৭১ টেলিভিশনের চাকরিচ্যুত সাংবাদিক ফারজানা রুপা আদালতে বলেছেন, ‌‘বলা হচ্ছে আমি উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়েছি। তাহলে কেন হত্যা মামলা দেয়া হচ্ছে?’

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইশতিয়াকের আদালতে আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলার রিমান্ড শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দিন সরকার ফারজানা রুপা এবং তার স্বামী শাকিল আহমেদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘‘তারা (শাকিল-রুপা) আন্দোলনের সময় উস্কানী দিয়েছে। স্বৈরাচার হাসিনাকে স্বৈরাচার বানাতে সহযোগিতা করেছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।’’

এরপর ফারজানা রুপা বলেন, ‘‘মাননীয় আদালত অনুমতি দিলে আমি কিছু বলতে চাই। রাষ্ট্রপক্ষ যেভাবে উস্কানি দেওয়ার কথা বলছে তাহলে আমাকে সেই উস্কানি দেওয়ার জন্য মামলা দেওয়া হোক। একের পর এক হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। হত্যা মামলা দিয়ে কেন হয়রানি করা হচ্ছে? ৬ মাস ধরে কারাগারে আছি। আগে ৯ দিনের রিমান্ডে ছিলাম। শাকিলও ছিল। আমরা শুনেছি, হত্যা মামলার আসামিকে ঘটনাস্থলে থাকতে হয়। আমি তো ঘটনাস্থলে ছিলাম না। কথা বলার জন্য হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’’

ফারজানা রুপা আরো বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলা হয়েছে। কথা বলার জন্য কেন হত্যা মামলা দেওয়া হবে? হত্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কেন হয়রানি করা হচ্ছে? এই প্রশ্ন আমি আপনার (বিচারক) কাছে রেখে গেলাম।’’ 

এর উত্তরে ওমর ফারুক বলেন, ‘‘ছাত্র আন্দোলনে যারা গুলি করেছে তারা যেমন অপরাধী, আর যারা এই হত্যাকাণ্ডে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করেছে তারাও সমান অপরাধী। তাদেরও একই শাস্তি হবে। গত ১৫ বছর শেখ হাসিনার ফ্যাসিজম কায়েম করার জন্য যা যা দরকার শাকিল-ফারজানা তা করেছে। গণভবনে সাংবাদিকের একটা মিটিং হয়েছিল সেখানে তারা ছিল। তারা হাসিনাকে বলেছে, গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, বিদেশে আপনার শত্রু আছে, দেশে শত্রু আছে (একটা দলের নাম দিয়ে বলছে) তাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছে তারা। তিনি (ফারজানা রুপা) বলছেন কথার জন্য উনাকে মামলা দেওয়া হয়েছে।

তখন ফারজানা রুপাকে উদ্দ্যেশ্যে করে বলেন, ‘‘আপনারা ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট বানানোর জন্য যে সহযোগিতা করেছেন। সাংবাদিকদের মধ্যে শাকিল, ফারজানা রুপা, মোজাম্মেল হক, শ্যামল দত্তসহ আরো কয়েকজন আছে তারা সাংবাদিকদের নাম কলঙ্কিত করেছে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা সুবিধা নিয়েছে।’’

এরপর শাকিল কিছু বলতে চাইলে আদালত শুনানি শেষ করে তাদের ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের শাকিল আহমেদ বলেন, ‘‘এটা সুবিচার না অবিচার আগে নির্ণয় করেন। বাংলাদেশে নানা ধরনের সাংবাদিক আছে। সাংবাদিকদের সুবিচার চাই।’’ 

মামুন//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি-প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণ

একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

রীতি অনুযায়ী রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধান উপদেষ্টার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশের কর্মসূচি শুরু হয়।

রাষ্ট্রপতি ১১টা ৫৯ মিনিটে শহীদ মিনারে আসেন। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, একুশে উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান এবং সদস্যসচিব সাইফুদ্দীন আহমেদ।  

আরো পড়ুন:

নতুন বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে সাংবাদিকদের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান

কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমতি দিলেন রাষ্ট্রপতি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রাত ১২টা ১০ মিনিটে শহীদ মিনারে আসেন। তাকেও উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান, একুশে উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান এবং সদস্যসচিব সাইফুদ্দীন আহমেদ অভ্যর্থনা জানান। 

প্রধান উপদেষ্টা রাত ১২টা ১৩ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।  

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা রাত ১২টা ১৬ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক ও হাইকমিশনাররা এরপর পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।  

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর তিন বাহিনীর প্রধান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শুরুতে সেনাবাহিনীর পক্ষে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ১২টা ২২ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান। বিমানবাহিনীর পক্ষে চিপ এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।  

এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) নতুন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।

এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা শ্রদ্ধা জানান। 

পরে ভাষাসৈনিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানান।

একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার রাজপথ ও দেয়াল বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। চারুকলার শিক্ষার্থীরা রাত-দিন খেটে রং-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রতিবাদের নানা ভাষা। শহীদ মিনারের বেদি, কালো রাজপথ, দেওয়াল হেসে উঠছে বর্ণিল আল্পনায়।

ঢাকা/হাসান/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ হত্যার ১৫ বছর পর একই স্থানে ৩ জনকে গুলি করে হত্যা 
  • আদালতের ভেতরে ঢুকে গ্যাংস্টারকে গুলি করে হত্যা
  • আশির দশকের বিয়ে ‘তেলাই থেকে ঘুরানি’
  • কুয়েতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
  • আফগানিস্তানকে ৩১৬ রানের টার্গেট দিলো দ. আফ্রিকা
  • আইসিসির মঞ্চে অভিষেক সেঞ্চুরিতে ভাস্বর রিকেলটন
  • নিখোঁজ সন্তানের খোঁজ চান মা-বাবা
  • সৌরভ গাঙ্গুলীর বায়োপিকের নায়ক কে? জানালেন নিজেই
  • কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল
  • শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি-প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণ