স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে শূন্য পদ পূরণে পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। গতকাল রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় কার্য-অধিবেশন শেষে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ সময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের এ অধিবেশন হয়।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘ডিসিরা নানান রকমের প্রশ্ন করেছেন। বিশেষ করে হাসপাতাল–সংক্রান্ত সমস্যা, মেডিকেল কলেজ–সংক্রান্ত সমস্যা, নানান সমস্যার কথা বলেছেন। সেই সমস্যাগুলো সম্পর্কে আমরা জানি। আমরা চেষ্টাও করছি, সেগুলো অ্যাড্রেস করার জন্য। আমাদের মনে হচ্ছে বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধমূলক কিছু করা উচিত। যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস হচ্ছে; এর কারণগুলো কী, এগুলোর জন্য আমরা কী পদক্ষেপ নিতে পারি, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কী করতে পারি? ছোট ছোট বাচ্চা এখন ই-সিগারেটে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। এগুলো নিয়ে আমরা সচেতনতা বাড়াতে পারি। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের আইন আছে কিন্তু আইনের প্রয়োগটা নেই।’

বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো.

সায়েদুর রহমান বলেন, ‘তাদের (ডিসি) দিক থেকে যেসব ইনপুট এসেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, কিছু জায়গায় অসংগতি যেমন জনবলের অভাব রয়েছে। অবকাঠামো তৈরি হয়ে আছে, সেগুলো ফাংশনাল করা যাচ্ছে না। এ সমস্যাগুলোর কথা তাঁরা বলেছেন। কোথাও ৫০০ শয্যার জায়গায় ১ হাজার ২০০ রোগী থাকছে। কোথাও কোথাও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এগুলো প্রতিষ্ঠা করার চাহিদা রয়েছে বা এগুলো কার্যকর করার জন্য বলেছেন।’ তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের বেআইনি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে, এসব ক্ষেত্রে তাঁরা (ডিসি) আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে যেন আমাদের স্বাস্থ্য কাঠামোর পাশে থাকেন, সে বিষয়ে বলা হয়েছে। সেটা মোটাদাগে এই স্বাস্থ্যের যে জনবল কাঠামো, সেটা নিয়ে আরও ভালো স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব। আমরা তাঁদের কাছে এ আহ্বান জানিয়েছি।’

বিশেষ সহকারী আরও বলেন, ‘আমরা কয়েক দিনে স্পষ্ট দেখেছি যে এন্ট্রি পদে প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি পদে চিকিৎসক প্রয়োজন। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ পদ ও অন্য আধুনিক হাসপাতালগুলোতে আমাদের পদের প্রয়োজনীয়তা আছে। পদ সৃষ্টি এবং এর আর্থিক সংশ্লেষ একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমরা ইতিমধ্যে পাঁচ হাজার পদ সৃষ্টির জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছি। ইউনিয়নেও যেমন পদের ঘাটতি রয়েছে, তেমনি মেডিকেল কলেজেও রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে চেষ্টা করছি আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। অল্প দিনে যদি এ উদ্যোগটি সফল হয়; অল্প দিনে বিশেষ বন্দোবস্তে যদি আমরা নতুন পদে জনবল নিয়োগ করতে পারি; তখন এ সমস্যা থেকে উত্তরণ হবে। শূন্য পদ পূরণের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখন সর্বোচ্চ অ্যাফোর্ড দিচ্ছে। চিহ্নিত করে শূন্য পদ পূরণে যেগুলো স্থানীয় পর্যায়ে সম্ভব সেগুলো স্থানীয় পর্যায়ে, যেগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে সম্ভব সেগুলো পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই শূন্যপদ পূরণ আমাদের একটি অগ্রাধিকার। যেসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের সৃজন করা প্রয়োজন, অন্যান্য ক্ষেত্রে শূন্যপদ পূরণ অগ্রাধিকার।’

এক প্রশ্নের জবাবে বিশেষ সহকারী বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসা নিয়ে যেটুকু অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে, আমরা মনে করি ১২-১৪ হাজার আহতের তুলনায় সে সংখ্যাটা আসলে খুবই কম। অসন্তোষের মাত্রা কোনোভাবেই ১ শতাংশও নয়।’ ওষুধের ভেজাল রোধ করে মান রক্ষায় সব জেলায় মিনি ল্যাব সম্প্রসারণ করতে হবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী।

আরও পড়ুনবিআইডব্লিউটিএতে বড় নিয়োগ, পদ ২৩৬, আবেদন শেষ কাল২ ঘণ্টা আগে

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ৪০ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছি। আমরা কখনোই টাকার দিকে তাকাইনি। আমরা তাদেরকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তাদের চিকিৎসা করার জন্য আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ডাক্তারদেরও এনেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের ট্রমাটা ওইভাবে অ্যাড্রেস করতে পারছি না। এটা (চিকিৎসা নিয়ে অসন্তোষ) আস্তে আস্তে কমে যাবে, আমরা তাদের সমন্বিতভাবে পুনর্বাসনের চেষ্টাও করছি। আমরা তাদের পুনর্বাসন করলে আর অসন্তোষ থাকবে না।’

আরও পড়ুনহার্ভার্ডে বৃত্তি নিয়ে এমবিএ’র সুযোগ বাংলাদেশিদের ২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেশনাল মাস্টার্স, ফি ৩০০ টাকা১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব শ ষ সহক র অসন ত ষ উপদ ষ ট চ ক ৎসক আম দ র মন ত র র জন য পদ প র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

যবিপ্রবিতে ভুয়া বেতন বিল তৈরি অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অভিযোগে আউটসোর্সিং জনবল হিসেবে কর্মরত পাঁচজন অনুপস্থিত কর্মচারীর নামে ভুয়া বেতন বিল তৈরি ও সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানি ‘বিএসএস’ এর সঙ্গে অবৈধ আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে জানা গেছে।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) যবিপ্রবি রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, যবিপ্রবিতে আউটসোর্সিং জনবল হিসেবে কর্মরত অনুপস্থিত পাঁচজন কর্মচারীর তিন মাসের ভুয়া বেতন বিল তৈরি ও সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানি ‘বিএসএস’ এর সঙ্গে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠে যবিপ্রবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার (স্টেট ও নিরাপত্তা শাখা) মো. জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে।

এছাড়া গত মাসের বেতন শিটে কর্মচারীদের স্বাক্ষরে গড়মিল থাকায় অডিট আপত্তি জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিট সেল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

তদন্ত কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এস এম নুর আলমকে আহ্বায়ক ও সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ রিয়াজুল হককে সদস্য সচিব করা হয়েছে ।

এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন, মুন্সী মেহেরুল্লাহ হলের প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রউফ সরকার এবং তাপসী রাবেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ড. নাজনীন নাহার।

ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রুয়েটে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ডিপ্লোমা কোটা বাতিলের দাবি
  • বগুড়ায় এসেনসিয়াল ড্রাগসের ৫৪ জনকে চাকরিচ্যুত
  • যবিপ্রবিতে ভুয়া বেতন বিল তৈরি অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন
  • বেসরকারি সংস্থা নেবে এডুকেশন অফিসার, অভিজ্ঞতা ছাড়াই আবেদন, প্রবেশনে বেতন ৪২,৬০০