ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ‘ওভারহাইপড’, খেলা হবে একতরফা: হরভজন
Published: 17th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ম্যাচ হবে মোট ১৫টি। তবে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে। ২৩ ফেব্রুয়ারি দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে হতে যাওয়া ম্যাচটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহও তুঙ্গে। দুই সপ্তাহ আগে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের টিকিট ছাড়া হলে এক ঘণ্টার মধ্যেই বিক্রি শেষ হয়ে গিয়েছিল। গতকাল দ্বিতীয় দফায় টিকিট ছাড়া হলে শেষ হয়ে যায় এক মিনিটের মধ্যে।
তবে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি নিয়ে বেশিই মাতামাতি (ওভারহাইপড) হচ্ছে বলে মনে করেন হরভজন সিং। ভারতের এই সাবেক ক্রিকেটারের মতে, দুই প্রতিবেশী দেশের মাঠের লড়াই হবে একতরফা। কারণ, পাকিস্তানের চেয়ে ভারত অনেক বেশি শক্তিশালী।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে ভারত ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলে সিরিজ জিতেছে ৩-০ ব্যবধানে। আর পাকিস্তান দল নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে আয়োজিত ত্রিদেশীয় সিরিজে জিতেছে মাত্র ১ ম্যাচ। দুই দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের উদাহরণ টেনে হরভজন তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে বলেন, ‘এবারের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ওভারহাইপড। কারণ, এই ম্যাচে (লড়াইয়ের) কিছুই নেই। ভারত খুবই শক্তিশালী। আর পাকিস্তান ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে। পাকিস্তানের দলটি ধারাবাহিক নয়। আর আপনারা যদি ভারতের ব্যাটসম্যান ও বোলারদের সঙ্গে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যান-বোলারদের পরিসংখ্যানের পার্থক্য দেখেন, তাহলেই পরিষ্কার ছবি পেয়ে যাবেন।’
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ যেকোনো সময়ই তুঙ্গে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়; টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়িতেই যা বোঝা গেছে। ভারতের হয়ে ১০ বছর আগে সর্বশেষ খেলা হরভজনের ধারণা, রোহিত শর্মা ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের লড়াইটা জমবে না, ‘(মানুষের আগ্রহের কারণে) টিকিটের দাম অনেক বেড়েছে। কিন্তু আমার মনে হয় না দর্শক যতটা প্রত্যাশা করছেন, ততটা লড়াই মাঠে দেখা যাবে। ২৩ ফেব্রুয়ারির ওভারহাইপড ম্যাচটি আমার তো মনে হয় একতরফা হবে।’
একতরফা ম্যাচের সপক্ষে কিছু যুক্তিও তুলে ধরেছেন হরভজন। এ ক্ষেত্রে দুই খেলোয়াড়ের নাম ধরে তিনি বলেন, ‘দুই দলের মধ্যে শক্তির পার্থক্য অনেক। বাবর আজম আর রিজওয়ানকে বাদ দিলে পাকিস্তান দুর্বল দল। এ দুজন বাদে অন্য কেউ হাল ধরার মতো নেই। তাদের বোলাররাও ছন্দে নেই।’
শুধু বলেই যাননি, পরিসংখ্যানও তুলে ধরেছেন ভারতের সাবেক অফ স্পিনার, ‘পাকিস্তানের প্রধান ব্যাটসম্যান বাবর, ভারতের বিপক্ষে তার গড় ৩১। অথচ একজন শীর্ষ ব্যাটসম্যানের গড় হওয়ার কথা ৫০। ভারতের বিপক্ষে রিজওয়ানের গড় ২৫। ফখর জামান একমাত্র ব্যাটসম্যান, যার গড় ৪৬। সে-ই ভারতের কাছ থেকে ম্যাচ বের করে নিতে পারে। কিন্তু এর বাইরে ওদের ব্যাটিং সাহস জোগায় না। ভারতের বিপক্ষে ফাহিম আশরাফের গড় সাড়ে ১২, সৌদ শাকিলের মাত্র ৬। আমি যখন পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপের দিকে তাকাই, এ দলটা ভারতের বিপক্ষে লড়াই করতে পারবে বলে মনে হয় না।’
পাকিস্তান ব্যাটসম্যানদের বিপরীতে ভারতীয়দের তুলনায় হরভজন বলেন, ‘ভারত খুবই শক্তিশালী। রোহিত কিছুদিন আগে রানে ফিরেছে, শুবমান গিলও রানে আছে। অক্ষর প্যাটেল ছন্দে আছে, বিরাট কোহলিও কিছুদিন আগে একটা ফিফটি করল; যদিও আমরা যেভাবে দেখতে অভ্যস্ত, সেই ছন্দে নেই। আমার বিশ্বাস, কোহলি ভালো করবে, কারণ বড় টুর্নামেন্টে সে সব সময়ই জ্বলে ওঠে।’
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত ও পাকিস্তান মুখোমুখি হওয়ার আগে আলাদাভাবে একটি করে ম্যাচ খেলবে। ২০ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে ভারত খেলবে বাংলাদেশের বিপক্ষে, আগের দিন করাচিতে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক পাকিস্তান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব য টসম য ন
এছাড়াও পড়ুন:
গোল যত হোক, যখনই হোক, শেষ পর্যন্ত রিয়ালই জেতে
রিয়াল ৪-৪ সোসিয়েদাদ
(দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ ব্যবধানে রিয়াল জয়ী)
রাফায়েল নাদালকে দেখা যাচ্ছিল সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর গ্যালারিতে। গালে হাত দিয়ে চিন্তা ক্লিষ্ট মুখে বসে ছিলেন। মাঠে তাঁর প্রাণের দল রিয়াল মাদ্রিদ। কোপা দেল রে ফাইনালে উঠতে পারবে কি না, তা নিয়ে নাদালের মতো দুশ্চিন্তায় ছিলেন রিয়ালের আরও অনেক সমর্থক। ১১৫ মিনিটে মাথার এক টোকায় সব দুশ্চিন্তা দূর করলেন আন্তনিও রুডিগার।
আরদা গুলেরের নেওয়া কর্নার থেকে হেডে গোল করেন রিয়াল ডিফেন্ডার। সেমিফাইনাল ফিরতি লেগের ম্যাচে তখন ৪-৪ গোলের সমতা আর দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। তখন নাদালের উল্লাস দেখে কে! বার্নাব্যু গর্জে ওঠার সঙ্গে নাদালও আসন ছেড়ে লাফিয়ে উঠলেন। হাত-পা ছুড়ে উল্লাস প্রকাশ করে মুখের ভঙ্গিটা এমন করলেন যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছুটল!
তা নয় তো কি? গত ফেব্রুয়ারিতে সান সেবাস্তিয়ানে রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে প্রথম লেগ ১-০ গোলে রিয়াল জেতার পর তাদের ঘরের মাঠে ফিরতি লেগ আরও সহজ হবে ভেবে নেওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু গতকাল রাতে ফিরতি লেগের স্কোরকার্ডে লেখা হয়েছে অন্য গল্প। যেখানে ৮ গোলের রোমাঞ্চের মধ্যে আছে রিয়ালের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পও। ফিরতি লেগে তিনবার পিছিয়ে পড়েও ড্র করেছে রিয়াল। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ গোলের জয়ে নিশ্চিত হয়েছে ফাইনাল। আর এতেই আরও একবার প্রমাণ হলো, ম্যাচে গোল যতই হোক, যখনই হোক, শেষ পর্যন্ত রিয়ালই জেতে!
আরও পড়ুনম্যাচসেরার পুরস্কার কেউ পান ডিম, কেউ সিম১১ ঘণ্টা আগেরিয়াল ০-১ গোলে পিছিয়ে পড়েছে ম্যাচের ১৬ মিনিটে। ভিনিসিয়ুসের ডিফেন্স চেরা পাস থেকে দারুণ এক চিপে রিয়ালকে সমতায় ফেরান একাদশের হয়ে নামা এনদ্রিক। ডেভিড আলাবার আত্মঘাতী গোলে ৭২ মিনিটে রিয়াল আবারও পিছিয়ে পড়ে ১-২ গোলে। ৮০ মিনিটে সেই পিছিয়ে পড়ার ব্যবধানই দাঁড়ায় ১-৩। জুড বেলিংহামের ৮২ মিনিটের গোল ও চার মিনিট পর অঁরেলিয়ে চুয়ামেনির গোলে সমতায় ফেরে রিয়াল। কিন্তু যোগ করা সময়ের ৩ মিনিটে মিকেল ওইরাজাবালের গোলে আবারও এগিয়ে যায় রিয়াল সোসিয়েদাদ। শেষ পর্যন্ত রুডিগারে রক্ষা।
সোসিয়েদাদ ম্যাচে একাধিকবার এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত পারেনি