ইউটিউব ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করছে একদল প্রতারক। ব্যবহারকারীদের বোকা বানাতে প্রথমে ইউটিউবের অফিশিয়াল ই-মেইল ঠিকানার আদলে তৈরি ঠিকানা থেকে ইউটিউবের নামে একটি লিংকযুক্ত ভুয়া ই-মেইল পাঠায় তারা। ইউটিউবের অফিশিয়াল ই-মেইল ঠিকানার সঙ্গে মিল থাকায় অনেকেই প্রতারকদের পাঠানো ই-মেইলটি ইউটিউবের পাঠানো ভেবে লিংকটিতে ক্লিক করে বিভিন্ন তথ্য জমা দেন। তথ্যগুলো লিখলেই সেগুলো চলে যায় প্রতারকদের দখলে। বিষয়টি জানার পর ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ।

ইউটিউবের তথ্যমতে, প্রতারকদের পাঠানো ই-মেইলে থাকা লিংকে ক্লিক করলে ব্যবহারকারীরা ইউটিউবের একটি ভিডিও দেখতে পান। ভিডিওর বিবরণে আরেকটি লিংকে ক্লিক করতে বলা হয়। সেখানে ক্লিক করলে পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত ডকসাইন পেজে প্রবেশ করেন ব্যবহারকারীরা। প্রতারকদের লক্ষ্য হলো ব্যবহারকারীদের ওই কোড ব্যবহার করে একটি ক্ষতিকর ফাইল ডাউনলোড করানো। একবার ফাইলটি চালু হলে আক্রান্ত যন্ত্র থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করতে পারে প্রতারকেরা। গত বছরের ডিসেম্বরে একই ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটেছিল। তখন কয়েকটি ক্লিকের মাধ্যমেই অনেক ইউটিউব নির্মাতা তাঁদের অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনইউটিউবের প্রথম ভিডিও কোনটি, কে আপলোড করেছিলেন২৮ জানুয়ারি ২০২৩

ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে ইউটিউব জানিয়েছে, অনলাইনে নিরাপদ থাকতে সব সময় সতর্ক থাকা জরুরি। তাই ইউটিউবের নামে পাঠানো সন্দেহজনক ই-মেইল বা লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ধরনের প্রতারণামূলক ই-মেইল পেলে ইউটিউবের অফিশিয়াল সহায়তা কেন্দ্রে অভিযোগ করতে হবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে ইউটিউবের অফিশিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে ইউটিউবের সর্বশেষ তথ্য জানতে পারবেন।

সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ

আরও পড়ুনভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে এক বছরে ইউটিউবের আয় কত০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনশিশুর জন্য ইউটিউব নিরাপদ রাখবেন যেভাবে১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ল ক কর ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা ঘোরালেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তাঁর কথা ঘুরিয়ে ফেলেছেন। গত শুক্রবার তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করেছে। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা হিসেবে কিয়েভ শিগগিরই তার খনিজ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি সই করবে।

ট্রাম্প এর আগে গত মঙ্গলবার বলেছিলেন, ইউক্রেনের এ যুদ্ধ শুরু করা ঠিক হয়নি। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া। ওই সময় রাশিয়ার পক্ষ থেকে একে সামরিক অভিযান বলা হচ্ছিল। সে হিসেবে আগামীকাল সোমবার রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলার তিন বছর পূর্তি হচ্ছে।

গত শুক্রবার ট্রাম্প ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ট্রাম্প বলেন, রাশিয়া আক্রমণ করেছিল; কিন্তু তাদের আক্রমণ করতে দেওয়া উচিত হয়নি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আক্রমণ এড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। পরে ট্রাম্প ধারণা দেন, শিগগিরই খনিজ নিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি হবে। শুক্রবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা একটি চুক্তি স্বাক্ষর করছি। আশা করি, অল্প সময়ের মধ্যে চুক্তি সই হবে।

পরে জেলেনস্কি এক ভিডিও  বক্তৃতায় বলেন, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা চুক্তির খসড়া তৈরিতে কাজ করছেন। তিনি আশা করছেন, এতে ন্যায্য ফল পাওয়া যাবে।

এর আগে খনিজ চুক্তিতে জেলেনস্কির রাজি হননি। যুদ্ধকালীন সাহায্য হিসেবে ওয়াশিংটনকে পরিশোধ করার জন্য ইউক্রেনের কাছ থেকে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের খনিজ সম্পদের দাবি তিনি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, ‘আমি দেশ বিক্রি করতে পারি না।’

জেলেনস্কির অবস্থান নিয়ে  ক্ষোভ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। গত বুধবার ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে মন্তব্য করে তাঁকে দ্রুত রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তি করতে বলেন।

ইউক্রেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রের সুর পরিবর্তনে ইউরোপীয় নেতারা শঙ্কা প্রকাশ করেন। তাঁদের ধারণা, পুতিনের পক্ষে একটি শান্তিচুক্তিতে কিয়েভকে বাধ্য করা হতে পারে। জেলেনস্কি বলেন, ট্রাম্প রাশিয়ার অপতথ্যের মধ্যে ফেঁসে গেছেন। তবে পরে তিনি সুর নরম করেন। ট্রাম্পের ইউক্রেনবিষয়ক বিশেষ দূতের সঙ্গে সাক্ষাতে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চান।

শুক্রবার সকালে হোয়াইট হাউসে পুতিনকে নিয়ে নেতিবাচক কোনো মন্তব্য করেননি ট্রাম্প। তিনি বলেন, পুতিনের সঙ্গে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে; কিন্তু ইউক্রেনের সঙ্গে আমার এত ভালো আলোচনা হয়নি। ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনের হাতে রাশিয়াকে আটকানোর মতো তেমন কোনো ‘কার্ড’ নেই; কিন্তু তারা খুব কঠিন আচরণ করছে।

পৃথকভাবে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। রয়টার্স দেখেছে, ওই প্রস্তাবের তিন অনুচ্ছেদে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের সময় প্রাণহানির জন্য শোক প্রকাশ করা হয়েছে এবং সংঘাত দ্রুত অবসানের আহ্বান জানানো হয়েছে। কিয়েভ ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের চাওয়া—আগামীকাল জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে তাদের নিজস্ব প্রস্তাব গৃহীত হোক; যেখানে উত্তেজনা হ্রাস, দ্রুত শত্রুতা বন্ধ এবং সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানানো হোক।

জার্মানির সরকার বলেছে, দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ ও জেলেনস্কি ফোনালাপ করেছেন। তিনি শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি চান। তবে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে দুদা শান্ত থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে গঠনমূলক সহযোগিতা করতে পরামর্শ দিয়েছেন। গতকাল ট্রাম্পের সঙ্গে দুদার বৈঠক হওয়ার কথা।

রাশিয়া–যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের বৈঠক

রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভের বরাত দিয়ে গতকাল রুশ রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে হওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। মঙ্গলবার ইউক্রেনে প্রায় তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে মস্কো এবং ওয়াশিংটন তাদের প্রথম আলোচনা করে। এর লক্ষ্য ছিল সম্পর্ক ঠিক করা এবং সংঘাতের অবসানের প্রস্তুতি। রিয়াবকভ বলেন, তৃতীয় কোনো দেশে আলোচনা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ