মা-দাদিদের জীবনের গল্প বলে যায় যে সিনেমা
Published: 17th, February 2025 GMT
দিবাকর ডাক্তার। রয়েছে নিজস্ব ক্লিনিক। বিয়ের বয়স হয়েছে। চলছে মেয়ে খোঁজার পালা। মেয়ে তো সুন্দর হতেই হবে, সেই সঙ্গে গুণীও হওয়া চাই। অন্যদিকে আছে রিচা। নৃত্যশিল্পী; ছোটবেলা থেকে নাচই তাঁর একমাত্র শখ। পারিবারিক আলাপে রিচাকে পছন্দ হয় দিবাকরের। আর এভাবেই দিবাকরের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়।
শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া নতুন গাড়িতে চড়ে রিচাকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসে দিবাকর। বিয়ের রাতে রিচা যখন গিফট খুলতে বসে, বের হয়ে আসে একের পর এক রান্নাঘরে ব্যবহার করার জিনিস। পরিচালক আরতি কাদব যেন খুব সূক্ষ্মভাবে দেখিয়ে দেন কী হতে চলেছে গল্পের ভবিষ্যৎ।
সিনেমা: ‘মিসেস’
জনরা: ড্রামা
পরিচালক: আরতি কাদব
স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম: জি–ফাইভ
রানটাইম: ১ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট
অভিনয়ে: সানিয়া মালহোত্রা, নিশান্ত দাহিয়া, কানওয়ালজিৎ সিং, অপর্ণা ঘোষাল
বিয়ের দুই দিন যেতে না যেতেই অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের বাড়িতে চলে যান রিচার শাশুড়ি। রান্নাবান্নায় হাতেখড়ি থাকলেও খুব একটা সড়গড় নয় রিচা। আর তাই প্রতিদিনই যেন একের পর এক ভয়াবহ পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে। শ্বশুরবাড়িতে প্রেশার কুকার ব্যবহার করা যায় না। রান্না করতে হয় অল্প আঁচে দম দিয়ে। যে রাঁধতে জানে সে কি ব্লেন্ডার ব্যবহার করতে পারে? ব্লেন্ডারে বাটলে কি আর শিল-নোড়ায় বাটার মতো স্বাদ পাওয়া যায়? কাজের লোক? নৈব নৈব চ! শ্বশুরবাড়ির মানুষ কি কাজের লোকের হাতের রান্না খাবে?
বাড়ির ছেলে রান্নাঘরে ঢুকবে, বা বউকে সাহায্য করবে এ যেন কল্পনারও বাইরে। ছেলেরা বাইরে কাজ করছে, সংসারে টাকা নিয়ে আসছে, এটাই তো তাঁদের একমাত্র কাজ। আর ঘরের বউদের একমাত্র কাজ তিন বেলা রান্না করা। প্রত্যেক বেলার খাবার টাটকা হওয়া চাই। কোনোকিছু আগে থেকে বানিয়ে রাখা যাবে না। চুলা থেকে নামানো মাত্রই পরিবেশন করতে হবে।
‘মিসেস’ সিনেমার পোস্টার। আইএমডিবি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ ব কর
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তহীন দুঃস্বপ্নে বন্দি গাজার বাসিন্দারা
ইসরায়েলের বর্বর বোমা হামলায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে গাজা। আশ্রয়কেন্দ্র, ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, মসজিদ কোনো কিছুই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটে চলেছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকার বাসিন্দারা। যেখানেই তারা আশ্রয় নিচ্ছে, হামলা করে তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। গুলি ছোড়া হচ্ছে যাত্রাপথেও। যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও হামলা শুরুর পর এক মাস ধরে গাজায় কোনো খাদ্য সহায়তা ঢুকতে দেয়নি দখলদার ইসরায়েল। খাবার, পানি, চিকিৎসার অভাব এবং চারদিকে বিস্ফোরণের মধ্যে গাজাবাসী যেন এক অন্তহীন দুঃস্বপ্নে বন্দি হয়ে পড়েছে। এ দুর্দশার কোনো শেষ নেই। আশা নিয়ে বেঁচে থাকা তাদের জন্য কঠিন হয়ে উঠছে।
১৮ মাস ধরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় স্বাস্থ্যসেবা বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, গাজার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ২১টি আংশিকভাবে সেবা দিচ্ছে। চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকটও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ডা. উইসাম সুক্কার ও তাঁর দল উত্তর গাজার একটি অফিসকে ক্লিনিকে রূপান্তর করেছেন। তারও একটা অংশ বোমা হামলায় ধসে পড়েছে।
তিনি বলেন, খুব সীমিত সম্পদ নিয়ে এই কঠিন পরিস্থিতিতেও আমরা উত্তর গাজায় থাকার চেষ্টা করছি। খাবার ও পানির অভাবের কারণে এখানে অপুষ্টি এবং বিভিন্ন রোগব্যাধি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। পেটেরপীড়া থেকে শুরু করে চর্মরোগ খুব সাধারণ হয়ে পড়েছে। আমরা অনেক শিশুকে পাই যারা শ্বাসনালির সংক্রমণ ও ডায়রিয়ায় ভুগছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় একই জায়গায় অনেক শিশু থাকে এবং ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমাদের চ্যালেঞ্জ ক্রমেই বাড়ছে। কারণ বিপুলসংখ্যক রোগীর বিপরীতে চিকিৎসা সরঞ্জাম খুবই কম। এ ছাড়া আমরা জটিল সমস্যা পাই এবং আমরা জানি না যে এই রোগীদের কোথায় পাঠাতে হবে। কারণ গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
ক্লিনিক থেকে বের হওয়ার সময় সুক্কার তাঁর পরিবারকে ফোন করে, যারা গত দেড় বছরে তাঁর সঙ্গে ৯ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তিনি বলেন, গাজার অন্যদের মতো আমার শিশুদের জন্যও পরিষ্কার পানি ও খাবার নিশ্চিত করতে প্রতিদিন যুদ্ধ করতে হয়। আমাদের বিদ্যুৎ নেই, সব জায়গায় মোবাইল ফোনের ব্যাটারি চার্জ করার ব্যবস্থা নেই। সবচেয়ে বড় কথা, কোনো আশা রাখা সত্যিই কঠিন। আমরা এমন এক দুঃস্বপ্নের মধ্যে বাস করছি, যা শেষ হচ্ছে না। এই যুদ্ধ কখন শেষ হবে?
গতকাল শনিবারও গাজাজুড়ে ভয়াবহ ইসরায়েলি হামলা চালানো হয়েছে। দক্ষিণে রাফাহ ও খান ইউনিস থেকে শুরু করে উপত্যকায় কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নুসাইরাত শরণার্থী শিবির, উত্তরে বেইত লাহিয়া এবং বেইত হানুনে হামলা চালানো হয়েছে। বিশেষ করে খান ইউনিসের আশপাশের এলাকায় তিনটি পৃথক অভিযানে ১১ জন নিহত হয়েছেন। সবমিলিয়ে শুক্রবার ভোর থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ মাস ধরে ইসরায়েলের হামলায় উপত্যকায় কমপক্ষে ৫১ হাজার ৬৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) একটি জরুরি সতর্কতায় জানিয়েছে, গাজার এখনই খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। সেখানে লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধায় মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। ইসরায়েলি বোমা হামলা এবং অবরোধের কারণে সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে মানুষ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।