বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম এর অর্থ

‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ একটি আরবি বাক্যবন্ধ; যুগল বাক্য। এর সরল বাংলা অর্থ, পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহতায়ালার নামে (শুরু করছি)। এ বাক্যে ‘শুরু করা’ ক্রিয়াটি উহ্য। এর উদ্দেশ্য যেকোনো ‘কাজ’ বা ‘আমল’ আল্লাহর নামে আরম্ভ করা।

পবিত্র কোরআনের সুরা তাওবা ছাড়া সব সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ লিপিবদ্ধ রয়েছে। এ ছাড়া হজরত নুহ (আ.

)–কে জাহাজে আরোহণের আদেশ দিয়ে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘তিনি বললেন, তোমরা এতে আরোহণ করো আল্লাহর নামে। এর চলা ও থামার (নিয়ন্ত্রক একমাত্র আল্লাহ)।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৪১)।

হজরত সুলাইমান (আ.)-এর ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয় এটা (চিঠি বা বার্তা) সুলাইমানের পক্ষ থেকে। আর নিশ্চয় এটা পরম করুণাময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে।’ (সুরা নামল, আয়াত: ৩০) ইমাম কুরতুবী (রহ.) লিখেছেন, ‘এই আয়াতের তিনটি নির্দেশনার অন্যতম হলো চিঠি বা বার্তায় বিসমিল্লাহ লেখা। আয়াতের ধারাবাহিকতা অনুসারে প্রেরকের নামের পরে বিসমিল্লাহ লেখার বিষয়টিকে ফকিহগণ বৈধ বলেছেন। তবে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে চিঠি, বার্তা বা বাণীর শুরুতে প্রথমে বিসমিল্লাহ লেখা উত্তম। (তাফসিরে কুরতুবী, সুরা নামলের ৩০ নং আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)

আরও পড়ুনদুনিয়ার নারীদের সরদার হজরত ফাতিমা (রা.)১৭ মে ২০২৩

আবু হুরায়রা (রা.)–এর বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক কথা বা কাজ যা আল্লাহর নাম ছাড়া শুরু করা হয়, তা লেজবিহীন বা অসম্পূর্ণ (বরকতশূন্য)।’ (মুসনাদে আহমাদ, ১৪/৩২৯)

চিঠিতে বা বাণীতে প্রথম বিসমিল্লাহ লিখেছেন হজরত সুলাইমান (আ.)। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রথম জীবনে ‘বিসমিকাল্লাহুম্মা’ লিখতেন, এরপর কিছুদিন ‘বিসমিল্লাহির রহমান’ লিখেছেন। সর্বশেষ সুরা নামলে বিসমিল্লাহর পূর্ণাঙ্গ বাক্য নাজিল হওয়ার পর থেকে তিনি সেটা লেখারই প্রচলন করেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) সমকালীন রাজা-বাদশাহদের কাছে বিসমিল্লাহ লেখা চিঠি পাঠিয়েছেন। হুদাইবিয়ার সন্ধিপত্রেও পুরো বিসমিল্লাহ লিখতে আদেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কাফেরদের আপত্তির কারণে পরবর্তীতে ‘বিসমিকাল্লাহুম্মা’ লেখা হয়। (তাফসিরে রূহুল মাআনি; আহকামুল কোরআন লিল জাস্‌সাস, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা. ৮) ঐতিহাসিক মদিনার সনদেও ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ পুরাটা লেখা হয়েছিল। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা. ২২৩)

বিসমিল্লাহ এর ফজিলতআরও পড়ুননবীজি (সা.)-এর মুজিজা২৫ এপ্রিল ২০২৩

‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বাক্যবন্ধটি পবিত্র কোরআনের সুরার অংশ নাকি আলাদা আয়াত, তা নিয়ে ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে অধিকাংশ ফকিহ ও তাফসীরবিদ একে পবিত্র কোরআনের অংশ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

‘বিসমিল্লাহ’ বলে সব শুরু করা সুন্নত। কোনো কোনো ফকিহ বলেছেন, এটা মুস্তাহাব। ইসলামী শরীয়তের মূলনীতি হলো, প্রত্যেক ভালো কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করা উচিত।

আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘যেসব প্রাণীর ওপর আল্লাহর নাম নেওয়া হয়নি, তোমরা সেগুলো ভক্ষণ করো না। কারণ তা গোনাহ।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১২১)

জুল-হুলাইফায় অবস্থানকালে একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাফি ইবনে খাদিজ (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমরা রাসুলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞাসা করলাম, আমরা কি বাঁশের ধারালো চোকলা দিয়ে জবাই করব? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘যা রক্ত প্রবাহিত করে এবং (যা জবাই করার সময়) আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়েছে; তা আহার করো। (বুখারী, হাদিস: ৩,০৭৫) উল্লিখিত কোরআনের আয়াত ও হাদিসের আলোকে ইসলামী শরীয়তের বিধান হলো, ‘বিসমিল্লাহ’ পড়া ছাড়া কোনো প্রাণী জবাই করা হলে তা ভক্ষণ করা ‘হালাল’ নয়।

এ ছাড়া আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ খাওয়া শুরু করে, তখন সে যেন বিসমিল্লাহ বলে। আর যদি সে (খাওয়ার শুরুতে) বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে যায় তবে সে যেন বলে, বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু। (আবু দাউদ, হাদিস: ৩,৭৬৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৫,১০৬)

আরও পড়ুনমারা গেলে নয়, সব সময় বাবা-মায়ের জন্য দোয়া করা২০ মার্চ ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক রআন র বল ছ ন কর ছ ন আল ল হ

এছাড়াও পড়ুন:

কালিমা শাহাদাত সত্য সাক্ষ্য

ইসলাম হলো সত্যকে গ্রহণ করা এবং অসত্যকে পরিহার, পরিত্যাগ বা বর্জন করা। ইমান বা বিশ্বাসের মূল কথা হলো কালিমা। কালিমা শাহাদাত হলো ইমান ও ইসলামের পঞ্চ ভিত্তির অন্যতম ভিত্তি। কালিমা অর্থ শব্দ, বাণী বা বাক্য; শাহাদাত অর্থ সাক্ষ্য দেওয়া। কালিমা শাহাদাত অর্থ সাক্ষ্য বাণী। কালিমা শাহাদাত ফারসিতে হয় ‘কালেমায়ে শাহাদাত’; মূল আরবিতে হবে ‘কালেমাহ শাহাদাত’ বা ‘আল কালিমাতুশ শাহাদাত’।

কালিমা শাহাদাত

কালিমা শাহাদাতে এই ঘোষণাই দেওয়া হয়, ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু; ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু

কালিমা শাহাদাত এর অর্থঅর্থাৎ ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে এক আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো মাবুদ নাই, তিনি এক ও একক, তাঁর কোনো শরিক বা অংশীদার নাই; আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি নিশ্চয়ই হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তায়ালার অতি প্রিয় খাস বান্দা ও তাঁর প্রেরিত রাসুল।’

মহান আল্লাহ তায়ালা হলেন পরম সত্য বা মহাসত্য। এই সত্যের সাক্ষ্যই হলো ইমান বা ইমানের দাবি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব প্রিয় নবী আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) হলেন মহাসত্যবাদী ও পরম বিশ্বাসী বা বিশ্বস্ত ব্যক্তি। তাঁর সত্য নবুয়ত ও রিসালাতের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন ও নিঃশর্ত সাক্ষ্য প্রদান ইমানেরই অংশ। তাঁর প্রতি আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা হলো ইমান। তাঁর আনুগত্য ও অনুসরণ হলো ইসলাম।

সাক্ষ্য দেওয়ার পূর্বশর্ত হলো প্রত্যক্ষ করা বা স্বচক্ষে অবলোকন করা বা দেখা। মহান আল্লাহ তায়ালা এমনই পরম সত্য, যা দৃশ্যমান হওয়া দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট; তাই এটি প্রত্যক্ষকারীদের অপেক্ষা রাখে না। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সততা ও সত্যবাদিতা জগৎ–খ্যাত ও প্রশ্নাতীত। যারা তাঁর জানের দুশমন ও প্রাণের শত্রু ছিল, তারাও তাঁর সত্যতা ও বিশ্বস্ততার প্রতি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। এ বিষয় দুটি উদ্ধৃত হয়েছে এভাবে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মালিকুল হাক্কুল মুবিন, মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহি ছদিকুল ওয়াদিল আমিন।’ অর্থাৎ ‘এক আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো মাবুদ নেই, তিনি শাসক অধিপতি, তিনিই সুস্পষ্ট ও পরম সত্য; হজরত মুহাম্মদ (সা.) মহান আল্লাহর প্রেরিত রাসুল, চরম সত্যবাদী, ওয়াদা ও অঙ্গীকার রক্ষাকারী এবং পরম বিশ্বস্ত ও অতি বিশ্বাসী। (আল মুফরাদাত, বুখারি)। সব নবী ও রাসুল সত্যবাদী ছিলেন। আল্লাহ তায়ালা কোরআন কারিমে বলেন, ‘আপনি এই গ্রন্থে হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর বিষয় আলোচনা করুন, নিশ্চয় তিনি ছিলেন সত্যবাদী নবী।’ (সুরা- মারিয়াম, আয়াত: ৪১)।

আরও পড়ুনআল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন নবী সোলায়মান (আ.) ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইসলামের শিক্ষাসমূহের প্রধান তিনটি শিক্ষা হলো:

সত্যতা, পবিত্রতা ও প্রেম। আল্লাহ তায়ালাকে পেতে হলে তাঁর প্রতি প্রেম থাকতে হবে; তাঁর প্রিয়তম মানুষ হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসা থাকতে হবে, থাকতে হবে পূর্ণ আনুগত্য; এটাই হলো প্রেম।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র, তিনি ‘সুব্বুহুন কুদ্দুস’ তথা পরম পবিত্র; তাঁর প্রিয় হাবিব হজরত মুহাম্মদ (সা.) সর্বদা পবিত্র জীবন যাপন করেছেন। তাই আল্লাহ ও তাঁর রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রেমিক হতে হলে তাকে পবিত্র জীবন যাপন করতে হবে; এটাই হলো পবিত্রতা।

ইমান ও ইসলামের জন্য যেহেতু জীবনের পবিত্রতা শর্ত, তাই বিশ্বাসী মোমিন বান্দাকে সদা সত্যাশ্রয়ী হতে হয়; এটাই হলো সত্যতা। আশেক ও মাশুকের মাঝে আড়াল থাকে না, সুতরাং এখানে মিথ্যার অনুপ্রবেশের সুযোগই থাকে না। মিথ্যার ধূম্রজাল হলো বেড়া বা আড়াল; মিথ্যা যেখানে আসে সেখানে প্রেম থাকে না।

সত্যতা মানুষকে সব কলুষ ও কালিমা থেকে পবিত্র করে, পবিত্রতা মানুষের মাঝে প্রেমভাব জাগ্রত করে; শুদ্ধাচারের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে, শুদ্ধাচার বা পবিত্রতা মানুষকে সত্যতা বা পরম সত্যে উপনীত করে।

সত্য সাক্ষ্যদানের মাধ্যমেই মোমিনের ইমানের সূচনা হয়; তাই মোমিন ব্যক্তির সারা জীবন এই সত্যকে আঁকড়ে ধরে রাখতে হয়; এ যে তার ইমান, তার বিশ্বাস। বিশ্বাসের সঙ্গে প্রতারণা বা বিশ্বাসঘাতকতা আত্মপ্রবঞ্চনার শামিল।

সত্য ব্যতীত মানুষ মোমিন হয় না; মুসলমান কখনো অসত্য বলে না। ইসলামে সব সময় সত্য বলা ও সত্য সাক্ষ্য দেওয়া ফরজ ইবাদত ও জরুরি কর্তব্য বলে পরিগণিত। এই সত্যতা মনোজগতে, চিন্তাচেতনায়, কল্পনায় ও পরিকল্পনায়। এই সত্যতা মুখের ভাষায়। এই সত্যতা যাবতীয় কর্মকাণ্ডে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গে। সত্যতা বা সততা প্রতিটি কদমে বা পদক্ষেপে; সত্যতা বা সততা প্রতিটি ছোঁয়া বা স্পর্শে; সত্যতা বা সততা প্রতিটি দৃষ্টি–পলক বা ভ্রু-কুঞ্চনে; সত্যতা বা সততা প্রতিটি ধ্বনিতে, প্রতিটি শব্দে ও প্রতিটি বাক্যে; সত্যতা বা সততা প্রতিটি শ্রবণে ও অনুভবে।

আরও পড়ুননামাজ বিশ্বাসীদের কাছে মিরাজ ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

অসত্য ভাষণ, মিথ্যা বিবৃতি, মিথ্যা অভিযোগ, মিথ্যা সাক্ষ্য সমাজকে কলুষিত করে। এর দ্বারা ন্যায়বিচার বা সুশাসনের বিলুপ্তি ঘটে। সৎশাসনের অভাবে সমাজে অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম, অনাচার বেড়ে গিয়ে অরাজকতার সৃষ্টি হয়।

সত্যের বিপরীত হলো মিথ্যা বা অসত্য। মিথ্যা বলা হারাম ও চরম পাপকার্য। হাদিস শরিফে রয়েছে, ‘মিথ্যা পাপের জননী।’ (বুখারি শরিফ)। ‘সত্য মানুষকে মুক্তি দেয়, মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।’ কারণ, মানুষ যখন হারাম বা পাপকার্য সংঘটন করে, তখন তার ইমান বা বিশ্বাস তার সঙ্গে সক্রিয় থাকে না। তখন তার ইমান বা বিশ্বাস তার থেকে আলাদা হয়ে শূন্যে ঝুলতে থাকে; যতক্ষণ পর্যন্ত সে ওই মিথ্যায় বা পাপে লিপ্ত থাকে। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)। পুনরায় তওবা করে অনুতপ্ত হয়ে মিথ্যা ও পাপ বর্জনের দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করলেই ইমান আবার তার কাছে ফিরে আসে। (ফাতাওয়া আলমগিরি)।

মিথ্যার পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা জগতে ভ্রমণ করো ও দেখো, মিথ্যাবাদীদের কী পরিণতি হয়েছিল!’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩৭)।

আরও পড়ুনঅর্থ বুঝে নামাজ পড়ার ফজিলত১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রোজ কিয়ামতে হাশরের ময়দানে বিচারের সময় মানুষ নিজের প্রতি সাক্ষ্য দেবে। যারা ইহজগতে মিথ্যা বলে অভ্যস্ত তারা পরকালে মিথ্যা; তারা নিষ্পাপ পবিত্রাত্মা ফেরেশতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলবে। তখন মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের জবান বন্ধ করে দিয়ে তাদের পাপ সম্পাদনকারী অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সাক্ষ্য নেবেন। ‘আজ আমি তাদের মুখে সিলমোহর করে দেব; তাদের হস্তসমূহ আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদের পাগুলো সাক্ষ্য দেবে, যা তারা (মিথ্যা-পাপ) অর্জন করেছিল। (সুরা-ইয়াসিন, আয়াত: ৬৫)। এমতাবস্থায় গত্যন্তর না দেখে কিছু লোক সত্য স্বীকার করবে (যদিও সেদিন তা কোনো কাজে আসবে না)।

একমাত্র সত্য সাক্ষ্য ও ন্যায় বিধানই পারে সমাজে দেশে বা রাষ্ট্রে শাস্তি বজায় রাখতে ও শৃঙ্খলা আনতে। আল্লাহ ন্যায়বান, তিনি ন্যায়বিচার করবেন।

প্রতিটি হারাম কর্ম ও হারাম বস্তু কবিরা গুনাহ বা বড় পাপ। মিথ্যা হলো পাপের আকর বা মহাপাপ। স্বেচ্ছায় অভ্যাসে প্রকাশ্যে কবিরা গুনাহ করলে এবং তা থেকে খাঁটি তাওবা না করলে তাকে ফাসিক বলা হয়। ফাসিক অর্থ গুনাহগার বা পাপাচারী; ইসলামি আদালতে ফাসিকের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ সে কালিমা শাহাদাতের সাক্ষ্য ভঙ্গ করেছে। সুতরাং মোমিনের উচিত মৃত্যু পর্যন্ত সারা জীবন কালিমা শাহাদাতের সাক্ষ্যের ওপর দৃঢ় অবিচল থেকে স্বীয় ইমান ও ইসলাম রক্ষা করা।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি, সহকারী অধ্যাপক, আহ্‌ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম।

আরও পড়ুনকবর জিয়ারতে কী করব, কী করব না১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বইমেলায় মোজাফ্‌ফর হোসেনের দুইটি বই
  • কালিমা শাহাদাত সত্য সাক্ষ্য