Prothomalo:
2025-03-24@01:09:35 GMT

সুযোগ যেন হাতছাড়া না হয়

Published: 17th, February 2025 GMT

সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একধরনের টানাপোড়েন চলছিল বেশ কিছুদিন থেকেই। প্রকাশ্যে বক্তৃতা–বিবৃতিও দিয়েছেন কেউ কেউ। আবার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও নানা বিষয়ে মতভেদ পরিলক্ষিত হচ্ছিল।

এই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপটি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করি। এই সংলাপে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক কমিটি, ইসলামী আন্দোলন, এলডিপি, নাগরিক ঐক্য, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), খেলাফত মজলিস, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদসহ ২৭টি দল ও জোটের প্রায় ১০০ রাজনীতিক অংশ নেন।

সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও প্রায় সব রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতারা বক্তব্য দেন। প্রধান উপদেষ্টা ছয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার এ প্রয়াসকে অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় হিসেবে অভিহিত করেন। 

দেশের নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলো ইতিমধ্যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। পুরো সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি ও আলী রীয়াজকে সহসভাপতি করে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছিল। মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় মাস।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে রাজনৈতিক দলগুলোকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, অন্তর্বর্তী সরকার কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবে না। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোই সিদ্ধান্ত নেবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চূড়ান্ত লক্ষ্য সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করা।

তবে রাজনৈতিক দলের নেতাদের কণ্ঠে ঐকমত্যের বিষয়ে আশাবাদের কথা শোনা গেলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ও নির্বাচনের সময়ের বিষয়ে ভিন্নমত আছে। অনেক দল ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছে। আবার কোনো কোনো দল ব্যাপকভিত্তিক সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছে। জাতীয় নির্বাচন আগে না স্থানীয় নির্বাচন আগে হবে, তা নিয়েও বিতর্ক আছে। 

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেছেন, শিগগিরই দল ও জোটভিত্তিক আলোচনা শুরু হবে। ইতিমধ্যে ৬টি সংস্কার কমিশন তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো চাইলে ঐকমত্য কমিশন থেকে মুদ্রিত কপিও সংগ্রহ করতে পারবে। 

প্রধান উপদেষ্টা ভবিষ্যতে একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছেন, যাতে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা আর কখনোই ফিরে না আসতে পারে। এ বিষয়ে মোটাদাগে কোনো রাজনৈতিক দলের দ্বিমত আছে বলে মনে হয় না। অন্তত প্রকাশ্যে সে কথা কেউ বলেননি। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তর্কবিতর্ক হতে পারে, কিন্তু কতিপয় বিষয়ে তাদের একমত হতেই হবে। গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য নির্বাচন যে জরুরি, এ কথা কেউ অস্বীকার করবে না। আবার ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো সুদৃঢ় করতে সংস্কারকেও অগ্রাহ্য করা যাবে না। 

সর্বোপরি গুরুত্বপূর্ণ হলো সংলাপের মধ্য দিয়ে যে সনদ তৈরি হবে, সেটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর একাগ্রতা ও আন্তরিকতা। প্রধান উপদেষ্টা যাকে জাতির সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, তার সদ্ব্যবহার করা যাবে কি না, তা পুরোপুরি নির্ভর করবে রাজনৈতিক বোঝাপড়ার ওপর। রাজনৈতিক দলগুলো অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেবে আশা করি। তবে তাদের সেই বিখ্যাত বাণীও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ‘ইতিহাসের এটাই শিক্ষা যে, কেউ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না।’ 

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

১৬ বছরে ভোটার, ২৩ বছরে প্রার্থী করার প্রস্তাব রাখবে এনসিপি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে ভোট দেওয়ার বয়স ১৬ বছর, আর নির্বাচনে প্রার্থীর বয়স ২৩ বছর করার প্রস্তাব দেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর রূপায়ণ সেন্টারে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার।

তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (রোববার) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার সুপারিশমালা জমা দেওয়া হবে। সেখানে ভোট দেওয়ার বয়স ১৬ বছর এবং নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ২৩ বছর করার প্রস্তাব করবে এনসিপি।’

গণঅভ্যুত্থানের পর সংবিধান আর কার্যকর নেই উল্লেখ করে নতুন সংবিধান রচনা করার দাবি জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা।

সারোয়ার বলেন, ‘এনসিপি মনে করে, আগামী নির্বাচন গণপরিষদ হওয়া উচিত। সংবিধান সংস্কার কাজ শেষ করে একটা নির্দিষ্ট সময় পর এই গণপরিষদই আইন সভায় রূপান্তরিত হবে।’

আওয়ামী লীগকে দেশবিরোধী শক্তি উল্লেখ করে তুষার বলেন, দলটি রাজনীতিতে ফিরলে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে।

এর আগে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ ও বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঁচ সদস্যের সংস্কারবিষয়ক সমন্বয় কমিটি গঠন করে এনসিপি। কমিটিতে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সারোয়ার তুষারকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- মনিরা শারমিন, জাবেদ রাসিন, সালেহ উদ্দিন ও আরমান হোসাইন।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে ভোটার হওয়ার বয়স ১৮ বছর। আর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ২৫ বছর, যা এবার কমিয়ে আনার প্রস্তাব রাখতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেটে বিএনপির নিষ্ক্রিয় নেতাদের দলে ফেরা নিয়ে গুঞ্জন
  • টিক চিহ্ন নয়, আলোচনায় মতামত তুলে ধরবে সিপিবি
  • খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করে ইফতার ও দোয়া মাহফিল
  • সব পক্ষের ধৈর্য ও বিচক্ষণতা কাম্য
  • সংস্কার প্রস্তাবে অনির্বাচিতদের ক্ষমতায়নের চেষ্টা
  • এনসিপির প্রস্তাব: ভোটারের বয়স ১৬, প্রার্থীর ২৩
  • ভোটারের ১৬, প্রার্থীর ২৩ বছর বয়সের প্রস্তাব রাখবে এনসিপি
  • ১৬ বছরে ভোটার, ২৩ বছরে প্রার্থী করার প্রস্তাব রাখবে এনসিপি
  • আওয়ামী লীগ নামলে পুলিশের বলপ্রয়োগের অধিকার থাকবে: এনসিপি
  • জেন–জিদের ভোটার করতে চায় এনসিপি, ২৩ বছর বয়সে প্রার্থী, ১৬ বছরে ভোটার হওয়ার প্রস্তাব