অমর একুশে বইমেলা প্রকাশিত হয়েছে তাজবীর সজীবের ৫টি বই। ইতোমধ্যে পাঠকদের কাছে বেশ সাড়া ফেলেছে বইগুলো।

বাবুই প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত তাজবীর সজীবের বইগুলো হচ্ছে- সম্পাদিত গ্রন্থ ‘সাংবাদিকতার স্বরূপ’, ‘সিক্রেটস সাকসেস অব সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন’, কাব্যগ্রন্থ ‘ভুলে ভরা গল্প’, এবং ‘ইফেকটিভ মেথড অব ডিজিটাল মার্কেটিং’ এর পুনর্মুদ্রণ। এছাড়া একই প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে লেখকের প্রথম ইংরেজি গ্রন্থ ‘মার্কেটিং মেভেরিক’।

বইগুলো বাবুই প্রকাশনীর ৩৯৩-৩৯৪-৩৯৫-৩৯৬ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। 

বাবুই প্রকাশনীর প্রকাশক মোরশেদ আলম হৃদয় বলেন, তাজবীর সজীবের ৫টি বই আলোচনায় আছে। লেখক নিজে শিক্ষক ও সাংবাদিক হওয়ায় তার নিজস্ব গণ্ডিতে পরিচিতি রয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য পাঠকদের মাঝেও বইগুলো নিয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করছি।

লেখক ও প্রকাশনী সূত্রে জানা যায়, তাজবীর সজীব তার পেশাগত অভিজ্ঞতা, একাডেমিক জ্ঞান এবং তাত্ত্বিক জ্ঞানের ভিত্তির ওপর নির্ভর করে ‘সাংবাদিকতার স্বরূপ’, ‘সিক্রেটস সাকসেস অব সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন’, ‘ইফেকটিভ মেথড অব ডিজিটাল মার্কেটিং’, এবং ‘মার্কেটিং মেভেরিক’ গ্রন্থগুলো রচনা করেছেন। আর ‘ভুলে ভরা গল্প’ গ্রন্থটি লেখকের দ্বিতীয় একক কাব্যগ্রন্থ।

তাজবীর সজীব একাধারে সংগঠক, উদ্যোক্তা, লেখক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ডিজিটাল মার্কেটিং লিডার হিসেবে সুপরিচিত।

ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে ক্যারিয়ারের নানা পর্যায়ে ৯টি জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি। এছারা ইউনিসেফ থেকে আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্তির সম্মাননা তার প্রোফাইলকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।

২০০৫ সালে সাবেক তথ্যমন্ত্রী শামসুল ইসলামের হাত থেকে সম্মাননা গ্রহণ এবং নটর ডেম কলেজে সহশিক্ষা কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৎকালীন শিক্ষা উপদেষ্টার হাত থেকে ‘অনারেবল মেনশন’ সম্মাননা অর্জন- এই দুটি স্বীকৃতিকে নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা অর্জন হিসেবে মনে করেন তাজবীর সজীব।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল বইগ ল

এছাড়াও পড়ুন:

হাত জোড় করছি, ফিরিয়ে দিন সন্তানদের

‘কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। দোষ থাকলে, অন্যায় করলে উপযুক্ত শাস্তি দিন। তবু সন্তান হারানোর বেদনা যেন কারও বুকে না লাগে। আমি হাত জোড় করছি, আমাদের সন্তানদের ফিরিয়ে দিন।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে এমন আকুতিই জানান অপহৃত দিব্যি চাকমার মা ভারতী দেওয়ান। বিজু উৎসব শেষে খাগড়াছড়ির কুকিছড়া থেকে ফেরার পথে গত বুধবার ভোর ৬টার দিকে পাহাড়ি পাঁচ শিক্ষার্থী অপহৃত হন। এ অপহরণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) সশস্ত্র গোষ্ঠী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট- ইউপিডিএফকে (প্রসীত) দায়ী করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অপহৃতদের উদ্ধরে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।

পিসিপির কেন্দ্রীয় শাখার সভাপতি নিপন ত্রিপুরা বৃহস্পতিবার সমকালকে বলেন, ‘আমরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছি, ইউপিডিএফ অপহৃতদের অভিভাবকদের একটি স্থানে ডেকেছে। বিকেলে অভিভাবকরা সেখানকার উদ্দেশে রওনা হন। পরে আর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি।’ তিনি অবিলম্বে অপহৃতদের সুস্থ শরীরে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অন্বেষ চাকমা বলেন, অপহরণকারীরা সকালে একটি স্থানের নাম বলেছিল অভিভাবকদের। পরে পরিবর্তন করে আরেকটি স্থানে ডাকে। বিকেল থেকে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। 

অপহৃতরা হলেন– চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও পিসিপির চবি শাখার সদস্য রিশন চাকমা, চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা, একই বিভাগের মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো। তাদের মধ্যে রিশন চাকমার বাড়ি রাঙামাটির জুরাছড়ির মৈদং ইউনিয়নের জামেরছড়িতে। লংঙি ম্রোর বাড়ি বান্দরবানের আলীকদমের কুরুকপাতা ইউনিয়নে; একই জেলায় বাড় অলড্রিন ত্রিপুরার; রাঙামাটির বরকল সদরের চাইল্যাতুলিতে দিব্যি চাকমা ও একই জেলার বাঘাইছড়ির বটতলায় মৈত্রীময় চাকমার।

এর আগে অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থী বিজু উৎসব উপলক্ষে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বেড়াতে যান। উৎসব শেষে গত মঙ্গলবার তারা চট্টগ্রামে ফেরার উদ্দেশ্যে বাঘাইছড়ি থেকে দীঘিনালা হয়ে খাগড়াছড়ি সদরে আসেন। সেখানে বাসের টিকিট না পাওয়ায় খাগড়াছড়ি শহর থেকে কিছুদূরে পানছড়ি সড়কের কুকিছড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাতযাপন করেন। গত বুধবার ভোরে কুকিছড়া থেকে অটোরিকশায় খাগড়াছড়ি সদরে আসার পথে গিরিফুল নামক জায়গায় দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে তাদের অপহরণ করে। 

এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও অপহৃতদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অধ্যয়নরত ১৮৩ আদিবাসী শিক্ষার্থী যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথী ভুবন চাকমার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থী বিজু উৎসব শেষে খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হলেও তাদের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এমন অপহরণের ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে মানবাধিকারবিরোধী ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষার পরিপন্থি। অপহৃতদের উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।

ইতোমধ্যে অপহৃতদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ঢাকা সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, খাগড়াছড়ি থেকে অপহরণের শিকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। তাদের অবস্থান কিছুটা শনাক্ত করা গেছে।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, বিভিন্নভাবে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে আসলে ঘটনাটি কী, কাদের হেফাজতে তারা রয়েছে। যৌথ অভিযানে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ