রিটার্ন জমার সময় শেষ, এখন কী করবেন
Published: 17th, February 2025 GMT
ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়ে গেল গতকাল রোববার। যাঁরা রিটার্ন দেননি, তাঁরা এখন কী করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা হতেই পারে। কিন্তু বাস্তবে তার কারণ নেই; মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েনি। রিটার্ন জমার উপায় আছে। শুধু খরচ একটু বাড়বে।
বিষয়টি হলো, এখন রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় করের টাকার ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ আরোপিত হবে। মিলবে না বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত; থাকবে না কর অব্যাহতি। কিন্তু রিটার্ন দিতে পারবেন। তিন দফা সময় বাড়ানোর পর গতকাল রিটার্ন জমার নির্ধারিত সময় শেষ হয়েছে। আজ সোমবার থেকে জরিমানা দিয়ে রিটার্ন দিতে হবে।
কর দিবসে যে পরিমাণ কর অপরিশোধিত থাকবে, তার ওপর ২০২৩ সালের আয়কর আইনের ১৭৪ ধারা অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে অতিরিক্ত কর আরোপ করা হবে। আয়কর রিটার্ন দেওয়ার শেষ দিন হলো কর দিবস।
কীভাবে রিটার্ন দেবেনঅনলাইন ও অফলাইন (কাগুজে)—দুইভাবে এখন রিটার্ন দেওয়া যাবে। অনলাইনে দেওয়ার জন্য ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে রিটার্ন দিতে পারবেন। সে জন্য কারও অনুমতির প্রয়োজন হবে না। সে জন্য ২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। সর্বোচ্চ ২৪ মাসের জন্য ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত এই সুদ আরোপিত হবে; ৩৬৫ দিনই অনলাইনে রিটার্ন দেওয়া যাবে।
অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কার্ড পেমেন্ট (ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড) ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে করদাতারা কর পরিশোধ করতে পারছেন। পাশাপাশি জমা দেওয়া রিটার্নের কপি, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র, আয়কর সনদ, টিআইএন সনদ ডাউনলোড ও প্রিন্ট করার সুবিধা পাচ্ছেন।
এ বছর ১৪ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন এবং আরও ১৪ লাখের বেশি করদাতা ই-রিটার্নের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন।
আপনি যদি কর কার্যালয়ে গিয়ে সনাতনী পদ্ধতিতে কাগুজে রিটার্ন দিতে চান, তাহলে প্রথমেই আপনাকে করের টাকার ওপর ২ শতাংশ সুদ হিসাব করে করের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। অবশ্য এর আগে আপনি বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত এবং কর অব্যাহতি নিতে পারবেন না। এরপর রিটার্ন জমার পর পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে প্রাপ্তি সনদ দেবেন উপ–করকমিশনার।
এবার অন্যবারের মতো কর অঞ্চলগুলোতে তেমন একটা ভিড় ছিল না। এ বছর অনলাইনে রিটার্ন জমা উৎসাহিত করছে এনবিআর। বর্তমানে এক কোটি ১১ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএনধারী আছেন। প্রতিবছর গড়ে ৪০ লাখ রিটার্ন জমা পড়ে। রিটার্ন জমার এ বছরের হিসাব এখনো চূড়ান্ত করেনি এনবিআর।
এনবিআরের কর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন টিআইএনধারীদের দুই-তৃতীয়াংশই রিটার্ন দেন না। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি সেবা পেতে টিআইএন ও রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে অনেকেই শুধু সেবা পেতে টিআইএন নেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আয়কর কমানোর সুযোগ নেই: এনবিআর চেয়ারম্যান
করপোরেট কর ও আয়কর আর কমানোর সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘কর বেশি কমালে সরকারের রাজস্ব আদায় কমে যাবে। তাতে দেশ চালানো কঠিন হবে। সেই বাস্তবতায় কর বেশি কমাতে পারব না। তবে চেষ্টা থাকবে। ’
অবশ্য ব্যবসায়ীরা যেসব বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন, সেগুলো নিরসনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যেসব খাত করছাড় পাচ্ছে, তাদেরও অন্যদের মতো সমান কর দিতে হবে। বৈষম্য থাকবে না। এ ছাড়া কিছু কিছু খাতে কাস্টমস শুল্ক বেশি। সেই হার যৌক্তিকীকরণের চেষ্টা করা হবে।
ঢাকা চেম্বার, সমকাল ও চ্যানেল ২৪–এর যৌথ আয়োজনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক্–বাজেট আলোচনায় এসব কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, আগামী বছর থেকে করপোরেট কর রিটার্ন অনলাইনে দেওয়া যাবে। কমপ্লায়েন্ট করদাতা, অর্থাৎ যে করদাতারা আইনকানুন মেনে চলেন, তাঁদের কাঁচামাল আমদানিতে গ্রিন চ্যানেল ব্যবহারের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
রাজধানীর একটি হোটেলে আজ রোববার আয়োজিত আলোচনায় উপস্থিত আছেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি), বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাছির হোসেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রমুখ। আলোচনা সঞ্চালনা করছেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদ।