প্রিমিয়ার লিগের সঙ্গে প্রায় এক দশকের সম্পর্ক তাঁর। ‘মিসরের রাজা’ উপাধি নিয়ে লিভারপুলের হয়েই খেলেছেন প্রায় আট বছর। তাঁর জাদুতেই মিসরীয় ফুটবল সম্পর্কে উজ্জ্বল ধারণা ইংল্যান্ডে। সেই মোহামেদ সালাহ শেষের শুরুতে দাঁড়িয়ে। হয়তো এই মৌসুমেই শেষবারের মতো তাঁকে দেখা যাবে এই লিগে। তবে রাজার প্রস্থানের সময় যেন এক মিসরীয় যুবরাজ পেয়ে গেল ইংলিশ লিগের দর্শকরা। নাম তাঁর ওমর মারমুশ। বছর ছাব্বিশের এই মিসরীয় ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে শনিবার এক উত্থানের গল্প লিখেছেন।
নিউ ক্যাসলের বিপক্ষে মাত্র ১৩ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের মধ্যেই ৩ গোল করেছেন এই মিসরীয় ফরোয়ার্ড। তাঁর এই হ্যাটট্রিকের সুবাদেই ম্যাচটি সিটি ৪-০ গোলে জয় পেয়েছে। ২৫ ম্যাচে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে এখন তালিকার চতুর্থতে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলটি। সামনের সপ্তাহেই রিয়াল মাদ্রিদের উঠানে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ, তার আগে মিসরীয় এই যুবরাজকে পেয়ে স্বস্তি কোচ পেপ গার্দিওলার মধ্যে। ‘জার্মানিতে খেলার সময়ই মারমুশ তার প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছে। সে এমন একজন খেলোয়াড়, যার অসাধারণ গতি রয়েছে, যে কিনা দারুণ দক্ষতায় বল পায়ে ফাঁকা জায়গা খুঁজে নিতে পারে। আজকের গোলগুলো তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে।’
ম্যানসিটিও এরই মধ্যে তাঁকে ‘ফারাও অব ম্যানচেস্টার’ হিসেবে তাদের ফেসবুকে সমর্থকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। গতি, ড্রিবল, উইঙ্গার-স্ট্রাইকারের ভূমিকা; এমন অনেক কিছুতেই সালাহর সঙ্গে মারমুশের অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায়। দলের অনেকে চোটাঘাতে থাকায় এই জানুয়ারিতেই ৭ কোটি ইউরোয় দলে ভেড়ানো হয় মারমুশকে। এর আগে তিনি জার্মান ক্লাব আইনট্রাখট ফ্রাংকফুর্টের হয়ে খেলেছিলেন। সেখানে মৌসুমের প্রথমার্ধে ২৬ ম্যাচে ২০ গোল করেছিলেন। গার্দিওলা যখন ম্যানসিটির কর্মকর্তা জিকি বেগরিস্টেইনকে তাঁর কিছু ফুটলার লাগবে বলে এগোতে বলেন, তখনই সামনে আসে এই মারমুশের নাম।
‘জিকিকে বলেছিলাম, যত বেশি খেলোয়াড় আনা যায়, তত ভালো হবে। আমি আমার কিছু জার্মান বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে মারমুশ সম্পর্কে জানতে পারি। আচরণ, অনুশীলন, গোল; তা ছাড়া বয়সেও তরুণ– সব মিলিয়ে মারমুশকে আনার সিদ্ধান্ত হয়।’
পেপ যে হীরা চিনতে ভুল করেন না, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। মারমুশ মিসরীয় হলেও তাঁর বেড়ে ওঠা কানাডায়। বাবা-মা সেখানকার নাগরিত্ব পাওয়ায় প্রথম ছয় বছর তাঁর কানাডায় কাটে। এর পর মিসরে ফিরে যাওয়া, সেখান থেকে জার্মানি। ২০১৭ সালে জার্মান ক্লাব উলফসবার্গের হয়ে প্রথম তিন বছর রিজার্ভ বেঞ্চেই কাটিয়ে দিয়েছেন। এর পর সেন্ট পাউলি, স্টুর্টগার্ট হয়ে ফ্রাংকফুর্টে। সিটিতে এসেও প্রিমিয়ার লিগে গোলের প্রথম খাতা খুললেন তিনি হ্যাটট্রিক ম্যাচ দিয়ে।
সিটির হয়ে টানা তিন মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ১১ বার হ্যাটট্রিক করেছেন আর্লিং হালান্ড। এবার তাঁর সঙ্গ বোধ হয় আরেক হ্যাটট্রিক ম্যানকে পেয়ে গেলেন পেপ গার্দিওলা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
পুরাতন গঠনতন্ত্রেই হচ্ছে গকসু নির্বাচন
দীর্ঘ ৭ বছর পর অবশেষে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। তবে ২০২২ সালের পুরাতন গঠনতন্ত্রেই অনুষ্ঠিত হবে বহুল প্রতীক্ষিত এ নির্বাচন। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঠিক করতে এরই মধ্যে গঠিত হয়েছে ৯ সদস্যের নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি জনসম্মুখে আসে। তিনি গত রবিবারে (২৩ মার্চ) এ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন। এতে ৯ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশনের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. রফিকুল আলমকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার এ. কে. এম. সাইফুল্লাহকে কমিশনের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন— ফার্মেসি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মোকলেছুর রহমান সরকার, ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নিরঞ্জন বিশ্বাস, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. ফুয়াদ হোসেন, ফলিত গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কনক চন্দ্র রায়, রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. আলী আজম খান, নীতিবোধ ও সমতার সহকারী অধ্যাপক কাজী মাহফুজা হক এবং আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারাহ ইকবাল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের শুধু প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। অনিয়মিত শিক্ষার্থী (ডিটেইন/পুনঃভর্তি) এবং অনার্স সম্পন্ন করার পর এক বছরের (দুই সেমিস্টার) বেশি সময় নিয়ে মাস্টার্স বা অন্য কোনো শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
এতে ভোটার তালিকা নিয়ে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। এছাড়া গঠনতন্ত্রের বিধি ১২ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সভাপতি করে ১৪ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হবে।
এদিকে, নির্বাচনী কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে মাস্টার্সের চলমান ভর্তি কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
গত ২০১৮ সালের সর্বশেষ গকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী