দিবাকর ডাক্তার। রয়েছে নিজস্ব ক্লিনিক। বিয়ের বয়স হয়েছে। চলছে মেয়ে খোঁজার পালা। মেয়ে তো সুন্দর হতেই হবে, সেই সঙ্গে গুণীও হওয়া চাই। অন্যদিকে আছে রিচা। নৃত্যশিল্পী; ছোটবেলা থেকে নাচই তাঁর একমাত্র শখ। পারিবারিক আলাপে রিচাকে পছন্দ হয় দিবাকরের। আর এভাবেই দিবাকরের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়।
শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া নতুন গাড়িতে চড়ে রিচাকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসে দিবাকর। বিয়ের রাতে রিচা যখন গিফট খুলতে বসে, বের হয়ে আসে একের পর এক রান্নাঘরে ব্যবহার করার জিনিস। পরিচালক আরতি কাদব যেন খুব সূক্ষ্মভাবে দেখিয়ে দেন কী হতে চলেছে গল্পের ভবিষ্যৎ।

একনজরে
সিনেমা: ‘মিসেস’
জনরা: ড্রামা
পরিচালক: আরতি কাদব
স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম: জি–ফাইভ
রানটাইম: ১ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট
অভিনয়ে: সানিয়া মালহোত্রা, নিশান্ত দাহিয়া, কানওয়ালজিৎ সিং, অপর্ণা ঘোষাল

বিয়ের দুই দিন যেতে না যেতেই অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের বাড়িতে চলে যান রিচার শাশুড়ি। রান্নাবান্নায় হাতেখড়ি থাকলেও খুব একটা সড়গড় নয় রিচা। আর তাই প্রতিদিনই যেন একের পর এক ভয়াবহ পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে। শ্বশুরবাড়িতে প্রেশার কুকার ব্যবহার করা যায় না। রান্না করতে হয় অল্প আঁচে দম দিয়ে। যে রাঁধতে জানে সে কি ব্লেন্ডার ব্যবহার করতে পারে? ব্লেন্ডারে বাটলে কি আর শিল-নোড়ায় বাটার মতো স্বাদ পাওয়া যায়? কাজের লোক? নৈব নৈব চ! শ্বশুরবাড়ির মানুষ কি কাজের লোকের হাতের রান্না খাবে?

বাড়ির ছেলে রান্নাঘরে ঢুকবে, বা বউকে সাহায্য করবে এ যেন কল্পনারও বাইরে। ছেলেরা বাইরে কাজ করছে, সংসারে টাকা নিয়ে আসছে, এটাই তো তাঁদের একমাত্র কাজ। আর ঘরের বউদের একমাত্র কাজ তিন বেলা রান্না করা। প্রত্যেক বেলার খাবার টাটকা হওয়া চাই। কোনোকিছু আগে থেকে বানিয়ে রাখা যাবে না। চুলা থেকে নামানো মাত্রই পরিবেশন করতে হবে।

‘মিসেস’ সিনেমার পোস্টার। আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ব কর

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তর্বর্তী সরকারকেই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ দেখাতে হবে

খাদের কিনারায় পড়ে যাওয়া অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের পথ দেখাতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারই এই দায়িত্ব নেবে—এমন প্রত্যাশা করেন দেশের অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও লেখকেরা। তাঁরা অবশ্য এ–ও বলেন, আগামী ছয় মাসেই সব ঠিক হবে, এমন আশা প্রকাশ করাও ঠিক হবে না। তবে পথ দেখাবেন বর্তমান সরকারের নেতৃত্ব প্রদানকারীরা। বর্তমানে বৈষম্যহীন, সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার তাগিদ আছে।

আজ শনিবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের গভর্নরের স্মৃতিকথা শীর্ষক বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। দৈনিক বণিক বার্তা বইটি প্রকাশ করেছে। রাজধানীর আইসিএবি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নতুন বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এর আগে ২০১৯ সালে এ বইয়ের প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়।

অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চাই। মানসম্পন্ন জীবনযাত্রা দিতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘তৃতীয় সংস্করণে গভর্নরের স্মৃতি কথা থাকবে না। এখনকার বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখতে চাই। শপথ নিয়েছি তো, তাই অনেক কথা এখন বলতে পারি না।’

বইয়ের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘ছাত্রজীবনে আমি যে সংগঠনের রাজনীতি করতাম, লেখকও সেই ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। লেখকের রাজনীতিতে যেমন সংযোগ ছিল, তেমনি পড়াশোনায় সংযোগ ছিল।’

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শহর ও গ্রামের মধ্যে বৈষম্য বাড়ছে—এই বইয়ে সেই চিত্র উঠে এসেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও বিকাশ কীভাবে ঘটেছে, সেই বিষয়েও এতে আলোকপাত করা হয়েছে।

লেখক ফারুক মঈনউদ্দীন বলেন, ব্যাংক খাত ঠিক করার সুযোগ এখন। কারণ, এখন রাজনৈতিক চাপ নেই। তিনি প্রবাসী শ্রমিকদের মর্যাদা দেওয়ার আহ্বান জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীরের মতে, বৈষম্যহীন ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার তাগিদ আছে এই বইয়ে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে বাংলাদেশের গভর্নরকে পালিয়ে যেতে হয়। নীতিনির্ধারণের সময় রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হয়। খাদের কিনারায় পড়ে যাওয়া অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ দেখাবে বর্তমান সরকার, এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, ষাটের দশকের রাজনীতির একটি চিত্র পাওয়া যায় গভর্নরের স্মৃতিকথা বইয়ে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক রুশিদান ইসলাম রহমান বলেন, দেশকে উন্নত করতে হলে গ্রামের দিকে নজর দিতে হবে। আর গরিব মানুষকে দেখতে হলে বিনয়ী হতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক কাজী মারুফুল ইসলাম মনে করেন, ‘এত দিনের বাজার বন্দোবস্তে একটুও আঁচড় লাগেনি। সরকারের তরফেও কোনো উদ্যোগ দেখছি না।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ