মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রীবাহী বাস, ট্রাকসহ তিনটি গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বাসের যাত্রীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে শ্রীনগর ফেরিঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোর থেকে ঘন কুয়াশা ছিল। সামান্য দূরেও কিছু দেখা যাচ্ছিল না। এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে একটি পিকআপ ভ্যান ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে পিকআপটি শ্রীনগর ফেরিঘাট এলাকায় পৌঁছায়। ঘন কুয়াশার মধ্যে পেছন থেকে একটি কাভার্ড ভ্যান ওই পিকআপকে সজোরে ধাক্কা দেয়। সেখানে ইমাদ পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস আবার ওই কাভার্ড ভ্যানকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনটি গাড়ির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। পিকআপ ভ্যানের চালকের সহকারী এবং বাসের যাত্রীরা আহত হন। দুর্ঘটনার পরপর ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশ এসে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে।

হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের জিলানী বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পিকআপ ভ্যানের চালকের সহকারী এবং বাসের ১০ থেকে ১২ জন যাত্রীকে আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ মারা যাননি। তবে পিকআপ ভ্যানের চালকের সহকারী গুরুতর আহত। ঘটনার পর সড়ক থেকে যানবাহন সরানোর কাজ চলছে। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলো জব্দ করে হাসাড়া হাইওয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প কআপ ভ য ন দ র ঘটন শ র নগর

এছাড়াও পড়ুন:

কুমারখালীতে অন্যরকম আনন্দ শোভাযাত্রা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে অন্যরকম আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, বাংলা সাহিত্যের অমর কথা সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন, ফকির লালন সাঁই ও গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথসহ অন্তত ৩৮ জন বিখ্যাত মনীষীর দেখা মিলেছে। তবে, তারা আসল নয়, ডামি। ডামি হলেও তাদের মাধ্যমে দারুণভাবে ফুটেছে বিখ্যাত ব্যক্তিদের চেহারা ও অবয়ব। তাদের দেখে মুগ্ধ নতুন প্রজন্মের দর্শনার্থীরা।

শোভাযাত্রায় বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সচিত্র দেখা গেছে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষ্যে কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমি থেকে শোভাযাত্রা বের করে উপজেলা প্রশাসন। এটি হলবাজার, গণমোড়, থানামোড়, গোলচত্বর, উপজেলা সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় আবুল হোসেন তরুণ অডিটোরিয়াম চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে দই চিড়া খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমির ১২৫ জন সংগীত ও নৃত্যশিল্পী অংশ নেন। 

কুমারখালী সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুহিনা ইসলাম প্রজ্ঞা বলেন, “বৈশাখী শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মীর মশাররফ হোসেনসহ অসংখ্য মনীষীদের দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে।” 

কলেজ ছাত্র শুভ মোল্লা বলেন, “প্রত্যাশার চেয়েও বেশি জাঁকজমক হয়েছে আয়োজন। বন্ধুরা মিলে খুবই আনন্দ করছি।” 

সুবর্ণা খাতুন নামে এক শিশু বলে, “পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে নৃত্য করেছি। দই চিড়া খেয়েছি। খুবই ভালো লাগছে।” 

এবারে বৈশাখের শোভাযাত্রায় মীর মশাররফ হোসেনের ডামি চরিত্রে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান মানু। তিনি বলেন, “প্রতি বৈশাখে একই চরিত্রে থাকি। নিজের কাছে খুবই ভালো লাগে। যতদিন বাঁচি, এ চরিত্রেই থাকতে চাই।” 

পরিচয় জানতেই ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারই নত শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!’ কবিতার কয়েকটি লাইন বলতে থাকেন পান্টি এলাকার মিলন হোসেন। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ডামি ছিলেন। 

নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির ইতিহাস ঐহিত্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে এবং বিখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচিত করতে রবীন্দ্রনাথ, মশাররফ, কাঙাল, বাঘা যতীনসহ ৩৮টি ডামি চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধা, ২৪ এর গণ অভ্যুর্থান, প্যালেস্টাইনের চিত্র দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বলে জানান ডামি পরিচালক কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাস।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাস বলেন, “আনন্দ শোভাযাত্রায় বিখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীদের চরিত্র দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। তা দেখে মুগ্ধ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। ডামি ছাড়াও চিড়া দই খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ