চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: পাকিস্তানে ভারত নেই, ভারতের পতাকাও নেই
Published: 17th, February 2025 GMT
এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির একমাত্র দল ভারত, যারা পাকিস্তানে খেলতে যাচ্ছে না। রোহিত শর্মাদের সব ম্যাচ হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) হলেও কিছু ম্যাচ দুবাইয়ে হওয়ার কারণও ভারতই। এমনকি আইসিসি টুর্নামেন্টের আগে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর অধিনায়কেরা আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে অংশ নিলেও ভারতের রোহিত সেখানে যাচ্ছেন না।
এমন প্রেক্ষাপটে লাহোরের গাদ্দাফী স্টেডিয়ামে দেখা গেল অন্য চিত্র। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নেওয়া ৮ দলের মধ্যে ৭ দলেরই পতাকা লাগানো হয়েছে স্টেডিয়ামে। নেই শুধু ভারতের পতাকা। কেউ কেউ বলছেন, ভারত ক্রিকেট দল চ্যাম্পিয়ন ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে যাচ্ছে না বলেই পিসিবি ভারতের পতাকা রাখেনি। যদিও এ বিষয়ে পিসিবির আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, স্টেডিয়ামে মিডিয়া ভবনের ছাদে স্ট্যান্ড ব্যবহার করে বেশ কিছু পতাকা লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের পতাকা উড়তে দেখা যায়। ভারতের হিন্দুস্থান টাইমসের খবরে বলা হয়, ভিডিওগুলো লাহোরের গাদ্দাফী স্টেডিয়ামের। সেখানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের পতাকা আছে। কিন্তু ভারতের তেরঙা পতাকা নেই।
নেওয়াজ নামে এক্স ভেরিফায়েড এক ব্যবহারকারী করাচির ভিডিও উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘করাচিতে ভারতের পতাকা নেই, নিরাপত্তা শঙ্কা দেখিয়ে পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে না আসা একমাত্র দল যারা। পিসিবি অন্যান্য অতিথি দেশের পতাকা রাখলেও ভারতের পতাকা সরিয়ে ফেলেছে।’
পোস্টে পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভিকে সাধুবাদও জানিয়েছেন তিনি।
হিন্দুস্থান টাইমস লিখেছে, গাদ্দাফী স্টেডিয়ামে ভারতের পতাকা না রাখাকে সমর্থকেরা বিসিসিআইয়ের পাকিস্তানে দল না পাঠানোর বিরুদ্ধে পাকিস্তানের জবাব হিসেবে দেখছেন।
সরকারের অনুমতি না থাকায় বিসিসিআই ভারত ক্রিকেট দলকে পাকিস্তানে পাঠাবে না জানানোর পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ঘিরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে সূচিও ঘোষণা করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিসহ পাকিস্তান ও ভারতে আয়োজিত সামনের চারটি আসর ‘হাইব্রিড মডেলে’ আয়োজনের সমঝোতায় নির্ধারিত সময়ে টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভারত ক্রিকেট দল পাকিস্তানে যাবে না বলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির একটি সেমিফাইনাল ও ফাইনাল কোথায় হবে, এখনো নিশ্চিত হয়নি।
এবারের আসরে ভারত খেলছে ‘গ্রুপ-বি’তে। যেখানে ২০ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। এই গ্রুপের অপর দুই দল পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। বুধবার করাচিতে এ দুই দলের ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নবম আসর।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সেবার বিনিময়ে ‘উপহার’ নিতে পারবেন না সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীরা
প্রায় ৪০০টি সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আচরণ সংহিতা (কোড অব কনডাক্ট) তৈরি করেছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সম্প্রতি এ বিষয়ে ১২ পৃষ্ঠার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অ-আর্থিক সংস্থাগুলোর জন্য এ আচরণ সংহিতা প্রযোজ্য।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো সংস্থায় কর্মরত কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পরিবারের সদস্যদের জন্য সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভজনক হতে পারে, এমন কোনো কর্মকাণ্ডে তাঁরা যুক্ত হতে পারবেন না। সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে অস্বাভাবিক কোনো সুবিধাও গ্রহণ করতে পারবেন না তাঁরা। এ ছাড়া সংস্থার অনুমোদন ছাড়া সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে কেউ কোনো উপহার বা মূল্যবান বস্তু গ্রহণ করতে পারবেন না। কোন পরিস্থিতিতে কী উপহার ও সুবিধা গ্রহণ করা যাবে, তার তালিকা করাসহ রেকর্ড সংরক্ষণ করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে বলা হয়েছে।
অ-আর্থিক সংস্থা বলতে বোঝানো হয়েছে, দেশের কোনো আইনের মাধ্যমে তৈরি বা পরিচালিত অথবা আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোনো স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, কমিশন, কাউন্সিল, বোর্ড ইত্যাদি।
অর্থ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ভ্রমণসহ প্রাতিষ্ঠানিক ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কর্মচারীদের শেয়ার, সিকিউরিটিজ বা অন্যান্য আর্থিক সম্পদ কেনাবেচা, লেনদেন ও ধারণ করার ক্ষেত্রে সরকারের প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নিজ সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত হতে পারবেন না কেউ, ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না এবং ব্যক্তিগত লাভের জন্য কিছু করা যাবে না। অন্য কোথাও বৈতনিক বা অবৈতনিক অথবা খণ্ডকালীন চাকরিও করা যাবে না।
বলা হয়েছে, নিজের ধর্মের প্রতি সম্মান বজায় রাখার পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতিও সমানুভূতি প্রকাশ করতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গনির্বিশেষে সবার প্রতি সমান সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করতে হবে। হেনস্তা, বৈষম্য বা অন্য কোনো অস্বস্তিকর আচরণমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে নিজের অফিসে। সেবাগ্রহীতাদের তৃপ্তি বা অতৃপ্তি, সন্তুষ্টি বা অসন্তোষ ইত্যাদি প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
সরকারি কেনাকাটায় কোনোভাবেই আইন বা বিধির ফাঁকে প্রতিযোগিতার ব্যত্যয় ঘটিয়ে দরপত্র ডাকা যাবে না। ক্রয়প্রক্রিয়া এমনভাবে সম্পাদন করতে হবে, যাতে কোনোভাবেই স্বজনপ্রীতি বা পক্ষপাতিত্বের সূত্রপাত না ঘটে। আর অর্থ বিভাগের অনুমোদন ছাড়া কোনো প্রকার বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করা যাবে না। বৈদেশিক মুদ্রায় কোনো দায় সৃষ্টির অঙ্গীকারও করা যাবে না।
আরও বলা হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কেউ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না, চাকরিস্থল ত্যাগও করতে পারবেন না। কাজ করতে পারবেন না কেউ কোনো বিমা কোম্পানির এজেন্ট হিসেবেও।
আচরণ সংহিতা লঙ্ঘন করলে কী হবে—এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। অর্থ বিভাগের একজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা অবশ্য বলেন, সরকার চায় সব সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীই এ আচরণ সংহিতা মেনে চলবেন। এটা লঙ্ঘনের দায়ে কী করা হবে বলা না থাকলেও সরকার চাইলে ব্যবস্থা নিতেই পারবে।