বৃহত্তর রংপুরের পাঁচ জেলায় তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার ব্যতিক্রমী বৃহৎ আন্দোলন শুরু হয়েছে আজ সোমবার থেকে। এর মাধ্যমে তিস্তাপারের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে দাবি বাস্তবায়নে চাপ প্রয়োগসহ বিশ্ব পরিমণ্ডলে তিস্তার দুঃখ তুলে ধরা হবে।

‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন আয়োজিত এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে। আজ সকাল থেকেই উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ‍মানুষজন বিভিন্ন পয়েন্টে এসে অবস্থান নিয়েছেন। যদিও তিস্তা সড়ক সেতুর লালমনিরহাট প্রান্তে উপস্থিত থেকে কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আগামীকাল মঙ্গলবার রাতে সমাপনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে সবগুলো পয়েন্টে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়া তিস্তা পয়েন্টের গণসমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। ব্যতিক্রমী এই কর্মসূচিতে পাঁচ জেলার লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেবেন।

আয়োজক সূত্র জানায়, কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিস্তা নদীবেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।

সরেজমিনে দেখা যায়, কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিস্তার বুকে মঞ্চ তৈরিসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে রোববার রাতের মধ্যেই। সমাবেশ, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, খাবার তৈরি ও রাত্রি যাপনের জন্য বড় বড় প্যান্ডেল করা হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে যেখানে ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষ রাত্রি যাপন করতে পারবেন।

সংশ্লিষ্ট এলাকায় পর্যাপ্ত লাইটের ব্যবস্থা করা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ স্থাপনসহ সব ধরনের কাজ শেষ হয়েছে। এবারের আন্দোলনে সরকার যদি তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করে। তবে লাগাতার কর্মসূচি চলবে।

দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে নদীপারের লোকজন সকাল থেকেই তাদের জন্য নির্ধারিত পয়েন্টে আসতে শুরু করেন।

দু’দিনব্যাপী কর্মসূচি সফল করতে তারা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে আসছেন। রংপুরের গঙ্গাচড়ার মহিপুর বাজার সংলগ্ন পয়েন্টে আসা পাশ্ববর্তী জয়রামওঝা চরের বাসিন্দা সগির আলী বলেন, ‘এদ্দিন সবায় হামাক খালি আশা দিচে, কায়ও কোনো কাম (কাজ) করে নাই। এইবারের আন্দোলনে হামরা তিস্তাপারের সবায় থাকমো। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু বলেন, তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। এটি রংপুর অঞ্চলের তিস্তাপারের বঞ্চিত মানুষের আন্দোলন। এ আন্দোলন জনদাবিতে পরিণত হওয়ায় এতে নদীপারের মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আশা করছি, এ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিতে পারবো, আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দিচ্ছে না।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রুদ্ধশ্বাস লড়াই জিতে সেমিফাইনালে পর্তুগাল

উয়েফা নেশন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ১-০ গোলে পিছিয়ে ছিল পর্তুগাল। কিন্তু রোববার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাতে দ্বিতীয় লেগে অতিরিক্ত সময়ে ডেনমার্ককে ৫-২ গোলে হারিয়ে (দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩) সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে রোনালদো-ত্রিনকাওরা।

ম্যাচের ৭৬তম মিনিট পর্যন্ত পর্তুগালের বিদায়ের শঙ্কা ছিল। কারণ, ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের গোলে ডেনমার্ক ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল। তবে পর্তুগালের ফ্রান্সিসকো ত্রিনকাও বদলি হিসেবে নেমে গোল করে পর্তুগালকে সমতায় ফিরিয়ে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যান। অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই তিনি আরও এক গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। আর শেষ দিকে গঞ্জালো রামোস গোল করে পর্তুগালকে সেমিফাইনালের টিকিট এনে দেন।

অবশ্য ম্যাচের শুরুতেই মাত্র তিন মিনিটের মাথায় পর্তুগাল এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। এ সময় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো পেনাল্টি পান। তবে তার নেওয়া শট দারুণভাবে রক্ষা করেন ডেনিশ গোলরক্ষক কাসপার স্মাইকেল।  

আরো পড়ুন:

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভিন্ন ভাবনায় তপু বর্মন

‘আমাদের হাতে এখনও দ্বিতীয় লেগ আছে’

প্রথমার্ধের শেষ দিকে ডেনমার্কের জোয়াকিম আন্দারসেন হেড করতে গিয়ে বল নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন। তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ১-১ সমতায় ফিরে। বিরতির পর ৫৬ মিনিটে রাসমুস ক্রিস্টেনসেনের হেড পর্তুগালের গোলরক্ষককে পরাস্ত করলে ডেনমার্ক আবার এগিয়ে যায় (২-১)। তবে ৭২ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজের শট পোস্টে লেগে ফিরে এলে রোনালদো ফিরতি শটে বল জালে পাঠিয়ে ম্যাচে সমতা ফেরান (২-২)।

এর মাত্র চার মিনিট পরেই প্যাট্রিক ডরগু ও ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের সমন্বিত আক্রমণ থেকে গোল আদায় করে ডেনমার্ক আবারও ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

এরপরই নায়ক হয়ে ওঠেন ত্রিনকাও। নির্ধারিত সময়ের শেষ দিকে এবং অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে দুটি চমৎকার গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে নেন (৪-৩)। এরপর ১০৫তম মিনিটে দিওগো জোটার একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। তবে শেষ মুহূর্তে রামোস খালি পোস্টে বল জড়িয়ে ৫-৩ ব্যবধানে দলের জয় নিশ্চিত করেন, নিশ্চিত করেন সেমিফাইনালে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ জার্মানি।

এই ম্যাচের মাধ্যমে পর্তুগাল ২০২ মিনিট গোল করতে না পারার খরা কাটায়। যা ২০২২ সালের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের ১৮৮ মিনিট গোলশূন্য থাকার রেকর্ডের চেয়েও দীর্ঘ ছিল। তবে তাদের প্রথম গোলটি প্রতিপক্ষ আন্দারসেনের আত্মঘাতী গোলের মাধ্যমে আসে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ