রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগে নওফেল-রেজাউলের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 17th, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা চালিয়ে রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিমসহ ১২৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।
গত শুক্রবার বাকলিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন মো. ইলিয়াছ নামের এক ব্যক্তি। বিষয়টি প্রকাশ পায় গতকাল রোববার। মামলায় ১২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামি হলেন- ১৯ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি রিজান চৌধুরী, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়া, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারুনুর রশিদ, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহীন আকতার রোজী। মামলাটিতে ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, ৭ নম্বর সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও ৮ নম্বরে নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি ইলিয়াছ চট্টগ্রাম মহানগর আদালতে মামলাটির আবেদন করেন। ৬ ফেব্রুয়ারি আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য থানাকে আদেশ দেন।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘বাদী আদালতে মামলার আবেদন করেছিলেন। আদালতের আদেশে শুক্রবার মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে।’
মামলার বাদী মো.
মামলায় এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, গত বছরের ৪ আগস্ট বিকেলে সরকার পতনের আন্দোলনের সময় বাকলিয়া থানার শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন পেট্রোল পাম্পের কাছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক ও শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে এবং গুলি ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। হামলাকারীরা তাকে ধারলো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে তিনি তা প্রতিহত করেন এবং এতে তার ডান হাতের কবজির রগ কেটে যায় এবং অন্যরা তাকে মারধর করে।
হামলাকারীদের ভয়ে তিনি সেদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে না পেরে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন। পরে ৬ আগস্ট চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ৮ আগস্ট পর্যন্ত সেখানে ছিলেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব কল য়
এছাড়াও পড়ুন:
এস আলম দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
এক হাজার ৫৩৯ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল মঙ্গলবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান মামলা দুটি করেন। পরে কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা দুটি করা হয়েছে।’
গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ২৪ আগস্ট ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের অবৈধ সম্পদের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক।
মামলায় সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করে ভোগদখল করে আসছেন তিনি। এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান একজন পাবলিক সার্ভেন্ট। আয়কর নথি অনুযায়ী করবর্ষ ২০১০-১২ এর রিটার্ন দাখিলের আগ পর্যন্ত তাঁর আগের সঞ্চয় ছিল ৯৭ কোটি ৩৯ লাখ ৮৯ হাজার ৭ টাকা।
২০১১-১২ থেকে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষ পর্যন্ত অতীত সঞ্চয়সহ সাইফুল ইসলামের গ্রহণযোগ্য আয় ২৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৭৫ টাকা। এ সময় তাঁর মোট ব্যয় ৯৭ কোটি ৩২ লাখ ৭ হাজার ৯৪০ টাকা।
অনুসন্ধানে দুদক দেখতে পেয়েছে, সাইফুল আলম ৯৫৫ কোটি ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। ব্যয়সহ তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৫২ কোটি ৬৪ লাখ ১ হাজার ৩৯৯ টাকা। গ্রহণযোগ্য আয় বাদ দিলে তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা।
অন্যদিকে, সাইফুল আলমের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ, তিনি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ফারজানার স্থাবর-অস্থাবর, ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৫৯ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৩ টাকা। তাঁর অতীত সঞ্চয়সহ গ্রহণযোগ্য আয় ১৬ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৫ টাকা। বাকি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার সম্পদের বৈধ কোনো উৎস নেই, যা তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর নামে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সম্পদ রয়েছে। সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশেও স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আয়কর নথিতে তা অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এ সম্পদকে পাচার বলছে দুদক। বিদেশে সম্পদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার ওপর নির্ভর করে মামলার তদন্তে তা যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।