এটিএম বুথের সামনে প্রবাসীকে কুপিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
Published: 17th, February 2025 GMT
কুমিল্লায় এটিএম বুথের সামনে এক প্রবাসীকে কুপিয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা নগরীর রেইসকোর্স এলাকায় নিশা টাওয়ারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ছিনতাইয়ের শিকার ওই প্রবাসীর নাম নূর মুনতাকিম। তিনি নগরীর বাদুরতলা এলাকার মোহাম্মদ মোসলেমের ছেলে। তিনি একজন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
মুনতাকিমের ভাই নূর মোহাম্মদ আব্দুল মুকিত মুঠোফোনে বলেন, আমার ভাই প্রবাসী। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরেছেন। রোববার সন্ধ্যায় বন্ধু মাসুদের সঙ্গে বের হন। দুই বন্ধু মোটরসাইকেলে করে নিশা টাওয়ারের সামনের ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তুলতে যান। টাকা তুলে বের হলে ১০-১২ জন ছেলে তার ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা লাঠিসোটা, রড ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার ভাইয়ের ওপর হামলা করে।
তিনি আরও বলেন, তারা আমার ভাইয়ের হাত-পা, ঘাড়, পিঠ ও মাথায় আঘাত করে। এ সময় তারা ভাইয়ের বন্ধু মাসুদকেও মারধর করে। তারা চলে যাওয়ার পর ভাই আমাদের কল দিলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি তিনি রাস্তায় পড়ে আছেন। সেখান থেকে আমরা তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিতে চাইলে ওই ছেলেরা আবার চলে আসে। তারা আমার ভাইকে হাসপাতালে নিতে দেয়নি। তারা বলেছে, হাসপাতালে নিলে মামলা হবে। এতে চিকিৎসা দেওয়া ছাড়াই ভাইকে নিয়ে আমরা বাড়িতে চলে এসেছি।
মুকিত বলেন, আমার ভাইয়ের কাছে বুথ থেকে উঠানো টাকাসহ ৪০ হাজার টাকা ছিল। হাতের ডায়মন্ড রিং, গলায় স্বর্ণের চেইন এবং আইফোনটিও তারা নিয়ে যায়। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করছি।
আজ সোমবার কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে হামলায় অংশ নিতে যাদের দেখা গেছে তারা সকলেই ওই প্রবাসীর কাছের লোক ও পূর্ব পরিচিত। টাকা নিয়ে বিরোধে এ ঘটনা। এ বিষয়ে এখনো থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। উভয়পক্ষ বসে ঘটনা মীমাংসা করবে বলে জানিয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চুরি-ছিনতাই-খুন প্রতিরোধে তৎপরতা বাড়িয়েছি: র্যাব ডিজি
দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, খুন ও ডাকাতি প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে র্যাবের টহল ও চেকপোস্ট পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র্যাবও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
শহিদুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালাচ্ছে। এসব অপরাধ দমনে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র্যাব ফোর্সেসও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। এরইমধ্যে র্যাবের সব ব্যাটালিয়ন তাদের নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় রোবাস্ট প্যাট্রোলিং পরিচালনা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিরতিহীনভাবে অতিরিক্ত টহল মোতায়েনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
র্যাব ডিজি বলেন, ব্যাটালিয়নগুলোতে নিজস্ব কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ঢাকাসহ সারাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য র্যাব বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব মেট্রোপলিটন শহর, জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন, পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের খুন, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি এবং চাঞ্চল্যকর সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ার, জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেল এবং জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি সেলিম আশরাফি ওরফে চুয়া সেলিমসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব ডিজি আরও বলেন, সব মেট্রোপলিটন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরগুলোতে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী থেকে ৪০ জন, ময়মনসিংহে ২৫ জন, রাজশাহী থেকে ২৪ জন, সিলেট থেকে ১৭ জন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৫ জনসহ মোট ১৮০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার এবং অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব। এ ছাড়া সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বিএইচ