউটর বলেন, ‘এই আসামিরা অভিনব কৌশল অবলম্বন করে বিদেশি রাষ্ট্রদূতসহ অ্যাম্বাসিগুলোতে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের হানি ট্র্যাপে ফেলে বিপুল অর্থ বাগিয়ে নেওয়ার জন্য চক্র দাঁড় করিয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতারণা করে আসছেন। সবশেষ সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। তাঁর কাছ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।’
এ সময় মেঘনা আলমকে ‘মেঘলা’ আলম সম্বোধন করায় শুনানির এক পর্যায়ে আসামি মেঘনা তাঁর নাম ঠিকভাবে উচ্চারণ করতে আইনজীবীকে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আমার নাম মেঘনা আলম, মেঘলা নয়।’
এদিকে দেওয়ান সমির আদালতকে বলেন, ‘আমাকে মেঘনা আলমের বয়ফ্রেন্ড বলা হচ্ছে। এটা ভুল তথ্য। তাঁর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি সাধারণ একজন মানুষ। দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম। আমি একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা। আমি মামলার এসব ঘটনার কিছুই জানি না।’
এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার দেখান। একইসঙ্গে দেওয়ান সমিরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে এজলাস থেকে হাজতখানায় যাওয়ার পথে মেঘনা আলম বলেন, ‘একমাত্র ঈসার সঙ্গে আমার সম্পর্ক, আর কারও সঙ্গে সম্পর্ক নেই। আমি ন্যায়বিচার পাচ্ছি না।’
এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। কথা বলতে নিষেধ করেন।