ইলন মাস্কের প্রস্তাব খারিজ করল ওপেনএআই পর্ষদ
Published: 17th, February 2025 GMT
যেভাবে টুইটার কিনেছিলেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক, সেভাবে চ্যাটজিপিটির মূল কোম্পানি ওপেনএআই কেনার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবারের চেষ্টায় এখন পর্যন্ত সফলতা পাননি ইলন মাস্ক। ইলন মাস্কের দেওয়া ওপেনএআই কেনার প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।
ইলন মাস্ক একসময় নিজেও ওপেনএআইয়ের উদ্যোক্তা ছিলেন। পরবর্তী সময়ে কোম্পানিটি থেকে বেরিয়ে যান মাস্ক। কিন্তু চ্যাটজিপিটি বাজারে নিয়ে আসার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। বিশ্বের সব বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নে বিনিয়োগ করে। এ নিয়ে এখন রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। এই বাস্তবতায় ইলন মাস্ক ও তাঁর নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক কোম্পানি স্টার্ট এক্সএআইসহ একাধিক গোষ্ঠীর জোট প্রায় ৯ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের দরপত্র দিয়েছিল।
উত্তরে ওপেনএআইয়ের পর্ষদ জানিয়েছে, এই কোম্পানি বিক্রির জন্য নয়। প্রতিযোগীদের সংকটে ফেলার জন্য মাস্কের এই প্রয়াস সম্মিলিতভাবে খারিজ করছে তারা। প্রসঙ্গত, দরপত্রের কথা সামনে আসার পরে পত্রপাঠ তা খারিজ করে দিয়েছিলেন ওপেনএআইয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কর্ণধার স্যাম অল্টম্যানও। উল্টো কটাক্ষ করে এক্সে তাঁর বার্তা, ‘ধন্যবাদ, কিন্তু দরকার নেই। বরং মাস্ক রাজি থাকলে আমরা ৯৭৪ কোটি ডলারে টুইটার কিনতে আগ্রহী।’ তবে টুইটার কেনার বিষয়ে অল্টম্যানের কৌতুক ভালোভাবে নেননি ইলন। অল্টম্যানের পোস্টের জবাবে ইলন শুধু লিখেছেন, ‘প্রতারক’।
২০১৫ সালে মাস্কের সঙ্গে মিলেই ওপেনএআই তৈরি করেছিলেন অল্টম্যান। কিন্তু কে সংস্থাটির নেতৃত্ব দেবেন, তা নিয়ে মতবিরোধের জেরে ২০১৮ সালে পর্ষদ থেকে সরে যান ইলন। এরপর ২০২২ সালে প্রথম চ্যাটজিপিটি বাজারে এনে শোরগোল ফেলে দেয় ওপেনএআই।
প্রথমে অলাভজনক কোম্পানি হিসেবে তৈরি করা হলেও গত বছর ওপেনএআইকে লাভজনক কোম্পানিতে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অল্টম্যান। এ নিয়ে আদালতে গেছেন মাস্ক।
ইলন মাস্ক অবশ্য যা করবেন বলে মনস্থির করেন, তা শেষমেশ করেই ছাড়েন। এ বিষয়ে তিনি অত্যন্ত নির্মম। তিনি টুইটার কিনবেন বলে মনস্থির করার পর তাঁকে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি। এখন ট্রাম্পের প্রশাসনে মাস্ককে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর মূল দায়িত্ব হলো, সরকারের ব্যয় হ্রাস। সে কাজেও তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠুর। তহবিল বরাদ্দ বাতিল করার পাশাপাশি এখন পর্যন্ত অনেক সরকারি কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট ইট র ক ন ইলন ম স ক খ র জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল ও ৭০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির অনুমোদন
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি সিদ্ধ চালের একটি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৭০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির ২টি প্রস্তাবসহ মোট ৩ ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৭৭ কোটি ৫৬ লাখ ১১ হাজার ২০০ টাকা।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় প্রস্তাব ৩টিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় কমিটির সদস্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-১০ এর আওতায় ৫০ হাজার (+৫%) মেট্রিক টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। দেশের সরকারি খাদ্য মজুদ বৃদ্ধি করে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ৫০ হাজার (+৫%) মেট্রিক টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে ৭টি দরপত্র জমা পড়ে। তার মধ্যে ৬টি প্রস্তাব আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লি. ভারত এই চাল সরবরাহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন ৪২৪.৭৭ মা. ডলার হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল ক্রয়ে ব্যয় হবে ২ কোটি ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ মা. ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রা ২৫৯ কোটি ১০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে চালের মোট চাহিদা ৩৯.৭৮ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৯ লাখ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে ক্রয় চুক্তি হয়েছে ৭ লাখ মেট্রিক টন।
সূত্র জানায়, সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে চতুর্থ লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানির জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিএডিসি কর্তৃক সৌদি আরব থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ডিএপি সার আমদানি করা হয়। ইতঃপূর্বে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় গত ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর তারিখে পুনরায় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে সৌদি আরব থেকে চতুর্থ লটে ৪০ হাজার (+১০%) মেট্রিক টন ডিএপি সার বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে ব্যয় হবে ২ কোটি ৫১ লাখ মা. ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩০৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম পড়বে ৬২৭.৫০ মা. ডলার। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিএডিসি কর্তৃক ডিএপি সার আমদানির লক্ষ্যমাত্রা ৮.৭৯ লাখ মেট্রিন টন; এ পর্যন্ত
আমদানি হয়েছে ৪.৫৭ লাখ মেট্রিক টন।
সভায় অপর এক প্রস্তাবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় রাশিয়া থেকে নবম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিএডিসি কর্তৃক রাশিয়া থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে এমওপি সার আমদানি করা হয়। ইতঃপূর্বে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় ২০২৪ সালের ১৬ মে তারিখে পুনরায় চুক্তি নবায়ন করা হয়। সার আমদানি চুক্তি অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে রাশিয়া থেকে নবম লটে ৩০ হাজার (+১০%) মেট্রিক টন এমওপি সারের বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে ৯১ লাখ ৯১ হাজার ১০০ মা. ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১২ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ২০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন এমওপি সারের দাম পড়বে ৩০৬.৩৭ মা. ডলার। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিএডিসি কর্তৃক এমওপি সার
আমদানির লক্ষ্যমাত্রা ৫.৭৯ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে আমদানি করা হবে ২.৫৯ লাখ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ১.২৩ লাখ মেট্রিক টন।
ঢাকা/হাসনাত/ফিরোজ